somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঝটিকা সফর -২ (দুই) -- পদ্মা রিসোর্ট

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




জন্মাষ্টমীর সকাল, সরকারী ছুটির সকাল। ক’দিন আগেই প্রোগ্রাম করা ছিল, ঢাকার বাইরে যাবার। এক এক করে দশজন হলাম আমরা। কারো নিজেদের গাড়ীতে যাব না আমরা। সবাই মিলে একসাথে যাব হৈ হুল্লোর করতে করতে। ঠিক আছে চলো---------

ড্রাইভারকে বলা হলো সকাল সাতটায় আসতে। আমি ফজর নামাজ পড়ে আর ঘুমাতে গেলাম না, গোসল সেরে নিলাম। রাস্তায় নাশতা করা হবে, তাই নাশতা বানানোর ঝামেলায় আর গেলাম না। চা খেয়ে রেডি হয়ে নিলাম, এর মাঝেই চলছে ফোনাফুনী! গাড়ী এখোনো আসছে না কেন, সকালে না বেরোলে বেড়ানোতে মজা হবে না, আরো--আরো--। ড্রাইভার সাহেব আসতে থাকুন, আমি একটু ঘুমিয়ে নিই।

সকাল ৮.৩০-এ ফোন এল, গাড়ী এসেছে। প্রথম জন উঠেছেন গুলশান থেকে, দ্বিতীয় সারিতে আমরা মিরপুরবাসী। চারজন শ্যাওরাপাড়া আর দু’জন আগারগাঁও তালতলা থেকে উঠে যাত্রা শুরু হলো আমাদের সকাল নয় টায়। এর পরে দু’জন উঠলেন সংসদ ভবনের সামনে থেকে আর সর্বশেষ জন এলেন ধানমন্ডী থেকে।

দশ জনের দল নিয়ে চলতে শুরু করলাম আমরা। ছোট্ট একটি ডিভাইসে গান চলছে-

বাড়িরওনা দক্ষীণপাশে গো
ও দাইমা কিসের বাদ্য বাজেগো,
আমার দাইমা, দাইমাগো-----

--(রূপবান সিনেমার গান)

ক’জন গাইছে সাথে ইচ্ছে মত। এরপরে অনুরোধের আসর, যার যেটা পছন্দ সেই গানই চলবে ইউটিউব থেকে।এভাবেই আমরা যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার, বুড়ীগঙ্গা সেতু, ধলেশ্বরী সেতু পেরিয়ে, ঢাকা থেকে পৌছে গেলাম লৌহজং। পথে শ্রীনগরে সকালের নাস্তা সেরে নিয়েছি। আমাদের স্থলপথে ভ্রমণ শেষ। এরপরে জলপথে যেতে হবে।

লৌহজং থানার পাশেই পদ্মা নদী। অনেকখানি জায়গা পাড় বাঁধানো। পাড় থেকে ছোট ছোট ইঞ্জীন চালিত নৌকা ছেড়ে যাচ্ছে। বিশাল পদ্মার মাঝে চর জেগে আছে, স্থায়ী চর। আর সেখানেই গড়ে উঠেছে ‘পদ্মা রিসোর্ট।‘ ওখানকার (পদ্মা রিসোর্টের) নিজেদের নৌকাই যাত্রী পারাপার করছে। এর একটি নৌকায় আমরা উঠে গেলাম, আর দশ মিনিটেই পৌছে গেলাম পদ্মা রিসোর্ট নামের ছোট্ট, সুন্দর সেই দ্বীপে।



লৌহজং থানা


এখান থেকেই রিসোর্টের নৌকায় যাত্রা শুরু হলো আমাদের








নিজেদের মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরী রিসোর্টটি। এখন বর্ষার পানি আছে, তাই এটি ভাসমানও বলা যায়। শীতেও এখানে বেড়াতে খুব ভাল লাগে, তখন পানি থাকে না বলে পুরো এলাকা ফুলে ফুলে ভরে থাকে। সুন্দর করে সাজানো বাড়ীগুলোর প্রতিটি বাড়ী ডুপ্লেক্স, কাঠের তৈরী, ঘরের চাল ছন দিয়ে ছাওয়া, প্রতি বাড়ীরই খুব সুন্দর সুন্দর নাম। বাংলা ঋতুর নাম, বাংলা মাসের নাম। একটি বাড়িতে উঠলাম আমরা, নাম চৈত্র। সুন্দর নানান রকমের গাছ, ছোট ছোট কুঁড়েঘর দিয়ে সাজানো কমপ্লেক্সটি। ঘুরে ঘুরে দেখতে খুব ভাল লাগছিল। ছবি তুলতেও ভাল লাগছিল। বাংলার রূপ যেন খুব কাছে থেকে দেখছিলাম। ওখানকার খাবার ঘরটিও খুব সুন্দর, ভেতরের সবগুলো জানালা দিয়েই বাইরে পদ্মা নদী দেখা যাচ্ছিল, নদীতে বড় বড় ট্রলার যাচ্ছিল। আমাদের দুপুরের খাবারের মেন্যু ছিল পদ্মার ইলিশ ভাজা, মুরগী ভূনা, সব্জি আর ডাল, সাথে সালাদ। খাবার শেষে আড্ডা চলছিল কফির সাথে। খাবার ঘরটির সাথে বিশাল খোলা বারান্দা, চারিপাশে বর্ষার পানি, ফটো সেশনের দারূণ পরিবেশ।সারাটা দিনই মেঘলা ছিল, রোদ না থাকলেও ভ্যাপসা গরম।

সারাদিন গল্প আর ছবি তোলা শেষে বিকেলে পাঁচটায় বেরিয়ে এলাম আমরা। সন্ধ্যামালতি হেসে হেসে যেন বিদায় জানালো আমাদের, সেই সাথে বিকেলের মিষ্টি আলো। নৌকায় নদি পেরিয়ে আমরা আবারো থানার সামনে থেকে গাড়িতে উঠে পড়লাম। বিকেলের চা চক্র বিক্রমপুরে(শ্রীনগর)। বিক্রমপুর রসগোল্লা, বাখরখানি, দৈ আর গরুর দুধের চা। ওখানেই দেখলাম জন্মাষ্টমীর বিশাল র‍্যালী। বিশাল এই র‍্যালীর মাঝে মধ্যেই ভ্যান সাজিয়ে, তার মধ্যে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের কৃষ্ণ-রাধা সাজিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে। সাথে বাদ্য যন্ত্রীদের বিশাল বহর।


ভ্যান সাজিয়ে, তার মধ্যে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের কৃষ্ণ-রাধা সাজিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে

আর বিরতি নয়। এবার আবারো পছন্দের গান শুনতে শুনতে বাড়ী ফেরা। আমার পছন্দের গান ছিল, মনপূরা ছবির গান দু’টো। নিথুয়া পাথারে--- আর সোনার পালংকের ঘরে----।


এটাই ঢোকার পথ


ঢুকেই পথটা সোজা চলে গেছে ওদের অফিসে


এটাই অফিস






অফিসটাকে মাঝে রেখে ডানে বামে গড়ে উঠেছে কমপ্লেক্সটি










কটেজের নামগুলো কী সুন্দর




মাঝে মধ্যেই ছোট ছোট বসার জায়গা, এখন অবশ্য বর্ষার পানিতে ডুবে আছে




এটাই খাবার ঘর






বিকেলে আমরা ফিরে এলাম






সন্ধ্যামালতী হেসে হেসে আমাদের বিদায় জানালো

ঝটিকা সফর-১ (এক)

****************************************************************
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৪৩
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×