somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কিরমানী লিটন
সময়ের ব্যবধানে বেজে বেজে চলে, সূর্য চাঁদ সবচেয়ে- দূরতম শব্দের মাস্তল, যেন কোন অজ্ঞাত নিবাস থেকে ছুটে আসি।পরিচিত শ্টেশন এলেই তুৃমি দেখাও নিশান- আমি উঠে পড়ি...

মাকে- খোলা ডাক....

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মা,
বিবর্তনের বাতাস পাল্টে দিয়েছে যাপিত জীবন। আমাদের আঙুলের তলায় এখন কাচুমাচু বসে থাকে তামাম দুনিয়া। একঘেয়েমি সমাজ- সংসারকে যতি দিয়ে ইচ্ছে হলেই, আমরা এখন মহাকাশ ঘুরতে যেতে পারি। প্রগতির এই বিরামহীন পথচলা- পারিপার্শিক পৃথিবীর আমুল পাল্টেছে। তোমাদের কেন্দুয়া কালিবাড়ী রেলস্টেশন থেকে সাতকুড়া তালুকদারবাড়ী পায়ে হাঁটা পথ ধরে পৌঁছাতে আগে যে সময় লাগতো- এখন সে সময়ে সরিষাবাড়ী থেকে নানাবাড়ী, দুই বার যাওয়া- আসা করা যায়। প্রমত্ত যমুনার বুক ভেদ করে চলছে- বিরামহীন যন্ত্রের ছুটাছুটি। ছুটে চলা সভ্যতার ছোয়া, নিত্য বেঁচে থাকায় সব পাল্টেছে। তুমিই শুধু পাল্টাও নি।

ভোরের স্নিগ্ধ শরীরজুড়ে লেগে থাকা তোমার ভেজা চুলের শুভ্র গন্ধ, মিহি কন্ঠের তিলাওয়াতে কুরআনের সুর। সারাদিনের ধকল পেড়িয়ে সন্ধ্যায় টিভির সামনে বসে অঘোর ঘুমে ঠোক্কর খাওয়া- সেই মায়াবী বদন। চোখের সামনে ভেসে উঠতেই, হালভাঙা নাবিকের মন, নিমিষেই - খেই হারায়। টান-পোড়নের ঘানি টানা সংসারের লাগামটা, বাবা তোমার হাতেই সপে দিয়েছিলেন। কপালের ভাঁজে তা বইবার বলিরেখা চিহ্ন, এখনও হুহু করে উঠে- বেদনার প্রতিটি বর্ণমালায়।


তুমি কেমন আছো মা? ওপারের জগত কি তোমায় নিঃশ্চিন্ত করেছে? অসীমের ওপাড়েও কি তোমার উৎকন্ঠ অপেক্ষারা, তাকিয়ে থাকো- ডানপিটে খোাকার ফেরার পথজুড়ে? মনে আছে মা, চুরি করা মাটির ব্যাংকের সবক'টা সিকি- আধুলী ঘরের পাশের কাদা মাটিতে কেন পুঁতে রেখেছি জানতে চাওয়ায় আমি বলেছিলাম, " পুঁতে রেখেছি এই কারনে, যাতে ওটা থেকে টাকার গাছ গজায়।সংসারের অভাব দূর হয়। আমার কথা শুনে, আমাকে জড়িয়ে সেকি কান্না... তোমার কান্না শুনে আপারাও হাউমাউ করে অনেক কেঁদে ছিল- অনেক্ষন। জানো মা, আমার সেই পয়স- আধুলীরা টাকার গাছ হয়ে আর মাটি ফুড়ে গজায় নি- আজও....


আজকাল খু উ ব ই- মিস করি তোমাকে। ফুসফুসের নিরুপায় নিঃশ্বাস, শরীর থেকে- যতবার বেরিয়ে এসে, আবার ঢুকে- ততবার তোমাকে খুঁজি। মুহূর্তের পরতে পরতে খেয়ালি দৃষ্টি বাসাবো- বৌদ্ধ মন্দির থেকে মিডওয়েতে কৃমলাপুর আরামবাগ মতিঝিল গুলিস্তান প্রেসক্লাব কলাবাগান হয়ে মোহাম্মদপুর হয়ে আবার ফিরে খিলগাঁও পুলিশফাড়ি। কোথাও পাই না তোমাকে। প্রেসক্লাবের তিন তলা জ্যামে আটকে পড়া অসহায় মুহুর্তগুলো হন্যে হয়ে খুঁজেছে তোমায়। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় বন্ধু তিতাসের মায়ের ভেজা কাপড়ে দেখে- চমকে উঠে ছিলাম। ম থেকে আকার দুরত্বে এসে ঠাহর করি- মা নয় আন্টি।

তুমি ভালো থেকো- মা। অসিমের ডানায় মেখম মেলা শুভ্রতা, ভুলিয়ে রাখুক তোমার নিগত জীবনের ক্লেদ। দিনের আলো, রাতের জোছনা- ভোরের কুয়াশা পৃথিবীর সমস্ত সম্ভাবনা- যা কিছু মঙ্গল, আমার কাছে তার সবই, তুমি- মা....। জীবনের বাকী পথটুকু যেন তোমাকে ধরেই পারি দিতে পারি।

টার্গেটের আষ্টেপৃষ্ঠে খসখসে বাস্তবতা যেন, তোমার প্রসবের দায় যেন ভুলিয়ে না দেয়। তোমার বুকের দুধের প্রতি ফোটা পুষ্টিকে যেন সুন্দরের পথে চলতে শেখায়, নির্মোহ- সাহসী করে আমায়। আশির্বাদ করো- সত্যকে সহজে নেয়ার শক্তি যেন না হারাই। ভালো থেকো মা, ঘুমিয়ে জেগে- আমার সমস্ত বেঁচে থাকায়....

তোমার
গুণমুগ্ধ সন্তান।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৫৭
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×