somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুপারবাগ (superbug) এক নীরব ঘাতক ও মহামারী

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউ (ICU) আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (BSMAU)। এই প্রতিষ্ঠানের আইসিইউতে মারা যাওয়া রোগীদের ৮০ শতাংশের মৃত্যুর কারণ হলো সুপারবাগ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে। বলা হচ্ছে, মাত্রাতিরিক্ত ও অনিয়ন্ত্রিত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সুপারবাগ হলো অ্যান্টিবায়োটিক সহনশীল ব্যাকটেরিয়া। এসব ব্যাকটেরিয়াকে প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দিয়ে ঠেকানো যায় না। বিএসএমএমইউর আইসিইউতে মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে এই সুপারবাগ। ২০১৮ সালে বিএসএমএমইউর আইসিইউতে ভর্তি হওয়া আনুমানিক ৯০০ রোগীর মধ্যে ৪০০ জনই মারা গেছেন। আর এর পেছনে অন্যতম বড় কারণ হলো অ্যান্টিবায়োটিকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার।

মানবদেহে উপস্থিত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আবিষ্কার করা হয়েছিল অ্যান্টিবায়োটিক। চিকিৎসাশাস্ত্রের ইতিহাসে যুগান্তকারী হিসেবেই ধরা হয়েছিল অ্যান্টিবায়োটিকের আবিষ্কারকে। কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে সেই অ্যান্টিবায়োটিক এখন নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছে।

অ্যান্টিবায়োটিক-পূর্ব যুগে সংক্রামক ব্যাধি ছিল মারণব্যাধি। ইতিহাসের পাতায় খুঁজলেই পাওয়া যাবে সংক্রামক ব্যাধির মহামারীর গল্প– যা ধ্বংস করেছে একের পর এক শহর, জনপদ আর সভ্যতা। বুবনিক প্লেগ, সিফিলিস, কলেরা, ম্যালেরিয়া আর যক্ষ্মার মতো ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের প্রাদুর্ভাবে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে নিশ্চিহ্ন হয়েছে কোটি মানুষের জীবন; ধস নেমেছে অর্থনীতিতে। স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং আবিষ্কার করেন প্রথম অ্যান্টিবায়োটিক পেনিসিলিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লাখো মানুষের জীবন বাঁচিয়ে দেওয়া এই ওষুধকে ডাকা হত ‘মিরাকাল ড্রাগ’। চিকিৎসাশাস্ত্রে পৃথিবীজুড়ে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসে পেনিসিলিন।

ভাবা হত এই অস্ত্র দিয়ে পৃথিবী থেকে সংক্রামক ব্যাধি সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা যাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে, পেনিসিলিন আবিষ্কারের ১০ বছরেরও কম সময়ে, এমনকি স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং পেনিসিলিন আবিষ্কারের জন্য পাওয়া নোবেল পুরস্কার গ্রহণের আগেই এক প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া হয়ে ওঠে পেনিসিলিন-প্রতিরোধী। সেই থেকে গত ৭০ বছর ধরে ব্যাকটেরিয়া আর মানুষে চলছে ‘ইঁদুর-বেড়াল খেলা’। আবিষ্কৃত হয়েছে নতুন প্রজন্মের নতুন প্রজাতির অ্যান্টিবায়োটিক। তার সঙ্গে তাল রেখে ব্যাকটেরিয়াও গড়ে তোলে নতুন নতুন প্রতিরোধী ক্ষমতা।

অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে খাপ খাইয়ে বেঁচে থাকা অথবা প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করা ব্যাকটেরিয়ার একটি সহজাত প্রক্রিয়া। এটি মূলত শুরু হয় ব্যাকটেরিয়ার জেনেটিক পরিবর্তনের মাধ্যমে। এটি তখনই ঘটে যখন কোনো এক প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া কোনো এক সুনির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিকের সম্মুখীন হয়। অ্যান্টিবায়োটিক থেকে নিজেদের বাঁচাতে ব্যাকটেরিয়া হয় নিজেদের কোনোভাবে পাল্টে ফেলে, অথবা এমন সব রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে যা দিয়ে অ্যান্টিবায়োটিককে নিষ্ক্রিয় করে ফেলা যায়।

আবার ব্যাকটেরিয়া তার অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী জিনগুলো অন্য প্রজাতির ব্যাকটেরিয়াতে বিস্তারের ক্ষমতা রাখে। এর ফলে যেসব ব্যাকটেরিয়া আগে ক্ষতিকর ছিল না তারা এখন ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াতে রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে। এভাবে বর্তমানে ব্যবহৃত সব প্রজাতির অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধেই কোথাও-না-কোথাও, কোনো-না-কোনো প্রজাতির ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধের খবর জানা গেছে। আবার একই প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া ক্রমাগত একের পর এক অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করার মাধ্যমে পরিণত হচ্ছে বহু অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ভয়ানক সুপারবাগে– যাদের বিরুদ্ধে আমাদের হাতে তেমন কার্যকরী অ্যান্টিবায়োটিক অবশিষ্ট নেই।

উন্নত বিশ্বে সুপারবাগ এখন এক আতঙ্কের নাম। যদিও আমাদের দেশসহ উন্নয়নশীল আরও কিছু দেশ– যেখান থেকে মূলত সুপারবাগের জন্ম– সেখানে এসব নিয়ে আলোচনা বা ভীতি নেই বললেই চলে।


যদিও এটা অবধারিত যে, অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে এর বিরুদ্ধে একসময় না একসময় প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া তৈরি হবেই। কিন্তু আমাদের অসচেতনতা, স্বভাব এবং অবহেলার কারণে এসব প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া তৈরি হচ্ছে হাজার হাজার গুণ দ্রুতগতিতে।

আমরা না জেনে, না বুঝে যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করছি, এমনকি ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই। ডাক্তাররাও প্রায়শই যথাযথ ল্যাব টেস্ট না করে অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপশনে লিখে দিচ্ছেন অবলীলায়। ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে রোগের প্রকৃত কারণ বের না করে অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপশন দিলে তাতে চিকিৎসায় ভুল হওয়ার অনেক বেশি আশঙ্কা থাকে। আর অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স সম্পূর্ণ না করা। গবেষণায় দেখা গেছে, অল্পমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিরোধী হয়ে উঠতে সহযোগিতা করে এবং পরবর্তীতে বেশি মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলেও তাতে প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকতে পারে। কাজেই অ্যান্টিবায়োটিকের সুপারিশকৃত ডোজ সম্পূর্ণ করা উচিত যাতে ব্যাকটেরিয়া সহজে প্রতিরোধী হয়ে উঠতে না পারে।

অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার ব্যতীত আরও যেসব দৈনন্দিন চর্চা অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার বিস্তৃতিতে সহায়ক তা হল, ল্যাব টেস্টিং এবং মনিটরিংয়ের অভাব। হাসপাতালে বা নিজের বাড়িতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব, রোগ সংক্ৰমণে যথাযথ নিয়ন্ত্রণ না থাকা, ঘন ঘন হাত না ধোয়ার অভ্যাস, হাত ধুতে সাবানের ব্যবহার না করা, ঠিকভাবে হাত ধুতে না জানা, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ বিষয়ে জনসচেতনতার অভাব ইত্যাদি।

যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বছরে দুই লক্ষাধিক, যার মধ্যে ২৩ হাজার লোকের মৃত্যু হয়। বিশ্বজুড়ে সাত লক্ষাধিক লোক মৃত্যুবরণ করে একই কারণে।

বিশেষজ্ঞদের হিসাবে এখনই সাবধান না হলে ২০৫০ সালের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার কারণে প্রতি বছর এক কোটির বেশি লোক মারা যাবে এবং ১০০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আর্থিক ক্ষতি হবে।

বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধ বিষয়ক সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। সীমিত গবেষণাপত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে যার মধ্যে বহু অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী সুপারবাগ রয়েছে। শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটির আইসিইউতেই শতকরা ২৫ ভাগ ব্যাকটেরিয়া হল সুপারবাগ, যা কিনা সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী। এসব তথ্য নিঃসন্দেহে প্রকৃত চিত্রের খুব সামান্য প্রকাশ, কিন্তু আতংকিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট।

অ্যান্টিবায়োটিকবিহীন জীবন কেমন হতে পারে একটু ভেবে দেখুন তো? অ্যান্টিবায়োটিকের অভাবে সামান্য কাটাছেঁড়া থেকে জন্ম নিতে পারে জীবননাশী ইনফেকশন। সন্তান প্রসবের সময় মা ও নবজাতক দুজনেরই ইনফেকশনের আশঙ্কা থাকে খুব বেশি, যা হতে পারে নবজাতকের মৃত্যু অথবা চিরস্থায়ী শারীরিক অক্ষমতার কারণ। আর সার্জারির কী হবে? সার্জারির জন্য অ্যান্টিবায়োটিক অপরিহার্য। কেননা কাটাছেঁড়া আর ক্ষতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে অনেক বেশি, যা কিনা রক্তে ছড়িয়ে রোগীর মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

অ্যান্টিবায়োটিকের অভাবে শুধুই সংক্রামক রোগ নয়, অন্যান্য অনেক রোগ যেমন ক্যানসার, আর্থ্রাইটিস এবং কিডনি রোগের চিকিৎসাও সম্ভব নয়। কেননা এসব ক্ষেত্রে রোগীকে এমন সব ওষুধ দিতে হয় যা আমাদের শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে ফেলে, যাতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যায়। মোদ্দা কথা, ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রমণ থেকে মৃত্যুঝুঁকির আতংক হবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী।


সুপারবাগের হুমকিতে আমাদের অর্থনৈতিক জীবনও নিরাপদ নয়। সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়াকে এখনই না থামানো গেলে বিশ্ব এক চরম অর্থনৈতিক মন্দার দিকে ধাবিত হবে যা ইতিহাসের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক মন্দাও ছাপিয়ে যাবে, প্রায় তিন কোটি মানুষকে ঠেলে দিবে চরম দারিদ্র্যে।

অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। তাই এর সমাধানও হতে হবে বৈশ্বিকভাবে। সত্যি বলতে কী, কোনো এক দেশ এককভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। কেননা উন্নত যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে সারা বিশ্বের মানুষ এখন একই সূত্রে বাঁধা। দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যতই নিশ্ছিদ্র হোক না কেন, সাদা চোখে অদৃশ্য, এসব ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সুপারবাগের প্রবেশ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। এর প্রমাণ হল, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যে পৃথিবীর খুব কম দেশই আছে যেখান থেকে কোনো না কোনো অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী সুপারবাগের রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। সুপারবাগ ও অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের বিরুদ্ধে এখনই তাই যুদ্ধ ঘোষণার সর্বশেষ সময়।

এ যুদ্ধ কোনো সুনির্দিষ্ট পেশাজীবীদের নয়। এ যুদ্ধে সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ, গণমাধ্যম, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যসেবাকর্মী, বিজ্ঞানী এবং ডায়াগনস্টিক ল্যাবসহ সবারই কিছু না কিছু করার আছে। আশার কথা হল, সম্প্রতি জাতিসংঘের ১৯৩টি দেশ অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে লড়তে একমত হয়েছে এবং একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর সাফল্যের মুখ দেখতে জাতীয় পর্যায়ে প্রয়োজন এর যথাযথ প্রয়োগের।

সুপারবাগ বনাম মানুষ– এ লড়াইয়ে মানুষ জিততে পারবে কি?

২০১৫ সালে ইউরোপিয়ান জার্নাল অব সায়েন্টিফিক রিসার্চের এক গবেষণার বরাত দিয়ে তাতে বলা হয়েছে, ওই জরিপে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি রোগীদের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করেছেন।

বিএসএমএমইউর মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ইমিউনোলজি বিভাগের প্রধান আহমেদ আবু সালেহ বলছেন, বাংলাদেশের সব আইসিইউতে মারা যাওয়া মোট রোগীর ৭০ শতাংশের মৃত্যুর পেছনে সুপারবাগের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। অথচ ১০ বছর আগেও পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ ছিল না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে ব্যবহার করার মতো কার্যকর কোনো অ্যান্টিবায়োটিক আমাদের হাতে নেই। বর্তমানে যেসব অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলো কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। এ কারণে পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। নজরদারি আরও জোরদার করতে হবে। যেখানে সেখানে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধ করতে হবে। কেবল নিবন্ধিত হাসপাতালগুলো থেকে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ীই অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।

২০১৬ সালে প্রকাশিত আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সুপারবাগ দিন দিন এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠছে, ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতিবছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে এটি! গত বছর ক্যানসার, ডায়াবেটিস ও ডায়রিয়ায় মারা যাওয়া রোগীর সম্মিলিত সংখ্যার চেয়েও বেশি এই সংখ্যা!

অন্যদিকে মানুষের রোগ নিরাময়ের জন্য যে অ্যান্টিবায়োটিক বানানো হয়েছিল, অতিরিক্ত লাভের আশায় সেগুলো এখন পশুপাখিদের দ্রুত বর্ধনশীল করার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এক গবেষণায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের অর্ধেকেরও বেশি পোলট্রি মুরগির শরীরে এসব অ্যান্টিবায়োটিক ঢোকানো হচ্ছে। এই পোলট্রি মুরগি খেয়ে ঝুঁকিতে পড়ছে সাধারণ মানুষও।

শুধু বাংলাদেশ বা দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, এই ভয়াবহতা থেকে মুক্ত নয় বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোও। ২০১৭ সালের এক গবেষণা জানাচ্ছে, কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামসহ আরও অনেক দেশ সুপারবাগের ঝুঁকিতে রয়েছে।


তথ্যসূত্র-
The Telegraph (UK)
bdnews24.com (Rubayet Hasan)
প্রথম আলো।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৩
৩০টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×