একের পর এক ব্লগার হত্যা করা হচ্ছে। বাসায় ঢুকে কিংবা রাস্তায় সবার সামনে হত্যা করা হচ্ছে। তাদের দোষ কি তারা নাস্তিক। তারা কোন ধম মানে না। তারা শুধু ইসলাম ধম নিয়ে সমালোচনা করে। তারা তো কারো কোন ধরনের ক্ষতি করছে না। তারা শুধু তাদের যোক্তিক আলোচনা করছে।
২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি রাজধানীর উত্তরায় ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনকে কোপানো হয়। একই বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে অগ্রণী ব্যাংকের কর্মী ও ব্লগার জাফর মুন্সিকে হত্যা করা হয়। ১৫ ফেব্রুয়ারি কুপিয়ে হত্যা করা হয় ব্লগার রাজীব হায়দার শোভনকে। ২৮ ফেব্রুয়ারি হত্যার শিকার হন ব্লগার মামুন হোসেন। ২ মার্চ ব্লগার জগৎজ্যোতি তালুকদার ও জিয়াউদ্দিন জাকারিয়া বাবুকে হত্যা করা হয়। ৭ মার্চ রাতে মিরপুরের পূরবী সিনেমা হলের কাছে কুপিয়ে জখম করা হয় ব্লগার সানিউর রহমানকে। ৯ এপ্রিল বুয়েটের কবি নজরুল ইসলাম হলে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ব্লগার আরিফ রায়হান দ্বীপকে। জুনে এ্যালিফ্যান্ট রোড এলাকায় কোপানো হয় গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার রাকিব আল মামুনকে। ১১ আগস্ট বুয়েটের আরেক ছাত্র তন্ময় আহমেদকে কুপিয়ে জখম করা হয়।
চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রখ্যাত বিজ্ঞান লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের কর্ণধার অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয় এবং কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয় তার স্ত্রী ও বিজ্ঞান লেখক রাফিদা আহমেদ বন্যাকে। ৩০ মার্চ বাসার সামনে রাস্তায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় ব্লগার ওয়াশিকুর বাবুকে। ১২ মে ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকেও একইভাবে হত্যা করা হয়। এসব ছাড়াও নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফিরেছেন অন্তত ৬জন ব্লগার।
দেখা গেলো ব্লগার নিলয় চট্টোপাধ্যায় নীলকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশের (এআইকিউএস) বাংলাদেশ শাখা আনসার আল ইসলাম।
প্রশাসনের আশ্চর্যজনক নীরবতা সহ্য হচ্ছে না আমাদের। ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠীর বেহুদা দাবি দাওয়া, তাদেরকে তোষণ করে বক্তব্য প্রদান, পুলিশী তদন্তে ধীর গতি...এসব দেখতে দেখতে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জাগাটা স্বাভাবিক- সরকার এসব হত্যাকান্ডের বিষয়ে নির্লীপ্ত থেকে কি পরোক্ষভাবে হত্যাকান্ডকে উৎসাহিত করছে? জামাত-শিবির-হেফাজত-হিজবুত-আনসারুল্লাহ সহ অগণিত ধর্মান্ধ সংগঠন দেশের আনাচে কানাচে প্রকাশ্যে বা ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদেরকে দমন করতে না পারলে দেশ অচিরেই মেধাশূন্য হয়ে পড়বে। ’৭১ এর বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ডের ক্ষত এখনো তাজা। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের এবং প্রগতিশীল ধারার রাজনীতিতে অঙ্গীকারবদ্ধ এই সরকারের এমন ভূমিকা আমাদেরকে আরো হতাশ করছে। স্বজন হারানোর বেদনা আমাদেরকে অনেক অবান্তর বিষয়ও বিশ্বাস করতে প্ররোচিত করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিভাগের কাছে আমাদের সনির্বন্ধ অনুরোধ, এসব হত্যাকান্ডের পেছনে থাকা সেসব ধর্মান্ধ মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীকে উৎখাত করে দেশটাকে নরক হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করুন। এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




