ঠিক এই মুহূর্তে আমার মনে হচ্ছে বেঁচে থাকা আমার জন্য ভীষণ কঠিন। এত শূন্যতা, এত হাহাকার, চারদিকের এত আয়োজন সব মনে হচ্ছে বিষাদের আরেক নাম। ডিসেম্বর মানেই আমার জন্য কিছু কঠিন দিন। এতটা কষ্ট কেন হয় আমি জানি না। একটাই ইচ্ছে জাগে, i wanna breathe. হেমন্তের শেষ বিকেলের আলোয় মাঠভর্তি পাকা ধান পেছনে ফেলে যেতে যেতে আজ থেকে সাত বছর আগে আমি একরাশ হতাশা নিয়ে ভাবছিলাম, আমার আর বোধহয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হল না। ঠিক সাত বছর পর হেমন্তের শেষ বিকেলের হলদেটে আলোয় দ্বিগুন হতাশা নিয়ে খামে ভরা একটা কাগজ নিয়ে আমি ফিরছি। এতটা শূন্য, রিক্ত মনে হচ্ছিল।
একটা মেয়ের জীবনে নিজের বলতে কী কী হয় আমার জানা নেই। ব্যাপারটা আপেক্ষিক ধরে নিয়েছি। আমার নিজের বলতে কিছু যদি পাওয়া হয় সেটা রুম নং ৪৩৬। এর চেয়ে আপন আমার আর কিছুই হয়নি। এত শান্তি একজীবনে আর কখনো পাবো কিনা জানিনা। আট ওয়াটের টেবিল ল্যাম্পটা খুলতে গিয়ে মনে হচ্ছিল, আমার এত এত রাত জাগা ; অশ্রুবিসর্জন ; সমস্ত ভালোবাসা নিয়ে কারো জন্য অপেক্ষা ; সিজদাহ্ অবনত হওয়া ; আমার সমস্ত গোপনীয়তার নির্বাক দর্শক। এত কাছ থেকে কেউ আমাকে জানে না। এই জায়গাটা আর কোনোদিন আমার হবে না এটা ভাবতেই মনে হয় দমবন্ধ হয়ে আসে।
তারপর সমস্ত শূন্যতা আমায় চেপে ধরে। জীবন এমন কেন? একবার মনে হচ্ছিল সমস্ত ডায়েরি পোড়ায় ফেলি। এত ভার আমি নিতে পারবো না। কিন্ত, এটুকু ছাড়া আমার আর আছেই বা কি! হয়তোবা, কখনো পথ চলতে গিয়ে এই স্মৃতিটুকু কঠিন দুঃখ দিয়ে হলে ও বাঁচিয়ে রাখবে আমাকে। প্রার্থনা আর প্রেমে শরীক রাখতে নেই। তবু ও আমার কিছুই পাওয়া হল না।
হেমন্তের শেষ বিকেলের আলোয় জীবনের সমস্ত না পাওয়া লিপিবদ্ধ হয় অন্য কোনো পাতায়। সেই বিবর্ণ পাতা ধারণ করে এক বুক বিষণ্ণতা। যা কখনো ছুঁয়ে দেখা হয় না।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




