এক জন্মের কাজ নয়, অনুবাদ করি মাকে
শেখ নজরুল
হাজার কবিতায়, লক্ষ শব্দে, অসংখ্য বাক্যে
ভালোবাসার অনুবাদ কী সম্ভব!
ধর্মগ্রন্থের তরজমা আছে, দিগন্তের সারমর্ম আছে
পথের অনুবাদ হয়; নদীকেও ব্যবচ্ছেদ করা যায়
আমাকেও অনায়াসে পড়া যাবে
কিন্তু মা, তার তো কোন অনুবাদ নেই।
মৌলিক বিশ্বাসের দীর্ঘ অবকাঠামো
যার দৈর্ঘ্য অজানা প্রস্থ অচেনা
যার আয়তন অলৌকিক, দৃষ্টি তীক্ষ্ম
ভাষা, ভালোবাসার চেয়েও স্থির
যার ছোঁয়া যাপিত জীবনের চেয়ে গহীন
তাকে নির্মাণ করেছে কোন কারিগর!
আমার জন্মে- শৈশব কী কৈশোর
আমার যৌবন- বেলা কী অবেলায়
সেই ছোঁয়া থেকে এই জীবনযাত্রা প্রলম্বিত।
তাঁকে মুখস্থ করতে দেখি
একটি অভেদ্য মহাকাব্য হয়ে
সযত্নে পড়ে আছে লেখার টেবিলে
তাঁকে ছুঁয়ে দেখি
বহু আগে বিনিময় হয়ে গেছে মধুর পরশ
তাঁকে নির্মাণ করতে দেখি- নির্মিত তাজমহল।
এক জন্মের কাজ নয়, মাকে অনুবাদ করে
অনায়াসে বলা যায় আমি তোমার সন্তান।
স্পর্শ
পাপড়ী২২
ওই ঠোঁটে মানায় না খরা, ফুটিফাটা ভূমিকম্প
কেন জ্বালো মষাল দুপুর,
সুশীতল হাওয়া এলে খোলে যদি গোলাপ পাপড়ির
মিছে আশায় কেন
তাকে প্রতিরোধ করো,
জ্যোতস্নার শুভ্রতাকে ভেঙে যে উঠেছে জেগে
কেন তাকে আগলে রাখ
হৃদয়ের গোপন অলিস্দে
ভালোবাসার মৌনতা ভেঙে যে উঠেছে ঘুম থেকে জাগি
সে কি শোনে মন্ত্র গান,
স্পর্শ রাখো সেইখানে যে তোমার প্রিয়।
লুটিয়ে পড়েছি জলের বুকে
নীরব পথিক
হলুদিয়া দিঘীর জলে আজ স্নান সেরেছি
জলের ভিতর তোমার গড়ন গায়ে মেখেছি
এ যে তোমারি স্নানের স্হান ছিল।
লুটিয়ে পড়েছি জলের বুকে
বাহুতে আলিঙ্গন করেছি তোমার জলছবি
ঝাপটা মেরে সরিয়েছি কচিমুখের কচুরিপানা
পদ্মকে চোখ রাঙ্গিয়ে পর করেছি হৃদয় সীমান্ত থেকে।
শাপলার মাল্যদিয়ে সাজিয়েছি তোমায় জলকন্যা রূপে
বধু বেশে আবিষ্ট করেছি তোমায় আমাতে
অতি সংকচে তোমার ললাটে বসিয়েছি কম্পিত ঠোঁটের বাষ্পায়িত ছাপ।
মাঝ দিঘীতে নেমেই তবে হুস পেয়েছি ফিরে
এতো তুমি নও, তুমি যে শুয়ে ঘুমাচ্ছ অন্ধকার বাগানের নীড়ে।
রূপ বন্দনা
আয়না
শরমের চাদরে ঢাকা কোমল বদন
চন্দ্রমুখ খচিত যেন মানিক্য রতন।
তৃষা কাতর মরুচারীর ধরিবে কে দুষ
মিটাতে পিপাষা যদি নাহি রয় হুস।
এমন রূপের কথা কি করব বয়ান
পরগনা নগণ্য বটে তুচ্ছ দেহপ্রাণ।
জগতের তামাম জেওর দেব রাঙা পায়
আখিঁ মেলে যদি বালা একবার চায়।
ঈদের দিনে তোমার সনে
কালপুরুষ
ঈদের বাঁকা চাঁদটা দেখে
মনে আমার নেইকো সুখ;
পাইনি ছুটি বাড়ী যাবার
হবেনা দেখা তোমার মুখ।
ঈদের দিনে তোমার সনে
কইবো কথা মুঠোফোনে,
ইটিশ পিটিশ প্রেমের আলাপ
সবই হবে সংগোপনে।
জর্দা-পায়েশ, কোর্মা-পোলাও
নিজের হাতে রাঁধবে যখন,
সুবাস পেয়ে রাত দুপুরে
ঘুমটা আমার ভাঙ্গবে তখন।
আমার দেয়া ঈদের শাড়ী
জানি তোমায় মানাবে ভারি,
তোমার দেয়া পাঞ্জাবীতে
সৌদি-আতর মাখবো তাতে।
তোমার মুখের মিষ্টি হাসি
দেখবো আমি মুঠোফোনে,
হাজার খুশীর পিদিম যেন
জ্বলবে মনে ঈদের দিনে।
সংসার কাফেলায় মরিমরি যাত্রি
মাসুম আহমদ
সংসার কাফেলায় আমি এক মরিমরি যাত্রি,
খড়কুটোর হয়ে কাটাই দিন,কচুরিপানা হয়ে রাত্রি ।
ভুলে যাই মূত্যু কিংবা মূত্যু পরবর্তি বেহেস্ত দোযখ
ইচ্ছে করে শোষন করি,হয়ে ভয়ংকর কোন শাসক ।
ইচ্ছেগুলি নিঃস্ব হয়ে ধীরেধীরে ঝরে পড়ে
বারেবারে আমার সাথে,আমার ইচ্ছেরাও মরে ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ২:৪১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




