জামাতের মৌলবাদিত্ব এবং গণতন্ত্রবিরোধী আচরণের জন্য এতোগুলো লোকের প্রাণ যায় এবং সামরিক আইন জারি হয়। জামাতের উদ্দেশ্য ছিল মওদুদীর রাজনৈতিক নেতৃত্ব স্থাপন। রাজনৈতিক আন্দোলন না করে ধর্মের মুখোশ পরে রাজনৈতিক সাফল্য চাওয়ার কারণেই এই ট্রা্যজেডি। এই গণহত্যার দায় ছিল সম্পূর্ণভাবে মওদুদীর। একইভাবে জামাত মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকে ইসলাম এবং পাকিস্থানে রক্ষার যুদ্ধ বলে গণহত্যা-ধর্ষণ লুটপাট-অগি্নসংযোগ করে। জামাত বলেছিল পাকিস্থানকে রক্ষা করতে না পারলে ইসলাম রক্ষা হবে না। এভাবে জামাত নেতারা পাকিস্থান রক্ষা করতে না পেরে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গা ঢাকা দেয়। তারপরে ফ্যাসিবাদী ষড়যন্ত্র করে জাতির পিতাকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে বাংলাদেশে আবার পাকিস্থানি রাজনীতি অর্থাৎ ইসলাম ব্যবসায়ী রাজনীতির প্রবর্তন করতে উদ্যোগী হয়। এতে তাদের বড়ো সহায়কের ভূমিকা পালন করেন বাংলাদেশের তৃতীয় স্বাধীনতা ঘোষণাকারী জে. জিয়া।। সামরিক শাসনের ঘেরাটোপে শিখণ্ডী রূপে প্রধান বিচারপতি সায়েমকে সামনে রেখে নিজে তিনি নামে উপপ্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হলেও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের ভূমিকা পালন করেন এবং সময়মতো বিচারপতি সায়েম পদত্যাগ করলে তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন এবং সামরিক আইন জারি করে 15 বার সংবিধান সংশোধন করে সংবিধানের চার মূলনীতি বাতিল করেন। তারমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। এটি সম্পূর্ণভাবে সংবিধান থেকে বাদ দেয়া হয় সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী পাস করে। পঞ্চম সংশোধনী সংসদে পাস করলেও তখন সামরিক আইন জারি ছিল। হাইকোর্ট বিভাগের একটি যুগান্তকারী রায়ে এই পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ও অসাংবিধানিক বলেছেন মাননীয় বিচারপতিদ্বয়।
ধর্মনিরপেক্ষতা সংবলিত সংবিধানের অনুচ্ছেদটি বাতিল করে জে. জিয়া বাংলাদেশে ধর্মব্যবসায়ীদের রাজনীতি করার সুযোগ দেন এবং '79-র নির্বাচনের ফলাফল যা সামরিক ছাউনিতে তৈরি হয়েছিল তাতে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে '54-র নির্বাচনে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া মুসলিম লীগকে 12টি আসন এবং ধর্মব্যবসায়ী আইডিএল নামধারী দলকে 6টি আসন দেন। এখান থেকে জামাত আবার তাদের বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের যাত্রা শুরু করে ধাপে ধাপে অগ্রসর হয় 2001 সালের 'সালসা' সরকারের চক্রান্তে কারচুপির নির্বাচনে।
নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব মেনে নিয়ে একেবারে জোট সরকারের মন্ত্রী হয়ে যুদ্ধাপরাধী নিজামী-মুজাহিদী '71-এর গণহত্যা এবং পাকিস্থান রক্ষার প্রচেষ্টা ভুলে গিয়ে পুরনো অভ্যাস অনুযায়ী নিজ দলের কর্মসূচি খালেদা জিয়াকে দিয়ে বাস্থবায়ন করিয়ে স্ফীতকায় হয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রার কথা বড়ো গলায় বলেছে। সেই সঙ্গে নীরবে খালেদা জিয়ার পায়ের তলার মাটি সরিয়ে নিচ্ছে কেঁচোর মতো। যেদিন খালেদা জিয়ার বোধোদয় হবে সেদিন তিনি টের পাবেন বড়ো দেরি হয়ে গেছে। তার নমুনা চারদিকে অত্যন্ত উজ্জ্বল।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




