somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাওসার চৌধুরী
জন্মসূত্রে মানব গোত্রভূক্ত; এজন্য প্রতিনিয়ত 'মানুষ' হওয়ার প্রচেষ্টা। 'কাকতাড়ুয়ার ভাস্কর্য', 'বায়স্কোপ', 'পুতুলনাচ' এবং অনুবাদ গল্পের 'নেকলেস' বইয়ের কারিগর।

বিতর্কের বিতর্ক।

৩০ শে জুলাই, ২০১৯ ভোর ৬:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ভাইরালের ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ভাসনা অনেকের থাকে। মানুষ মাত্রই সফলতার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সফলতার দরজা সবার জন্য উম্মুক্ত হয় না। কেউ কেউ তো শুধুমাত্র নিজেকে জাহির করতে দুনিয়ার সব কঠিন গালিকে বুলেট বানিয়ে ইন্টারনেটে ছেড়ে দিচ্ছেন। এতে নিজের পাবলিসিটি হচ্ছে শতভাগ। নীল ছবিকে প্রকাশ্যে সুধীজনেরা ভৎসনা করলেও আমার আমিতে এসব না দেখলে অনেকেরই রাতে ঘুম হয় না। ঘুষ-দুর্নীতির চৌদ্দ গোষ্ঠীকে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে আওয়াজ করে গলা টিপে হত্যা করলেও নিজের আখের গুছাইতে ইহা অমৃতসম।

তবে এমন কিছু বিষয় মাঝেমাঝে ভাইরাল হয় যেখানে প্রচার হওয়া বিষয়টির সাথে ব্যক্তি নিজে জড়িত নয়, তৃতীয় পক্ষের কেউ একজন তা জনসম্মুখে নিয়ে আসেন। এসব সংবাদ ইতিবাচক হলে এর সত্যতার সম্ভাবনা থাকে প্রায় শতভাগ। এমনই একটি ভিডিও দেখে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে যাই। অনলাইনে প্রচারিত আড়াই মিনিটের ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় চারদিকে হৈচৈ পড়ে যায়। ফেইসবুকে ভিডিওটি কতবার যে দেখেছি তার কোন হিসাব নেই। রুগ্ন-শুকনো চেহারার খুব সাদাসিধে পোষাকের মেয়েটির বলিষ্ঠ উচ্চারণ, বাচনভঙ্গি, উপস্থাপনা আর আত্মবিশ্বাস আমাকে চমকে দিয়েছে।

পরে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে জানা গেল ১৯৯৪ সালের জাতীয় স্কুল টেলিভিশন বিতর্কের পুরষ্কার গ্রহণের দিনটিতে তিনি এই বক্তব্য দিয়েছিলেন। তখন রাজধানীর হলিক্রস স্কুলের ছাত্রী। রেবেকা শফি ছিলেন ১৯৯৪ সালের দেশসেরা বিতার্কীক।

১৯৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে বির্তক প্রতিযোগিতা শুরু হলেও বিতর্কের ইতিহাস খুব সমৃদ্ধ। মূলত সংসদীয় বিতর্কের বিকাশ থেকেই বিতর্কের ভাবনা শুরু হয়। বিতর্কের ইংরেজি প্রতিশব্দ হল 'Debate'। এই শব্দটিকে বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায়- 'বি' যার অর্থ হলো 'বিশেষ' এবং 'তর্ক' যার অর্থ 'বাদানুবাদ'। অর্থাৎ বিশেষ কোন বিষয়ের পক্ষে-বিপক্ষে বাদানুবাদ বা আলোচনাকে বিতর্ক বলে। যুক্তি, তত্ত্ব ও ভাবনার সমন্বয় হলো বিতর্ক।

গ্রিসের নগর রাষ্ট্রগুলো থেকেই বিতর্কের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় এবং বির্তকের জন্মভূমি হিসেবে গ্রিসের নাম সন্দেহের ঊর্ধ্বে। ২,০১০ বছর পূর্বে নগর রাষ্ট্র এথেন্সে রাষ্ট্রীয় নীতি ও কর্ম প্রক্রিয়া নির্ধারণে বিতর্কের লিখিত ইতিহাস পাওয়া যায়। তখন বিতর্ক এথেন্সকে মুখরিত করে রাখতো। কার্যকর গণতন্ত্রের চর্চা প্রাচীন গ্রীসের ঐতিহ্য ছিলো। তখন এথেন্সের নাগরিকদের যেমন অধিকারের সমতা ছিল তেমনই ছিল আলোচনা বা বিতর্কের বিধি। ইংরেজি ছবি ‘থ্রি হান্ডেড’ এর দৃশ্য নির্মাণে গ্রীসের ইতিহাসের পাঠকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অপরদিকে সমুদ্র ঘেরা গ্রীসের সমুদ্র জয় যেমন বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়েছে তেমনই যুদ্ধ জয়েও নতুন অভিজ্ঞতা ও কৌশল আয়ত্বে সহায়তা করেছে। উদাহরণ হিসেবে এথেন্সের সাথে প্রতিবেশী জনপদ স্পার্টার তুলনা করলে তা আরো স্পষ্ট হয়।

যুক্তি, তর্ক আর মুক্তবুদ্ধির চর্চার কল্যাণে এথেন্সবাসী অনেক বেশি বাস্তবিক ও যুক্তি নির্ভর ছিল। ভিন্ন মত এবং যুক্তিকে গুরুত্ব দেয়ার প্রবণতা অন্য যে কোন রাষ্ট্রের তুলনায় বেশি ছিল। ধীরে ধীরে গ্রীসের তৈরী হয় একদল তুখোর বিতার্কিক, যাদের যুক্তি-তর্ক-বাগ্মীতা দেখে মানুষ অবাক হয়ে যেত। সমাজে তারা নিজেদের স্বতন্ত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে পরিণত করতে সামর্থ্য হয়। এসব তার্কিকদের বলা হতো সোফিষ্ট। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৮৯ অব্দে প্রাচীন গ্রিসে সোফিস্ট নামক পেশাদার কূটতার্কিক সম্প্রদায় রাষ্ট্র পর্ষদের সদস্যদেরকে যুক্তিনির্ভর বক্তব্য লিখে দিতেন। এমনকি শিখিয়েও দিতেন যাতে আইন সভা, বিভিন্ন পরিষদে বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে নিজের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারেন এবং বাকি পর্ষদগণের সমর্থন অদায় করতে সক্ষম হন।

বার্ট্র্রান্ড রাসেল রচিত, 'History of Western Philosophy' বইতে সোফিস্টদের বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে সোফিষ্টদের ভূমিকার পরিপেক্ষিতে তাদেরকে বির্তাকিক বলা যাবে না বরং তাদেরকে কূটতার্কিক বলাই অধিক যৌক্তিক। তবে মানতে হবে তাদের উপস্থাপনা ও বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ার সাথে বির্তকের মিল যথেষ্ট। তারা রাজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের সংশয়কে বিতর্কের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করতেন। তবে অন্যান্য সম্প্রদায় বা গোষ্ঠি থেকে তাদের বিশেষত্ব হলো- এরা ধর্মীয় বিশ্বাস, ভাবাবেগ এবং নিজেদের স্বার্থকে বাদ দিয়ে বক্তব্যে যুক্তিকে প্রাধান্য দিত। তখন এথেন্সের শ্রেষ্ঠ বক্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন ড্যমোস্থেন'স যার বিবরণ পাওয়া যায় ফ্রান্সিস বেকন রচিত 'Of Boldness' প্রবন্ধে। অবাকের বিষয় বিখ্যাত এ বাগ্মী শৈশবে তোতলা ছিলেন।

গ্রীস কবি হোমার একবার ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন, 'হে ঈশ্বর তুমি দেবতা ও মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্বের অবসান করে দাও।' সংবাদটি জানার পর গ্রীসের বিখ্যাত দার্শনিক হেরাক্লিটাস যুক্তি দেখালেন, 'দ্বন্দ্ব ছাড়া গতি অসম্ভব, দ্বন্দ্বই বিকাশ; দ্বন্দ্বের অবসানে জগৎ ধ্বংস হয়ে যাবে।' তিনি হোমারকে প্রার্থনা বন্ধ করতে আহ্বান জানান। উইপোকার পা নিয়ে চলা বিতর্কের গল্পের কথা এ প্রসঙ্গে কেউ কেউ বলে থাকেন।

তৎকালীন সময়ে বিতর্ক এতই জনপ্রিয় ও নির্ভরতার প্রতীক ছিল যে, রাজনীতি বা রাজ্যের নীতি নির্ধারণের প্রায় সকল পর্যায়েই বিতর্ক অনুষ্ঠিত হত। দিনে দিনে বিতর্ক গ্রীসের প্রাচীর অতিক্রম করে প্রবেশ করলো প্রতিবেশী দেশগুলোতে। অনেকের মতে রাজনীতির পটভূমি নিয়ে গড়ে উঠা এই তর্ক থেকেই পরবর্তীতে সংসদীয় বিতর্কের জন্ম হয়, যার সূতিকাগার হলো যুক্তরাজ্য।

প্রকৃতপক্ষে সংসদীয় বিতর্কের প্রচলিত প্রথা বা মূল ধারাটি এসেছে ১৮৩২ সালের ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ‘হাউজ অব কমন্স’ বা নিম্নকক্ষের অধিবেশনে আয়োজিত বিষয়ভিত্তিক তর্কযুদ্ধকে অনুসরণ করে। ‘পার্লামেন্ট’ শব্দে আদি অর্থ ‘কথকতা’। ল্যাটিন ভাষ্য অনুযায়ী ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ভিক্ষুকরা তাদের খাবার গ্রহণের পরে মাঠে বসে যে আলাপ-চারিতা করতো তাই আদি অর্থে পার্লামেন্ট নামে পরিচিত ছিল।

ফ্রান্সের চতুর্দশ লুই এবং চতুর্থ পোপ ইনোসেন্টের মধ্যে ১২৪৫ সালে যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় তাও ‘পার্লামেন্ট’ নামেই পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের রাজা তৃতীয় হেনরি রাজ্যের বিখ্যাত জ্ঞানী ও পন্ডিতদের নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ ও সমস্যার আলোচনা ও পরামর্শ করার জন্য যে সম্মেলন ডাকতেন বা করতেন তাকেও বলা হত ‘হেনরি পার্লামেন্ট’। ইংলেন্ডের রাজা তৃতীয় হেনরিকে অনুসরণ করে প্রথম এডওয়ার্ড যে জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করেন তারও নাম দেয়া হয়-‘পার্লামেন্ট’। পরবর্তীতে ১২৯৫ সালে একে ‘মডেল পার্লামেন্ট’ নামে অবহিত করা হয়। এরপর রাজা টিউডর ও স্টুয়ার্টরাও এই প্রথা মেনে চলেন এবং এর ধারাবাহিকতায় ১৮৩২ সালে বৃটেনের বর্তমান পার্লামেন্টের শুরু হয় যা সংসদীয় গণতন্ত্র ও সংসদীয় বিতর্কের আইন নির্ধারণী স্তম্ভ হিসেবে আজো বিবেচিত।

আমাদের ভারত উপমহাদেশে বিতর্কের ইতিহাস বহু পুরোনো। তবে এসব বিতর্ক রাষ্ট্র কিংবা সম্রাজ্য গঠনে কতটুকু ভুমিকা রেখেছিল তার সঠিক তথ্য নেই। অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী বিখ্যাত বাঙালি অর্থনীতিবিদ ডক্টর অমর্ত্য সেন তাঁর 'The Argumentative Indian' বইয়ে লিখেছেন, খৃষ্টপূর্ব ২৬৮ অব্দে মাওরি সম্রাজ্যে রাজা অশোকার সময় থেকে উপমহাদেশে বিতর্কের সূচনা হয়।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা ছাত্র-সংগঠনের মধ্যে সংসদীয় বিতর্ককে জনপ্রিয় করার জন্য প্রথম এগিয়ে আসে অক্সফোর্ড ডিবেটিং ইউনিয়ন এবং পরবর্তীতে এর সাথে যোগ দেয় ক্যামব্রিজ ডিবেটিং ইউনিয়ন। অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ ডিবেটিং ইউনিয়নকে তাই সংসদীয় বিতর্ক অঙ্গনে কিংবদন্তি প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিবেচনা করা হয়। সপ্তদশ শতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে WHIG & CLIOSOPHIC নামক দুটি বির্তক সংগঠন গড়ে তোলে যা বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীনতম ডিবেটিং ক্লাব এবং এর সদর দপ্তর অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে। সংসদীয় বিতর্ককের এই ক্রমবিকাশের সাথে ক্রমান্বয়ে যোগ দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, আয়ারল্যান্ডসহ অন্যান্য ইংরেজি ভাষাভাষি দেশ। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশও তাদের সাথে যুক্ত হয়।

১৯৯১ সালে ঢাকায় দক্ষিণ এশিয়া আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সংসদীয় বিতর্কে প্রবেশ করে এবং জনপ্রিয়তা লাভ করে। বাংলাদেশের বিতর্ক আন্দোলনে ঢাকা ইউনির্ভাসিটি ডিবেটিং সোসাইটি (ডিইউডিএস) এর অবদান ও কৃতিত্ব অগ্রগন্য। বাংলাদেশে সংসদীয় বিতর্কের ইতিহাস ঘাটলে পাওয়া যায়, ১৯৫০ সালে স্যার সলিমুল্লাহ্ মুসলিম হলে তৎকালীন ছাত্র সংসদের উদ্যোগে নিয়মিত বিতর্কের আয়োজন করা হতো।

বাংলাদেশ টেলিভিশন বিতর্কের স্বর্ণযুগ ছিল সম্ভবত ১৯৯১-২০০০ সাল পর্যন্ত; তখন বিনোদনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম বিটিভির সুইচ অন করলেই বিভিন্ন বিতর্ক প্রতিযোগিতা প্রচারিত হতে দেখা যেত। অবাক হয়ে ভাবতাম, এত সুন্দর আর চমৎকার যুক্তিগুলো খুব সহজ আর সাবলীল ভাষায় এরা কিভাবে উপস্থাপন করে? আমার মত অনেকেরই এমন ভাবনা ছিল নিশ্চয়ই। বাংলাদেশের সেরা স্কুল, কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের তার্কিকদের এসব যুক্তি-তর্ক খুব ধারালো এবং শিক্ষনীয় ছিল। তাদের বিষয়ভিত্তিক যুক্তি-তর্ক আমাদের মনোজগৎকে নাড়া দিত। এসব যৌক্তিক তর্ক মুক্তচিন্তার বিকাশে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ইউরোপ-আমেরিকার বর্তমান সভ্যতার বিকাশ এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের উৎকর্ষের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে এসব বিতর্ক প্রতিযোগিতা।

বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রায় প্রতিদিন বিতর্ক প্রতিযোগিতা প্রচারিত হলেও বাংলাদেশ টেলিভিশন মুক্তচিন্তা আর নিরপেক্ষতার মানদন্ডে কখনো পরিচালিত ছিল না, এখনো নয়। জাতীয় সংসদেও গণতান্ত্রিক চর্চা নেই। বিরোধী দলের ন্যায়সঙ্গত যুক্তি উপস্থাপনকারীকে কথা বলতে কিংবা আলোচনায় অংশ নিতে নিবৃত করা হয়। যার ফলশ্রুতিতে আজ মহান জাতীয় সংসদে বিরোধী দল বলে কিছু নেই; চলে রাজার বন্ধনা আর চাটুকারীতার এক নির্লজ্জ মহড়া। এসব বিতার্কীকদের একজনও সম্ভবত আজ পার্লামেন্টে নেই। থাকলে তাদের যুক্তি-তর্কে দেশ উপকৃত হত। সংসদীয় গণতন্ত্র বিকশিত হওয়ার সুযোগ ঘটতো।

আবার, রেবেকা শফি প্রসঙ্গ। সেদিনের ভীতু সাধারন এই মেয়েটি এখন জিনতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করছেন হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির মেডিকেল স্কুলে। পাশাপাশি, রিসার্চ ফেলো হিসাবে কাজ করছেন ম্যাসাচুসেট ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি ও হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত বিশ্বখ্যাত ব্রড ইনস্টিটিউটে। তিনি বিখ্যাত ক্যালিফোরনিয়া ইনস্টিটিউট অব টেনোলজি থেকে স্নাতক। পদার্থবিজ্ঞানে সিজিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ৪.০০ পেয়ে স্বর্ণপদক লাভ করেন। পরবর্তীতে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ফিজিক্সে স্নাতকোত্তর এবং একই ইউনিভার্সিটি থেকে ব্ল্যাকহোল স্পিনের উপর পিএইচডি করেন।

এরকম শতশত তুখোড় যুক্তিবাদী বিতার্কীক, মেধাবী মুক্তচিন্তার বঙ্গসন্তান পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নিজেদের প্রতিভার সাক্ষর রাখছেন। ফলশ্রুতিতে উপকৃত হচ্ছে সেই দেশগুলো। আমরা কৌশলে অথবা না বুঝে প্রতি বছর জাতির সেরা সন্তানদের বিতাড়িত করছি। গলাবাজ, চাটুকার আর দুর্নীতিবাজদের হাতে দেশের আইন, আদালত আর সংসদকে বিকিয়ে দিচ্ছি। এরা মাতৃভূমির টানে দেশে ফিরলেও দেশমাতৃকার সেবায় অংশ নেওয়াটা তাদের জন্য খুব দুরূহ হয়।

একজন রেবেকা শফি কি এদেশে প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন?

এদেশে পার্লামেন্ট দাপিয়ে বেড়ায় দেখে দেখে রিডিং পড়তে না পারা মূর্খরা। এখানে চাটুকারীতা হলো শিল্প; গণতান্ত্রিক শিল্প। রেবেকা শফির আড়াই মিনিটের মূল্যবান বক্তব্যের অংশ ধরে বলতে চাই "ছেড়ে দিয়ে জিতে যেতে চাই"। হ্যা, উনারা দেশের অধিকার চুপিচুপি ছেড়ে দিয়ে জিতে গেছেন। নিজের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ আর ন্যায়বিচার পাওয়ার একটা নিরিবিলি ঠিকানা খোঁজে নিয়েছেন।


(রেবেকা শফির বিতর্ক- যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে)

ফটো ক্রেডিট,
গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০২০ ভোর ৪:০১
২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×