somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তিনটি ছোট ছোট গল্প আর নতুন বছরে সবার জন্য শুভকামনা

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কল্পনা করুন। আপনি একটি পাহাড়ী পথ বেয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। হঠাৎ করে দেখলেন- ছোট একটা কুকুর রাস্তার পাশে । যখনি আপনি কুকুরটির পাশে গেলেন- কুকুরটি প্রচণ্ড জোরে চীৎকার করা শুরু করলো। আপনি রাগাণ্বিত হলেন। ভয় পেলেন।
কিন্তু এরপর পরই খেয়াল করলেন -কুকুরটির একটি পা ঝোঁপের ভিতর একটা ট্রাপের মাঝে আটকা পড়ে আছে। সাথে সাথেই আপনার ম্যুড রাগ থেকে কনসার্নে রুপ নিলো। আপনি অনুধাবন করতে পারলেন- কুকুরের এই সহিংসতার কারণ হলো- তার যন্ত্রণা । রাগ থেকে তার যন্ত্রণা, তার অসহায়ত্ব এবার আপনাকে স্পর্শ করলো। এটা আমাদের সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। প্রতিটি আর্তনাদ কোনো না কোনো ট্রাপ। উইসডমের চক্ষু দিয়ে যখন কোনো কিছুর গভীরে দেখা হয়- তখনই অন্তররূপের উপলব্ধি হয়।

আমেরিকার একজন বিখ্যাত স্পিরিচ্যুয়াল ব্যক্তি এবং শিক্ষাবিদ -যিনি গত সপ্তাহে মারা যান। নামটা ঠিক মনে আসছেনা। একটা খুবই সুন্দর গল্প বলেছিলেন। আর যেকোনো একটি গল্পের শিক্ষা সারাজীবন মানুষ মনে রাখে। গল্পটা এরকম-
মানুষ যখন বনে যায়। তখন বনে নানা রকমের গাছ দেখে। কোনটি বাঁকা, কোনটি সোজা। আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারেন- এর কারণ হলো- যথাযথ আলোর অভাব। ফলে, বিষয়টি আপনি খুব সহজেই মেনে নেন। কিন্তু যেই মাত্র আপনি বন থেকে মানুষের সমাজে আসেন। ঠিক তখনি- এই মেনে নেয়াটা আপনি হারিয়ে ফেলেন। আপনি জাজমেন্টাল হয়ে ওঠেন। এ বেঁটে কেন, এ খাটো কেন, এ মোটা কেন, এ পাতলা কেন ইত্যাদি ইত্যাদি। আর মানুষের যখন এরকম জাজমেন্টাল মন তৈরি হয় তখন আমি বলি- যথাযথ আলো না পাওয়া বৃক্ষদের দেখো। আর যে যেরকম আছে তাকে ঠিক সেরকমভাবে এ্যপ্রিশিয়েট করতে শিখো। -মানুষের মনন তৈরীর কি অপূর্ব শিক্ষা।

উপরের গল্পদুটো না পাওয়ার গল্প। এবার পাওয়ার পর একটি কৃতজ্ঞতার গল্প । আসলে গল্প না সত্য ঘটনা। ঘটনাটি একটি লেকচারে বলেছিলেন- রামকৃষ্ন মিশনের ভাইস চ্যান্সেলর Swami Atmapriyananda। উনাকে শ্রদ্ধা।

জুরিখে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন পৃথিবীর সেরা সেরা বিজ্ঞানীরা। তো, সন্ধ্যার এক বিশেষ সময় হঠাৎ করে দেখা যায়-অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তাঁর আসনে নেই। সবাই একটু উৎকন্ঠিত। উনি গেলেন কই? কিছুক্ষণ পর দেখা গেলো- হলঘরের এক কোণায় উনি একটা ছোট মাদুরের উপর একাগ্র চিত্তে দাঁড়িয়ে আছেন এবং কিছুক্ষণ পর মাথা দিয়ে ভূমি স্পর্শ করছেন। কিছু সময় পর ফিরে এলে- সবাই বললেন-
আপনি হঠাৎ করে চলে গেলেন? তারপর দেখলাম- এক কোনায় দাঁড়িয়ে কী যেন করছিলেন?
উনি বললেন- আমি নামাজ পড়ছিলাম। এটা আমাদের সান্ধ্যকালীন প্রার্থণা। এরজন্য সময় থাকে খুবই কম। জানেনতো দৈনন্দিন আমাদের পাঁচবার নামাজ পড়তে হয়।
এবার ওরা খুব আশ্চর্য্য হয়ে বললো- আপনি এতো বড় বিজ্ঞানী, পদার্থবিদ হয়ে এসব সুপারস্টিশানে বিশ্বাস করেন?
উনি বললেন- এটা সুপারস্টিশান না। এটা হলো কৃতজ্ঞতা । আমি যতবড় পদার্থবিদ কিংবা বিজ্ঞানী হইনা কেন? সবার আগেতো আমি একজন মানুষ।
আর এই মানুষকে যিনি এতোবড় বিজ্ঞানী বানালেন- দুনিয়াজোড়া খ্যাতি এনে দিলেন- আমি কি সেই রাব্বুল আলামীনের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবোনা। এটা কারো জন্য স্রেফ একটা সুপারস্টিশান আর কারো জন্য পরম প্রশান্তি। আর যা করলে আমার মনকে পরম শান্তিতে রাখে- সেই প্রার্থণা কি আমি করবোনা?
পদার্থ বিদ্যায় নোবেল পাওয়া পৃথিবী বিখ্যাত এই বিজ্ঞানী ছিলেন অধ্যাপক আব্দুস সালাম।
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আলোর পথে থাকুন। আর যিনি মানুষ বানিয়েছেন- সেই রাব্বুল আলামীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
যারা আলোর পথ দেখিয়েছেন তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা।

মন যেখানে গিয়ে থেমে যায়- সেটাই আমার দেশ।
ভালোয় থাকো, আলোয় থাকো প্রিয় বাংলাদেশ।

নতুন বছরে সবার জন্য রইলো শুভকামনা।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:২৫
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×