সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০০৬ রাত ৩:২১
উল্টে-পাল্টে দে মা, লুটে-পুটে খাই
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
দুনর্ীতি আর দুনর্ীতিদুষ্ট রাজনীতি দুটোতেই আমার এলার্জি। মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন এর এই লেখাটি চিঠি আকারে আজকের ইত্তেফাকে ছাপা হয়েছে। এই কথাগুলো যেন ঠিক তার নয়- আমার । আসলে এটা আমাদের সবারই কথা। একদিন আমরা দুনর্ীতির কলুষ থেকে মুক্ত হব সে আশা কখনোই ছাড়তে চাইনা। ........................................................................................ 1. ইত্তেফাকের একটি খবরে প্রকাশ, বিএনপির মহানগর কমিটির একজন নেতা এবং ওয়ার্ড কমিশনার 67 লাখ টাকা কর দিয়ে 9 কোটি কালো টাকা সাদা করে নিয়েছেন। অর্থাৎ তিনি এখন কমপক্ষে 9 কোটি টাকা প্রকাশ্যে আদান প্রদান করতে পারবেন। বলাবহুল্য, এই 9 কোটি সাদা টাকার খোলসে তিনি এখন 90 কোটি টাকা লেনদেন করবেন। ব্যাপারটা অনেকটা এই রকম যে, একজন চোরাকারবারী বিদেশ হতে 10 কোটি টাকার চিনি আমদানী করলে চোরাপথে আনা আরো 100 কোটি টাকার চিনি বাজারে ছেড়ে থাকে। সেক্ষেত্রে 10 কোটি টাকার ওপর আমদানী শুল্ক দিলেও বাকি 100 কোটি টাকার ওপর তাকে শুল্ক দিতে হয় না। কারণ ঐ 10 কোটি টাকার আমদানী কাগজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখিয়েই সে 110 কোটি টাকার মাল জায়েজ করে ফেলে। এক্ষেত্রে কমিশনার সাহেবও যে 9 কোটি সাদা টাকার কাগজ দেখিয়ে 90 কোটি টাকা ব্যবহার করবেন তা একরকম নিশ্চিনত্দই বলা যায়। কারণ তিনি তার সমুদয় কালো টাকাই ট্যাঙ্ দিয়ে সাদা করেছেন এমন ধারণা বোকামী মাত্র। 2. আমাদের এই দেশ এই সমাজ এখন কারা নিয়ন্ত্রণ করছেন তা বোধহয় দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। সম্মানিত কমিশনার সাহেব ইতিপূর্বে একজন হকার ছিলেন। বিএনপির রাজনীতি করে তিনি ওয়ার্ড কমিশনার হয়েছেন। ইতিমধ্যেই তার হাতে যে টাকা এসে গিয়েছে তাতে করে তিনি অদূর ভবিষ্যতে আরও বড় নেতা হবেন এবং এমপি ইলেকশন করে মন্ত্রী মিনিষ্টার হবেন সে কথা বলাও যুক্তিহীন হবে না। কারণ অতীতেও অনেকেই এমনটি হয়েছেন। আর আমরা অবাক বিস্ময়ে তা চেয়ে-চেয়ে দেখেছিও। এখন অর্থই সবকিছুর নিয়ামক শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নীতিজ্ঞান, নীতিকথা এখন কাগুজে কথা মাত্র। যার অর্থ আছে তার সবকিছু আছে। আর রাজনীতি এখন অর্থ কামাবার মোম অস্ত্র। কেউ হকারই হোন, আর বেকারই হোন একবার রাজনীতিতে ঢুকে লাইন মত নেতা-নেত্রীর নেকনজরে পড়লে আর কথা নেই। মতাসীন দলের এইসব নেতা কমর্ীরা কে কত টাকা কামিয়েছেন বা কামাচ্ছেন তার বিসত্দারিত দেশবাসীর প েজানাও সম্ভব নয়। কারণ অর্থমন্ত্রী মহোদয় সাংবাদিকদের জানিয়ে দিয়েছেন কালো টাকার মালিকদের তালিকা সরকারের হাতে থাকলেও তা প্রকাশ করা হবে না। প্রকাশ করা হবে না বলে প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলাই যুক্তিযুক্ত। কারণ সাবেক হকার একজন ওয়ার্ড কমিশনারের আংশিক কালো টাকাই যদি 9 কোটি হয় তাহলে মন্ত্রী-মিনিষ্টার, মেয়র, এমপি সাহেবদের কারও কারও কালো টাকার পরিমাণ কত? আর ক্ষমতাসীনদের অধিকাংশেরই যে অঢেল টাকা হয়েছে তা-তো তারা সকলেই প্রায় কোরাসের সুরে বলে বেড়াচ্ছেন,"আমাদের সকলেরই আয়-রোজগার বেড়েছে, ক্রয়মতা বেড়েছে।" আজকাল শুধু সরকার প্রধান, মন্ত্রী-মিনিষ্টাররাই আয়-রোজগার, ক্রয়মতা বাড়ার কথা বলছেন না, চুনোপুঁটি, রাজনেতিক কমর্ী পর্যনত্দ যারা ঠিকাদারী ইত্যাদির নামে উন্নয়ন তহবিলের অধিকাংশ লুটপাট করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন তারাও সমাজে বুক ফুলিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন, "আমাদের আয়-রোজগার বেড়েছে," এবং তাদের আয়-রোজগারের বমাল প্রমাণ হিসাবে বাড়ি-গাড়ি ক্রয় করে সমাজকে তা দেখিয়েও দিচ্ছেন। আর এই দেশ, এই সমাজের যে শ্রেণীর মানুষ লুটপাটের অংশীদার হওয়ার কথা কল্পনাও করতে পারেন না, সেই শ্রেণীর লোক লুটেরাদের সম্পদের নীচে চাপা পড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে বসেছে। চারিদিকে চেয়ে চেয়ে লুটপাট, অনাচার, অবিচারের দৃশ্য দেখা ছাড়া তাদের কিছুই করার নেই। মতার প্রতাপে প্রতাপশালী নেতার অত্যাচার, সেই নেতার আশীর্বাদ পুষ্ট সরকারি আমলার অত্যাচার, নেতা-আমলার উভয়ের আশীর্বাদ পুষ্ট চামচার অত্যাচার ইত্যাদি সকল অত্যাচার সয়ে যাওয়াই এখন গরিষ্ঠ সংখ্যক দেশ-বাসীর একানত্দ দায়িত্ব ও কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে! ক্ষমতাসীনদের অশীর্বাদ পুষ্ট হলে শপথ গ্রহণকারী (ওথ-টেকিং) সরকারি চেয়ারে বসে যা খুশী বলা ও করা যাচ্ছে। এমনকি নিজের খামখেয়ালীকে প্রশ্রয় দিতে গিয়ে এই দরিদ্র দেশের শত কোটি টাকা গচ্চা দেওয়া যাচ্ছে। উন্নয়ন কর্মকান্ডের নামে শত শত কোটি টাকা লুট-পাট করাসহ আরও কতকি করা যাচ্ছে। আর এসব করা এবং করানোর জন্য শুধু একটি মাত্র লাইসেন্সই যথেষ্ট। তাহলো ভোট চুরি ডাকাতি করে হোক আর চুরি করা, ডাকাতি করা, লুট করা টাকা দিয়ে হোক যেনতেনভাবে নির্বাচনে জিতে নিজেকে গণতন্ত্রী সরকাররূপে ঘোষণা দেওয়া। ব্যস, সব ফয়সালা হয়ে গেল। ঐ লাইসেন্স গলায় ঝুলিয়ে নিজেকে গণতন্ত্রী সরকার হিসাবে জাহির করে যা খুশী তাই করা এবং করানো যাবে। যাকে যত টাকা খুশী লুটপাটের সুযোগ দেওয়া যাবে, যাকে যত খুশী টেলিভিশন কেন্দ্রের মালিক বানানো যাবে, যাকে যত খুশী ব্যাংকের মালিক বানানো যাবে, যাকে খুশী তাকে নিয়ে প্রজাতন্ত্রের পবিত্র চেয়ারে বসিয়ে রং-তামাশা করানো যাবে, আরও কতকি করা ও করানো যাবে তার হিসাব কে রাখে? শুধু কেউ হিসাব রাখে না এই দেশ, এই সমাজের যেসব নিরিহ, সহজ-সরল আদম সনত্দানেরা উপরোক্ত কীর্তি-কর্মের নীচে চাপা পড়ে মার খাচ্ছেন, মারা যাচ্ছেন তাদের কথা। জানিনা সমাজের এই শ্রেণীর মানুষেরা আর কতদিন মার খেয়ে যাবেন! আমরা আরও জানি না মার খেতে খেতে তাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকেছে কিনা? মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, গুলশান, ঢাকা।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা
বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন
চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন
ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?


৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।