somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"... .. .আমি ডাকিতাছি, তুমি- ঘুমাইছো না কি "

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



হ্যাঁ- বিবেকের কথা বলছি। তাকে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সে আজ সত্যের মতো নিখোঁজ, ন্যায়ের মতো অদৃশ্য। কুয়াশার সকালগুলো দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা, রাত পেড়িয়ে ভোরের তীর ছুঁয়ে যায় বারবার। তবুও বিবেকের সোয়াচান পাখির ঘুম ভাঙ্গেনা। হেরেমের আদর- সোহাগ, বিলাসী আশ্রয়ে অঘোর ঘুমে আচ্ছন্ন সে। বধির সুশীল- হালুয়া রুটির কামড়া কামড়িতে ব্যস্ত। আর প্রশ্ন ফাঁসের প্রসবিত জিপিএ ফাইভ তারুণ্য- আঙুলের তলায় সপে দিয়েছে ভবিষ্যৎ- মায়াবী মোহের জালে...। এমনই এক বিরুদ্ধ সময়ে গণতন্ত্রের চোদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধারের আশায় ৩০শে ডিসেম্বরের ভোট নামক ভানুমতির খেল দেখলাম।

রাবিতে পড়ার সময় হলে -" তোমাকে অস্বীকার করা মানে, আমার জন্মকে অস্বীকার করা।" এমনই স্লোগান সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর বিশাল ছবিসহ পোস্টার এঁটেছিলাম- পড়ার টেবিলের সামনের দেয়ালে। একদিন সন্ধ্যার পর পাঁচ- সাত জনের শিবির ক্যাডার এসে আমাকেই নিজ হাতে সে পোস্টার ছিড়ে ফেলতে বলল। আমি কিছুতেই রাজী হচ্ছিলাম না। দরকার হলে আপনারা ছিঁড়েন, তবু আমি পারবো না। এক সময় তাদের একজন আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বলল, " ছিঁড়বি, নাকি তরে নিয়া- কিয়ামত কিয়ামত খেলবো?' বিশ্বাস করেন, আমি একটুও ভয় পাইনি। ৯৬-এ, আওয়ামীলীগ যখন ক্ষমতায় এলে, সে সময় বিএনপি থেকে নির্বাচিত এমপি আলাউদ্দিন আওয়ামিলিগে যোগ দিয়ে পানি সম্পদ প্রতি মন্ত্রি বনে গেলেন। রাজশাহীর ছাত্র সমাজ ঘোষণা দিলো তাকে রাজশাহীতে প্রতিহত করা হবে। সে দলে আমিও নিজেকে সমর্পণ করেছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যখন আলাউদ্দিনের গাড়ী পার হচ্ছিল, সে গাড়ির সামনে যে কয়েকজন ছাত্র বুক চিতিয়ে শুয়ে পড়েছিল- আমিও তাদের একজন ছিলাম। বিশ্বাস করেন, একটুকুও বুক কাঁপেনী সেদিন। ২০০১-এ বিএনপি ক্ষমতায় এসে অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে শুরুতেই নিজ দলের যে ক'জন প্রতিবাদির কণ্ঠ ক্রসফায়ারে তালিকাবদ্ধ করেছিল- সে দলে আমিও ছিলাম। বিশ্বাস করেন, সে খবর শুনে এতটুকুও ভয় পাই নি। নিজ স্ত্রী না ফেরার দেশে ফেরার প্রস্ততি পর্বে যেদিন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে লুসি যেদিন ছলছল চোখে দুই সন্তানকে আমার হাতে সপে দিয়ে বলছিল- ওদের দেখে রেখো ..। সেদিনও ভয় পাইনি। ৩০ শে ডিসেম্বর এবারের নির্বাচনে ভোট দিতে কেন্দ্রে গিয়ে দেখি এলাকারই কয়েকজন যুবক বসে আছে- বুথে। আমি ব্যালট হাতে গোপন কক্ষের দিকে এগতেই তারা আমার পথ আগলে দাঁড়ালো। তারা আমার হাতে থাকা ব্যালট পেপার চাইলে আমি না বলায় আমার উপর ঝাপিয়ে পড়লো। কিল- ঘুষি- লাথি ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ব্যালট ছিড়ে ফেলে বাড়ীর দিকে দে দৌড়। বাড়ী যেতেই অসময়ে এতিম হয়া আমার ক্লাস এইটে পড়ুয়া মেয়ে এগিয়ে এসে বলল- " বাবা, তোমাকে বারবার ভোট দিতে বারন করলাম- তবু এলে, এখন আবার ঝামেলা পাকিয়ে আমাদের কি তুমি বিপদে ফেলতে চাও ...? মেয়ের কথা শুনে আমিতো থ, এমন সময় প্রতিবেশি একজন এসে বললো- " লিটন ভাই, পুলিশ আসছে তোমাকে ধরতে- তাড়াতাড়ি পালাও....। কোন মতে জান নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে ঢাকা ফিরে এলাম। বুকে হাত দিয়ে বলছি- এই প্রথম জীবনে ভয় পেলাম।

কাকে বলবো এই বেদনা- দুঃখের কথা। আমাদের বন্ধকী বিবেক মরে ভুত হয়েছে। আমরা এখন বিবেক- প্রতিবন্ধি। তাই মজলুমের আর্ত চিৎকার, আহাজারি কান্নায় এখন আর সেই বিবেকের সোয়াচান পাখির অনির্দিষ্ট ঘুম ভাঙ্গেনা- ভাঙবে কি কখনও ...???


সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:২২
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×