somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেইল

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এখন রাত সারে এগারটা। আমার মনে পড়ল আজ মেইল চেক করা হইনি । মেইল ব্ক্স বেশ একটু দুরে। ভাবলাম খাওয়া দাওয়া শেষ হল, একটু হাঁটা হবে, মেইল গুলোও নিয়ে আসা হবে। এখানকার মেইলগুলো বেশীর ভাগই জাংক, মানে এগুলো পড়া মানে অযথাই সময় নস্ট। একটা দরকারি চিঠির জন্য কয়েক দিন থেকে অ্যপেক্ষা করছি, তাই এত রাতে বের হওয়া।
আজ আবার রঙ্গিন পূর্ণিমা। রঙ্গিেন পূর্ণিমা বা পিংক ইকলিপস দেখিনি। ভাবলামর রাঙ্গা চাঁদ দেখতে দেখতে যাই। রাস্তায় বের হয়ে দেখি একেবারে ফাঁকা, এরকমই হবে ভেবেছিলাম। এখানকার মানুষেরা দশটা বাজার আগেই ঘুমুতে যা্য়।
সুন্দর বাতাস বইছে। ঝিঁ ঝিঁ পোকার একঘেয়ে ডাক শুনতে শুনতে হাটছি। সবই পরিস্কার দেখা যাচ্ছে। সাড়ি সাড়ি বাড়ির সামনে ছিমছাম আঙ্গিনাগুলো সুনসান নিরব। কোন এক বিচিত্র কারণে কুকুরগুলোও নিরব।
এত সুন্দর আ্‌বহাওয়াতেও একটু টেনশন অনুভব করছি। কি কারনে জানি না, মনে হল কি যেন পিছন পিছন আসছে। আমি হাঁটার গতি বাড়িয়ে দিলাম। পেছনে তাকালাম না। এরকম ভাবে কয়েকমিনিট যাওয়ার পর পেছনে তাকালাম। আমার পা জমে গেল। একটা সাদা গোলাকার বস্তু , আনুমানিক ১২-১৩ বছর বালবকের সমান হবে, বাতাসে ভাসতে ভাসতে আসছে। দ্রুত চিন্তা করছি- কি করব। যা থাকে কপালে, উল্টো ঘুরে মেইল বক্সের দিকে চললাম। আর পেছনে তাকাচ্ছি না। তরিঘরি করে মেইল গুলো নিয়ে, এবার চিন্তা করছি, কি ভাবে বাড়ি যাব। পেছন থেকে বস্তুটির শব্দ কেবলি বাড়ছে। অন্য রাস্তা দিয়ে বাড়ি যাওয়া যায়, কিন্তু অনেক ঘোরা পথ। তারপর একদৌড় দিয়ে বাড়ি যাব- এ যখন ভাবছি, এই সময় দেখি, সে সামনে দাড়িয়ে। অস্পস্ট করে শুনলাম সে কিযেন বলছে, খানিকটা "বই, বই " মনে হল। নিজের চোখ ও কানকে বিশ্বাস করতে পারছি না। এরপরে আর কিছু মনে নেই।
যখন চেতনা ফিরে আসল, দেখি, আমি বিছানাতে শুয়ে আছি। সবাই চিন্তিত মুখে তাকিয়ে আছে। "আমার কি হয়েছে"- একথা জিগ্যাসা করা মা্ত্র, একজন বলল- আমি দরজার সামনে পরে ছিলাম অ্গ্যান হয়ে, মেইল গুলো আমার হাতেই ছিল। মেইল বক্স থেকে কিভাবে বাসায় আসলাম সে এক রহস্য, মাথা এলোমেলো হয়ে আসছে, ঘুমিয়ে পরলাম। রাতে অনেক জ্বর আহল। কয়েকদিন ঘোরের মধ্যে কাটল।

এর কয়েকদিন পরে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসার পরে, আমি সেদিনকার মেইলগুলো নিয়ে বসলাম। একটা মেইল দেখলাম কাল এনভেলাপে। মেইলটি কোথা থেকে এসেছে সেই ঠিকানা নেই। খুল্লাম। বা্ংলাতে এটা লিখা ছিল চিঠিতে:

বন্ধু :
কেমন আছ? কতদিনে দেখা হয়না। আমি ভালই আছি। তোমারা তো আর বাসায় আসনা- দেখা হয়না। সবাই কাজে ব্যস্ত। এবার দেশে আসলে অব্শ্যই দেখা করে যাবে। তোমার সাথে আমার বিশেষ দরকার আছে। তোমার কিছু বই আমার কাছে আছে, সময়ের অভাবে দিতে পারিনি, খারাপ লাগছে।
ভাল থেক। খালাম্মাকে সালাম দিও।
- মনসুর, ঢাকা, অক্টবর ১৪, ১৯৯১

চিঠিতি নিয়ে আমি বসে আছি। এটা লিখা হয়েছে ১৯৯১ এ, আর এখন ২০১৪। কেউ নিশ্চয় ভুল ঠিকানায়, ভুল তারিখে এটা পাঠিয়েছে। তাছাড়া আমাকে কেউ বা্ংলাতে চিঠিও লিখে না, এই মোবাইলের যুগে। "মনসুর" বলে আমার কোন বন্ধুতো নেই। তাহলে কি এটা। হঠাৎ মনে পড়ল-

১৯৯১ শালের ১৪ই অক্টবর আমার কিশোরবেলার বন্ধু মারা গিয়েছিল, তবে কি সে? ওর নামও ছিল "মনসুর"।



-ইহা একটি কাল্পনিক গল্প।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×