ব্লগের শিরোনাম দেখেই হয়তো অনেকে অবাক হচ্ছেন, কেঊবা মনে মনে বেশ কিছু শুদ্ধ বচনও (গালি!!!) এই অধমের প্রতি ছুঁড়ে দিতে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছেন মনে মনে, কেউ হয়তোবা নতুন পাগলের আমদানী হয়েছে ভেবে মুচকি হাসছেন। কিন্তু বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, এই মুহুর্তে বাংলাদেশের মানুষের জন্য এর চেয়ে জরুরী(!) ও নৈতিক(?) কোনো দায়িত্ব ও করনীয় আর কিছুই হতে পারে না বলে আমার বিশ্বাস। অনেকেই দ্বিমত পোষ্ণ করতেই পারেন, গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সে অধিকার নিশিতভাবেই যে কোনো নাগরিকেরই আছে। কিন্তু আমার সামগ্রিক বিচার-বিশ্লেষণী ক্ষমতা, অর্জিত ও চর্চিত জ্ঞান ও যুক্তি এবং চেতনালব্ধ উপলব্ধিই আমাকে শেষ পর্যন্ত এই অমোঘ ও পরম বাস্তবিক সিদ্ধান্তের প্রতি নিঃশঙ্ক চিত্তে অবস্থান নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
আসুন এবার আমরা দেখে নেই ঠিক কোন কোন যুক্তিতে আমরা সবাই মিলে একতাবদ্ধভাবে নিঃশঙ্কচিত্তে আওয়ামীলীগ করার মত বিপ্লবী সিদ্ধান্ত নিতে পারিঃ
১। আওয়ামীলীগই বাংলাদেশের একমাত্র মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। তারা ভিন্ন অন্য কেউ মুক্তিযুদ্ধ করেছে বলে মাঝে মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়! এমনকী মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনি রাজাকার হলেও বর্তমানে আওয়ামীলীগ করলেই কেবল আপনি সাচ্চা দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা/ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি হিসেবে বিবেচিত হবেন। কিন্তু ভুলেও আপনি যদি আওয়ামীলীগের কোনো কাজের বিরোধিতা করেন তবে আপনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষের শক্তি/ মৌলবাদী-জঙ্গী সশ্লিষ্ট ব্যক্তি হিসেবে নিশ্চিতভাবেই চিন্হিত ও সমালোচিত হবেন (এক্ষেত্রে আপনি মুক্তিযোদ্ধা/ পাড় বামপন্থী হলেও কোনোরকম পক্ষপাতমূলক ছাড় আপনাকে তারা দিবেন না, কেননা নীতি ও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে আওয়ামীলীগ আপোষহীন!!!)।
২। চাকরীর জন্য আপনাকে কোনোরকম ঝামেলায় পড়তে হবে না। আওয়ামীলীগ তার দলীয় সমর্থক আর কর্মীদের চাকরী নিশ্চিত করার ব্যাপারে অঙ্গিকারাবদ্ধ, প্রয়োজনে ঘুষ নিয়ে হলেও। আওয়ামীলীগের বর্তমান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী দেশনেত্রী- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে গনমাধ্যমেও অতি সাম্প্রতিক তাদের অঙ্গীকার ও মতামত সাহসীকতার সাথে ঘোষনা করেছেন। অতএব, আওয়ামীলীগ করলেই এই অকালের সময়ে আপনি চাকরীর অহেতুক চিন্তা হতে মুক্ত থাকতে পারবেন, অন্যথায় নয়!
৩। শুধুমাত্র আওয়ামীলীগ করলেই আপনার নামে খুনের মামলা থাকলেও আপনি অনায়াসে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা লাভের প্রার্থনা করে তা অতিদ্রুত পেয়েও যেতে পারেন, যা পরবর্তীতে আপনাকে আরো অধিক সাহসীকতার সাথে আওয়ামীলীগ করতে উদ্বুদ্ধ করবে, প্রেরণা যোগাবে!
৪। আপনি প্রশাসনের যেকোনো বিষয়ে (লোক নিয়োগসহ?) মতামত দিতে পারবেন ও তা মেনে নিতে প্রশাসনকে জোর-জবরদস্তি ও করতে পারবেন নির্ভয়ে। এক্ষেত্রে প্রশাসন আপনার বিপক্ষে গেলে, এমনকি ভয়ে কান্নাকাটি করলে প্রয়োজনে সরকারি কর্মকর্তার নিয়ম বহির্ভূত আচরণের দায়ে দায়ী সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গের ও।এস।দি/ বদলী করে দেওয়া হবে নিশ্চিতভাবে। কিন্তু আপনাকে নামকাওয়য়াস্তে লোকদেখানো শাস্তি দিয়ে জামিন/মুক্তি দিয়ে দেওয়া হবে!?!
৫। সারা দেশজুড়ে আপনি ইচ্ছামত টেন্ডারবাজী, জবরদখল করতে পারবেন, কোনো সমস্যা হবে না। মাঝে মাঝে সরকারে ইমেজ রক্ষার খাতিরে আপনাকে একটু মিষ্টি করে বকে দেওয়া হবে, কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।!
৬। সরকারী চাকরীতে আপনার পদোন্নতি হবে অভূতপূর্বো দ্রুতোগতিতে!!!
৭। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হলে, হলে থাকবেন ফ্রিতে (কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই, কেননা, নিয়ম আপনার জন্যই , আপনিই নিয়ম), খাবেনও ফ্রি! কারণ দেশটা আপনার বাপের সম্পত্তি!!!
অতএব, হে চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গো, আসুন আমরা এই মুহুর্তো থেকে বাস্তবতার চরম নিরিখে সকলে জমায়াতের সহিত আওয়ামীলীগের দলীয় পতাকার ছায়াতলে সমবেত হই। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১০ সকাল ৮:৪৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




