somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উল্টে-পাল্টে দে মা, লুটে-পুটে খাই

২২ শে জুলাই, ২০০৬ রাত ২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুনর্ীতি আর দুনর্ীতিদুষ্ট রাজনীতি দুটোতেই আমার এলার্জি। মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন এর এই লেখাটি চিঠি আকারে আজকের ইত্তেফাকে ছাপা হয়েছে। এই কথাগুলো যেন ঠিক তার নয়- আমার । আসলে এটা আমাদের সবারই কথা। একদিন আমরা দুনর্ীতির কলুষ থেকে মুক্ত হব সে আশা কখনোই ছাড়তে চাইনা। ........................................................................................ 1. ইত্তেফাকের একটি খবরে প্রকাশ, বিএনপির মহানগর কমিটির একজন নেতা এবং ওয়ার্ড কমিশনার 67 লাখ টাকা কর দিয়ে 9 কোটি কালো টাকা সাদা করে নিয়েছেন। অর্থাৎ তিনি এখন কমপক্ষে 9 কোটি টাকা প্রকাশ্যে আদান প্রদান করতে পারবেন। বলাবহুল্য, এই 9 কোটি সাদা টাকার খোলসে তিনি এখন 90 কোটি টাকা লেনদেন করবেন। ব্যাপারটা অনেকটা এই রকম যে, একজন চোরাকারবারী বিদেশ হতে 10 কোটি টাকার চিনি আমদানী করলে চোরাপথে আনা আরো 100 কোটি টাকার চিনি বাজারে ছেড়ে থাকে। সেক্ষেত্রে 10 কোটি টাকার ওপর আমদানী শুল্ক দিলেও বাকি 100 কোটি টাকার ওপর তাকে শুল্ক দিতে হয় না। কারণ ঐ 10 কোটি টাকার আমদানী কাগজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখিয়েই সে 110 কোটি টাকার মাল জায়েজ করে ফেলে। এক্ষেত্রে কমিশনার সাহেবও যে 9 কোটি সাদা টাকার কাগজ দেখিয়ে 90 কোটি টাকা ব্যবহার করবেন তা একরকম নিশ্চিনত্দই বলা যায়। কারণ তিনি তার সমুদয় কালো টাকাই ট্যাঙ্ দিয়ে সাদা করেছেন এমন ধারণা বোকামী মাত্র। 2. আমাদের এই দেশ এই সমাজ এখন কারা নিয়ন্ত্রণ করছেন তা বোধহয় দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। সম্মানিত কমিশনার সাহেব ইতিপূর্বে একজন হকার ছিলেন। বিএনপির রাজনীতি করে তিনি ওয়ার্ড কমিশনার হয়েছেন। ইতিমধ্যেই তার হাতে যে টাকা এসে গিয়েছে তাতে করে তিনি অদূর ভবিষ্যতে আরও বড় নেতা হবেন এবং এমপি ইলেকশন করে মন্ত্রী মিনিষ্টার হবেন সে কথা বলাও যুক্তিহীন হবে না। কারণ অতীতেও অনেকেই এমনটি হয়েছেন। আর আমরা অবাক বিস্ময়ে তা চেয়ে-চেয়ে দেখেছিও। এখন অর্থই সবকিছুর নিয়ামক শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নীতিজ্ঞান, নীতিকথা এখন কাগুজে কথা মাত্র। যার অর্থ আছে তার সবকিছু আছে। আর রাজনীতি এখন অর্থ কামাবার মোম অস্ত্র। কেউ হকারই হোন, আর বেকারই হোন একবার রাজনীতিতে ঢুকে লাইন মত নেতা-নেত্রীর নেকনজরে পড়লে আর কথা নেই। মতাসীন দলের এইসব নেতা কমর্ীরা কে কত টাকা কামিয়েছেন বা কামাচ্ছেন তার বিসত্দারিত দেশবাসীর প েজানাও সম্ভব নয়। কারণ অর্থমন্ত্রী মহোদয় সাংবাদিকদের জানিয়ে দিয়েছেন কালো টাকার মালিকদের তালিকা সরকারের হাতে থাকলেও তা প্রকাশ করা হবে না। প্রকাশ করা হবে না বলে প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলাই যুক্তিযুক্ত। কারণ সাবেক হকার একজন ওয়ার্ড কমিশনারের আংশিক কালো টাকাই যদি 9 কোটি হয় তাহলে মন্ত্রী-মিনিষ্টার, মেয়র, এমপি সাহেবদের কারও কারও কালো টাকার পরিমাণ কত? আর ক্ষমতাসীনদের অধিকাংশেরই যে অঢেল টাকা হয়েছে তা-তো তারা সকলেই প্রায় কোরাসের সুরে বলে বেড়াচ্ছেন,"আমাদের সকলেরই আয়-রোজগার বেড়েছে, ক্রয়মতা বেড়েছে।" আজকাল শুধু সরকার প্রধান, মন্ত্রী-মিনিষ্টাররাই আয়-রোজগার, ক্রয়মতা বাড়ার কথা বলছেন না, চুনোপুঁটি, রাজনেতিক কমর্ী পর্যনত্দ যারা ঠিকাদারী ইত্যাদির নামে উন্নয়ন তহবিলের অধিকাংশ লুটপাট করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন তারাও সমাজে বুক ফুলিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন, "আমাদের আয়-রোজগার বেড়েছে," এবং তাদের আয়-রোজগারের বমাল প্রমাণ হিসাবে বাড়ি-গাড়ি ক্রয় করে সমাজকে তা দেখিয়েও দিচ্ছেন। আর এই দেশ, এই সমাজের যে শ্রেণীর মানুষ লুটপাটের অংশীদার হওয়ার কথা কল্পনাও করতে পারেন না, সেই শ্রেণীর লোক লুটেরাদের সম্পদের নীচে চাপা পড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে বসেছে। চারিদিকে চেয়ে চেয়ে লুটপাট, অনাচার, অবিচারের দৃশ্য দেখা ছাড়া তাদের কিছুই করার নেই। মতার প্রতাপে প্রতাপশালী নেতার অত্যাচার, সেই নেতার আশীর্বাদ পুষ্ট সরকারি আমলার অত্যাচার, নেতা-আমলার উভয়ের আশীর্বাদ পুষ্ট চামচার অত্যাচার ইত্যাদি সকল অত্যাচার সয়ে যাওয়াই এখন গরিষ্ঠ সংখ্যক দেশ-বাসীর একানত্দ দায়িত্ব ও কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে! ক্ষমতাসীনদের অশীর্বাদ পুষ্ট হলে শপথ গ্রহণকারী (ওথ-টেকিং) সরকারি চেয়ারে বসে যা খুশী বলা ও করা যাচ্ছে। এমনকি নিজের খামখেয়ালীকে প্রশ্রয় দিতে গিয়ে এই দরিদ্র দেশের শত কোটি টাকা গচ্চা দেওয়া যাচ্ছে। উন্নয়ন কর্মকান্ডের নামে শত শত কোটি টাকা লুট-পাট করাসহ আরও কতকি করা যাচ্ছে। আর এসব করা এবং করানোর জন্য শুধু একটি মাত্র লাইসেন্সই যথেষ্ট। তাহলো ভোট চুরি ডাকাতি করে হোক আর চুরি করা, ডাকাতি করা, লুট করা টাকা দিয়ে হোক যেনতেনভাবে নির্বাচনে জিতে নিজেকে গণতন্ত্রী সরকাররূপে ঘোষণা দেওয়া। ব্যস, সব ফয়সালা হয়ে গেল। ঐ লাইসেন্স গলায় ঝুলিয়ে নিজেকে গণতন্ত্রী সরকার হিসাবে জাহির করে যা খুশী তাই করা এবং করানো যাবে। যাকে যত টাকা খুশী লুটপাটের সুযোগ দেওয়া যাবে, যাকে যত খুশী টেলিভিশন কেন্দ্রের মালিক বানানো যাবে, যাকে যত খুশী ব্যাংকের মালিক বানানো যাবে, যাকে খুশী তাকে নিয়ে প্রজাতন্ত্রের পবিত্র চেয়ারে বসিয়ে রং-তামাশা করানো যাবে, আরও কতকি করা ও করানো যাবে তার হিসাব কে রাখে? শুধু কেউ হিসাব রাখে না এই দেশ, এই সমাজের যেসব নিরিহ, সহজ-সরল আদম সনত্দানেরা উপরোক্ত কীর্তি-কর্মের নীচে চাপা পড়ে মার খাচ্ছেন, মারা যাচ্ছেন তাদের কথা। জানিনা সমাজের এই শ্রেণীর মানুষেরা আর কতদিন মার খেয়ে যাবেন! আমরা আরও জানি না মার খেতে খেতে তাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকেছে কিনা? মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, গুলশান, ঢাকা।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০০৬ রাত ৩:২১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×