somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ ক্রিকেটঃ পরিবর্তন দরকার যেখানে.।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আসল কথা হলো, আমাদের এই বর্তমান ক্রিকেট স্ট্রাকচার থাকা পর্যন্ত আমরা আর তেমন কোন উন্নতি করতে পারবো না। ১ ম্যাচ জিতবো তো ২ ম্যাচ হারবো, একটু ভালো করলেও তার থেকে বেশী খারাপ করবো। এভাবে চললে আমরা এখানেই থাকবো ,বাট আমাদের পেছনে থাকা আফগান, আইরিশ এমনকি এশিয়ার নবাগত উঠতি শক্তি নেপালও আমাদের ছাড়িয়ে যেতে পারে। যেভাবে পূর্ণগঠন করা উচিত আমাদের ক্রিকেট কাঠামো-


১. রিজিওনাল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশঃ প্রত্যেক বিভাগে আলাদা করে ”আঞ্চলিক ক্রিকেট বোর্ড” থাকবে( সেই ১৮ তে হবে বলে শুনেছিলাম। এখনো হয়নি)। তাদের থাকবে নিজস্ব আন্তর্জাতিক মানের একাডেমী। সেখানে দেশের সেরা কোচদের দিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। সারাবছরই সেই সব আঞ্চলিক বোর্ডগুলো বিভিন্ন দল নিয়ে লংগার ভার্সন, ওডিআই ও টি২০ লিগ চালু করবে। এবং সেখানের সেরা ক্রিকেটারদের সেই একাডেমীতে নিবিড়ভাবে পরিচর্যা করা হবে। প্রত্যেক বিভাগের অ-১৩, ১৫, ১৭, ১৯ দলও থাকবে।

২. বিভিন্ন ধরণের পিচঃ ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রতিটি টুর্নামেন্টে সিমিং, স্পোর্টিং এবং স্পিনিং তিন ধরণের পিচই থাকতে হবে। আপনি যদি পেসারদের সুযোগ, সুবিধাই না দেন তাহলে যত টাকা দিয়ে নামী বিদেশী কোচাই আনেন না কেন তারা নতুন পেসার তৈরি করে দিতে পারবে না। যদি ডিপিএল, বিসিএল, এনসিএলের দলগুলোর দিকে তাকান দেখবেন তারা পেসারদের খেলাতেই চান না। ২/১ জন খেলালেও তারা পুরো কোঠা পূরণ করতে পারেন কালেভেদ্রে। কেন?? কারণ উইকেট। দলগুলো টাকা খবর করে দল গড়ে জিততে। স্পিনিং পিচে পেসাররা সাফল্যই পান না তেমন তাহলে তারা পেসার খেলিয়ে হারার ঝুঁকি কেন নিবে। এই যদি হয় অবস্থা তাহলে কোন আলাদীনের দৈত্য এসে আপনাকে দিয়ে যাবে একজন কামিন্স, একজন আর্চার বা বুমরা...?

৩. পেস ও স্পিন ফাউন্ডেশন বা একাডেমীঃ একটা সময় বাংলাদেশকে বলা তো স্পিনাদের খনির দেশ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাফল্য এনে দিয়েছে স্পিনাররাই। সেই রফিক, রাজ্জাক বা আজকের সাকিব, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করেছেন অসংখ্যবার। কিন্তু এখন? টেস্টে তাও তাইজুল-সাকিব দিয়ে দেশের মাটিতে কিছুটা চলে। বাট ওডিআই, টি২০তে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়া বা আগুনে স্পেল করার মতো কি কেউ আছে? আর পেসার..!!! তাদের কথা আর নাই বা বললাম। এজন্যই দরকার আলাদা একাডেমী। দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায়ের সকল পেসার ও স্পিনাররা নিবিড় প্রশিক্ষণ পাবে সেই সব একাডেমী থেকে।

৪. ‘এ’ দল, ইর্মাজিং, এইচপি দলকে খেলার মধ্যে রাখাঃ খেয়াল করলে দেখা যায় বিভিন্ন বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে আমাদের তরুণরা বিশ্বসেরা দলের কাতারে থাকে। আমাদের তরুণরা সেইসব টুর্নামেন্টে সেরাও হয়। কিন্তু যখনই তারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখে তাদের আর খুঁজেই পাওয়া যায় না। কিন্তু তাদেরই বিভিন্ন দেশের সহক্রিকেটারা তখন হয়ে যায় বিশ্বসেরা ক্রিকেটার। তারা পারলে আমরা কেন পারিনা..? কারণটা হলো আমরা বয়সভিত্তিক দলে ভালো কাউকে দেখলেই জাতীয় দলে নিয়ে তাদের বিশ্বের বাঘা বাঘা ক্রিকেটারদের সামনে ছেড়ে দেই। প্রত্যাশা মিটোতে না পারলে ছুঁড়ে ফেলে দিই। অথচ অন্যরা সেইসব তরুণ ট্যালেন্টদের ‘এ’ দল, এইচপিসহ বিভিন্ন দলে খেলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের উপযোগী করে তবেই ডেব্যু করানো হয়। ফলে তারা সফল আর আমরা ব্যর্থ।

৫. জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ঘরোয়া ক্রিকেট বাধ্যতামূলকঃ শেষ কবে সাকিব, তামিম, রিয়াদ বা মুশি এনসিএল বা বিসিএলে খেলেছে তা মেবি তারাও ভূলে গেছেন। তাদের মতো ক্রিকেটাররা যদি তরুণদের সাথে খেলে তাহলে তারাও অনেককিছু শিখতে পারবে। আর যতবড় ক্রিকেটারই হোক, আলাদা আলাদা ভার্সনে ভালো খেলতে, ভুল-ত্রুটি শোধরাতে প্রচুর ম্যাচ খেলা দরকার। কিন্তু অপ্রিয় সত্য কথা হলো আমাদের অনেক ক্রিকেটারই টেস্টই খেলতে চান না। লংগার ভার্সন তো অনেক দূরে...

৬. ঘরোয়া ক্রিকেটের টিভিতে সম্প্রচারঃ লংগার ভার্সন ম্যাচগুলোকে অনেকেই পিকনিক ক্রিকেট বলে থাকেন । এর যথেষ্ট কারণও আছে। বিশ্বের সব বোর্ডই যখন সম্প্রচার সত্ত্ব বিক্রি করে তখন ঘরোয়া ক্রিকেট দেখানো বাধ্যতামূলক করে চুক্তি করে। কিন্তু আমাদের বোর্ড কোনকালেই তা করতে চায়নি। নতুন মেয়াদের চুক্তিতে এটা এড করতে পারে বলে অনেকদিন আগে শুনেছিলাম। ঘরোয়া ক্রিকেট টিভিতে সম্প্রচার করলে অন্তত সেই পিকনিক ভাবটা থাকবে না।

বিসিবি নাকি বিশ্বের ৩য়/৪র্থ ধনী বোর্ড। তাই ঘরোয়া ক্রিকেটোর পুরো কাঠামো বদল করা খুব বেশী অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। নিজেদের টাকায় বিশ্বসেরা স্টেডিয়াম করতে পারলে, যেটা সবার আগে দরকার সেটা নয় কেন? এরজন্য দরকার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও সদিচ্ছা। সেটা বিসিবির হবে কি??
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৪০
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×