২০০৪ সাল। আমি তখন কাজিরহাট ইস্কুল (উদয়পুর মুসলিম আখন্দ মাধ্যমিক বিদ্যালয়) এর দশম শ্রেণির ছাত্র। প্রতিদিন ইস্কুলের ক্লাস শেষে ও ক্লাস শুরুর আগে দলবেঁধে বা ব্যাচ করে ১ ঘন্টা করে প্রাইভেট পরতাম। প্রতিদিন সকালে প্রাইভেট শুরুর আধা ঘন্টা পর আর বিকালের প্রাইভেট এর সোম ও বৃহস্পতিবার এর পুরোটা সময় মাথায় কিছুই ডুকতো না। কারন ক্লাস শুরুর আধা ঘন্টা আগে বা আমাদের প্রাইভেট শুরুর আধা ঘন্টা পর থেকেই ক্লাসের ছাত্র ছাত্রীরা আসতে শুরু করতো। আমাদের প্রাইভেট এর সময় যতই গড়াতো আমার প্রিয় সহপাঠী ভাই বোনদের কিচিরমিচির ততই বাড়তো। কিছুই করার ছিলো না কারন আমি হলেও তাই করতাম। এতো গেলো সকালের কিচ্ছা। এবার আসি বিকেলের কথায়।
সারাদিন একটানা ক্লাস শেষে খুদায় আর গরমে থাকতাম অস্থির। এখানে বলে রাখা ভালো ছাত্র হিসাবে খুবেই বাজে ছিলাম আমি। তারপরও যাও মাথায় ডুকবে তা ওই খুদা আর গরমের জন্য মাথার ধারে কাছেও আসতো না। তার উপর সোম ও বৃহস্পতিবার এর "নিন নিন, না নিন, না নিন" এর যন্ত্রনা যোগ হত।
কিরে ভাই বাড়ী আপনার কাজিরহাট থানায় অথচ নিন নিন না নিন না নিন এর গল্প শুনেন নায়। নাহ্ জাতি হতাস আপনার উপর। কি জেরে কাশঁতে হবে। ঠিক আছে। জেরেই কাশঁছি। মনোযোগ দিয়ে শুনুন।
নিন নিন, না নিন, না নিন হচ্ছে একটা গ্রুপের শ্লোগান। যারা বিভিন্ন হাটে ফেরী করে ঔষধ বিক্রি করতো। এরা প্রথমে জাদু টাইপের কিছু খেলা দেখাতো, তারপর লোকজন এর সমাগম বুজে শেষ জাদুটা অসম্পুর্ন রেখে ঔষধ এর লেকচার শুরু করতো। আর লেকচার শেষে করতো ঔষধ বিক্রি। যখন বিক্রি শেষ তখন বলতো নিন নিন, না নিন, না নিন, এবার গান শুনুন। প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার কাজিরহাট মিলতো তাই ওই হাটের দিন ওরা আসতো ঔষধ বিক্রি করতে আর আমাদের লেখাপড়া উঠতো চাংগে।
সম্প্রতি খাদ্য মন্ত্রণালয়, গম, পেপার / টিভি রিপোটিং, সব শেষ উচ্চ আদালত। এগুলার কথা মনে পড়লেই কেনো জানি ওই ছোট্ট বেলার সেই নিন নিন না নিন না নিন, এবার গান শুনুন এর কথা মনে পরছে।
ভাই আর জেরে কাশাঁ সম্ভব না কারন আমারো মামলার ভয় আছে। যা বুজার বুইজ্জা লইয়েন নিজ দ্বায়িত্বে।
লেখাটা আমি আমার এফবিতেও পোষ্ট করিয়াছি।
ফি আমানিল্লাহ। আর এত কষ্ট করে পুরোটা পড়ার জন্য জাযাকাল্লাহ খাইর।