
জীবনের সব কিছুই বোঝাপড়া করে হয়ে উঠে কি উঠেনা তা আমি ঠিক জানি না। আজ আর আমি কিছুই জানিনা। সব জানা আমার অজানায় ঢেকে গেছে। অনেকদিন আগে আমার এক সুহৃদ কক্সবাজার গিয়ে আমায় ফোন দিয়েছিলো। বললো, দাদা আপনার জন্য কি আনবো এখান থেকে। আমি তাকে নিখাদ এক বোতল সমুদ্রের নোনা জল আনতে বললাম। সেও তো আজ ৩ বছর আগের কথা। সে সমুদ্রের জল এনেছিল আমার জন্য। আমিও উপহার হিসেবে খুব যত্ন করে আমারই ঘরে ঠাই দিলাম ওই নোনা জলের বোতলকে। কিন্তু আজ বড্ড হাসি পায়। আমার সেই সুহৃদকে ওই নোনা জল না আনতে বলাই ভালো ছিল। আজ এতোদিন ধরে আমার চোখ বেয়ে যে নোনা জল প্রতিনিয়ত গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ছে তা জমিয়ে রাখলেও বোধকরি এরচেয়ে ঢের বেশি নোনা জল জমে যেত।
এই আমার শহর ঢাকা। অনেক অনেক বড় বড় ইমারত দালান সব ক্যামন করে দুরদ্দার করে আকাশ সমান হয়ে গেল আমারই সামনে। ঠিক করে ঠাহর করার আগেই কখন যেন দালানের আলসে ছায়া আমার গাল বেয়ে মাথার উপরে উঠে গেল। অথচ এই শহরেই একদিন ঘাড়ে-গালে আগুন ঝড়া রোদের আচ সয়ে আগুন জ্বালো জ্বালো শ্লোগান দিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছি। একদিন এই শহরেই সকল ব্যর্থতার দায় পাহাড়সম কাধে তুলে নিয়ে রাতের অন্ধকারে ছুটে গেছি শাহবাগের পী-ককে। আকন্ঠ পান করে ধোয়া তোলা চারপায়ে হেটে গেছি সরীসৃপের মতো অনেকটাদূর অনেকদিন। আবার এই শহরেই সব তাগিদ ভুলে গিয়ে শাহবাগের শিখা অর্নিবানকে স্বাক্ষী রেখে প্রথম চুম্বন করেছি আমার মায়াবী প্রেমিকাকে। ভেসে গেছি অনেকটাদুর সব কষ্ট-দুঃখ দুহাতে পেছনে ঠেলে। আবার হঠ্যাৎ এই শহরেই আমারই চোখের সামনে সেই রাতেরই আধারে আমার স্বপ্নগুলোকে এক ফুৎকারে উড়িয়ে দিল রাতদস্যুরা। আর এখন এই শহরেই নিস্পৃহ সরীসৃপের মতো ঘুরে বেড়াই অসীমের সীমা জানার জন্যে। আজ আমি বাতাসে ভর করে চলে যাই অনেকটাদুর। আজ আর আমি গল্প লিখিনা, আজ আর আমি ছবি আকিনা, আজ আর আমি সময়কে বন্দী করিনা, আজ আর আমি শ্লোগান তুলিনা, আজ আর আমি প্রেমিকার ঠোটে চুম্বন আকিনা,আজ আর আমি শ্রমিক না। আজ আমি শুধুই আকাশ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




