মা যখন ৭ মাসের গর্ভবতী বাবা তখন মাকে ছেড়ে পালিয়ে গেছে । আর জন্ম গ্রহন করার ২ মাসের মাথায় মাও অনত্র বিয়ে করে চলে যায় । এরপর থেকে পিতৃমাতৃহীন শারমীন তার নানা খবর উদ্দিন আর নানী জাহেরা বেগমের কাছে আছে । বৃদ্ধ নানা ভিক্ষা করে আর নানী মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে শারমীনকে লেখা পড়া করাচ্ছে । শারমিনের স্বপ্ন একজন বড় ডাক্তার হওয়া ।
রংপুর শহরের বাবু পাড়া সাজাপুর মহল্লায় অন্যের জমিতে একটি বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে পলিথিন দিয়ে কোন রকমে ঝুপড়ি ঘর তৈরী করে সেখানেই একমাত্র নাতনী শারমীনকে নিয়ে বাস করছেন ৮০ বছরের বৃদ্ধ খবর উদ্দিন তার স্ত্রী জাহেরা খাতুনকে নিয়ে । শারমীন এখন চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ে । প্রথম শ্রেনী থেকে ক্লাশে প্রথম হয়ে আসছে শারমীন । ছোট্র ঝুপরিতে কোন রকমে বাস করলেও লেখাপড়া করার অদম্য উৎসাহ আর বড় হবার বাসনায় নিরক্ষর বৃদ্ধ নানা খবর উদ্দিন নিজেও স্বপ্ন দেখেন তার নাতনীকে ডাক্তার বানাতে । তাইতো এই বৃদ্ধ বয়সে নাতনীর লেখাপড়ার খরচ জোগাতে আর দু বেলা খাবার জোগাতে বেরিয়ে পড়েন শহরের বিভিন্ন মহল্লায় ভিক্ষে করতে । তার স্ত্রী জাহেরা খাতুন মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন । নিজেরা কষ্ট করলেও কোন কাজ করাতে চাননা শারমীনকে দিয়ে । তাদের একটাই চাওয়া একমাত্র নাতনীকে মানুষের মত মানুষ করা । ভিক্ষা বৃত্তি করে আর মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে নাতনীকে আরো ভালো ফলাফল করার জন্য দুজন প্রাইভেট মাষ্টারের কাছে পড়াচ্ছেন । শারমীনের ইচ্ছে বড় হয়ে একজন ডাক্তার হওয়া । সে জন্য ঝুপরি ঘরে কুপি জ্বালিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত পড়া শোনা চালিয়ে যাচ্ছে সে । শারমীনের ভালো ফলাফল আর লেখা পড়ার অদম্য বাসনা এলাকাবাসীকে মুগ্ধ করেছে । সকলেই তাকে আদর করে । স্থানীয় এনজিও মুসলীম এইড বাংলাদেশ শারমীনের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে । কিন্তু কতদিন এভাবে চলবে শারমীনের লেখা পড়া কি করতে পারবে সে?।
হতদরিদ্র মেধাবী শারমীনের লেখা পড়া যাতে চালিয়ে যেতে পারে সে জন্য সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসবে বলে তার বৃদ্ধ নানা খবরউদ্দিনের প্রত্যাশা । আমরা কি পারিনা এই মেধাবী মেয়েটির পাশে দাড়াতে?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





