সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের এপিএস ফারুকের গাড়িতে গভীর রাতে ৭০ লক্ষ টাকা পাওয়া যায়, গত ৯ এপ্রিল। এরপর মিডিয়াতে শুরু হয় তোলপাড়। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতারাও এ ঘটনায় হন বিব্রত।

সাংবাদিকদের তোপের মুখে সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত পদত্যাগের কথা স্বীকার না করলেও পরে প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তাকে পদত্যাগ করানো হয়। কিন্তু পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দপ্তর বিহীন মন্ত্রীত্ব দেয়া হয়।

পরবর্তীতে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তারা এপিএস ফারুক, জিএম মৃধাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এক পর্যায়ে বলেন, 'ঐ টাকা রেলের নিয়োগ বাণিজ্যের নয়।'

সে সময় সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত কিছুদিন মিডিয়া ও রাজনীতি থেকে আড়ালে থাকেন। এরপর আলোচনার ঝড় ওঠে সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের ছেলের টেলিকম ব্যবসার টাকার উৎস নিয়ে। সে সময়ও মিডিয়ার চাপে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তারা সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

দুদক থেকে বলা হয়, 'সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের ছেলের টেলিকম ব্যবসার টাকা বৈধ।'

এভাবে চলে গেল ছয় মাস। হঠাৎ রেলের বহুল আলোচিত অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ওমর ফারুকের নিখোঁজ গাড়িচালক আজম খান বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভিকে এক চাঞ্চল্যকর সাক্ষাত্কার দেন। ড্রাইভার আজম সাক্ষাৎকারে সরাসরি সুরঞ্জিত সেন গুপ্তকে দায়ী করেন। ড্রাইভার বলেন, 'ঐ টাকা মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিল।'

আবারও আলোচনার তুঙ্গে চলে আসে '৭০ লক্ষ টাকার ঘটনা'। এবারও মিডিয়ার সাথে কথা বলতে রাজি নন সাবেক রেলমন্ত্রী ও বর্তমানে দপ্তরবিহীনমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। কিন্তু গতকাল তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার এক জনসভায় নিজেকে নিরপরাধ, নিষ্পাপ ও নিষ্কলঙ্ক দাবি করেন।

আরটিভি সাক্ষাৎকার নিলেও পলাতক ড্রাইভারকে বাংলাদেশের কোন গোয়েন্দা সংস্থাই খুঁজে পাইনি। সাক্ষাত্কার প্রচারিত হওয়ার পর তাকে আবারও খুঁজতে নতুন করে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা সংস্থা গুলো।

পলাতক ড্রাইভারের বক্তব্য সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, 'অর্থ কেলেঙ্কারির বিষয়ে গাড়ি চালকের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। টেলিভিশনে প্রচারিত ওই ব্যক্তির বক্তব্য সাক্ষ্য আইনের আওতায় পড়ে না।'

তবে এরই মধ্যে দুদকের তদন্তে রেলের পূর্বাঞ্চল প্রধান ইউসুফ আলি মৃধা ও ওমর ফারুকের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে দুদক। এতে সুরঞ্জিতের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।

'মিডিয়াতে অনেক খবরই আসে, সবই কি আদালতে গ্রহনযোগ্য? মুখের কথায় যদি সব হতো তাহলে ড্রাইভার, চাপরাশির কথায় দেশের সব চলত।'
দুদক চেয়ারম্যানের এ মন্তব্যের পর সাধারন মানুষের মনে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে দুদক কি আসলে সুরঞ্জিতকে রক্ষায় মাঠে নেমেছে ???

তথ্যসূত্রঃ View this link