মিডিয়া এখন অনেক কিছু নিয়ে মেতে আছে। চট্টগ্রামের মেয়র নির্বাচন হবে তার রাজনৈতিক বিশ্লেষণ হচ্ছে হরদম; মূসা ইব্রাহিম প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেছেন তার সম্বর্ধনার খবর আসছে নিয়মিত; ভিনদেশে ফুটবল বিশ্বকাপ হবে তাতে সারা দেশ না হলেও মিডিয়াগুলো উত্তেজনায় কাঁপছে। এই ডামাডোলের মধ্যে আরেকটা খবর কালকে এসেছে বাসচাপায় এক বুয়েটিয়ান নিহত হবার খবর। নিহত হবার খবর যতটা না প্রচার পেয়েছে তার চেয়ে বেশি প্রচার পেয়েছে বাস ভাংচুর আর পুড়িয়ে দেবার খবর; ছবি, ভিডিও। সহপাঠীর মৃত্যুতে এরকম ভাংচুর আমরা দেখে অভ্যস্ত; তাই আসলে এটা কোনো খবরই নয়।।
খন্দকার খানজাহান সম্রাট নামে যে ছেলেটা মারা গেছে তার ছবি দেখলাম পত্রিকায়, ফেসবুকে। সরল একটা মুখ; বুয়েটে চান্স পাবার পর ছয়মাস অপেক্ষায় থেকে পাঁচদিন আগে ক্লাস শুরু করতে পেরেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। হলে উঠেছে দু'দিন হলো। এরপরই মৃত্যু। ব্যাপারটা মর্মস্পর্শী সন্দেহ নেই। এ কারণে বুয়েট কর্তৃপক্ষ এক দিনের শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছে; হয়তো দু'চারদিন বুয়েটের সামনে রাস্তা চলাচল বন্ধও রাখবে। এরপর সব স্বাভাবিক।
কিন্তু কেন? বুয়েটের সামনের রাস্তাটি দিয়ে বাস চলাচল কি চিরতরে বন্ধ করে দেয়া যায় না? বেপরোয়া লোকাল বাস ড্রাইভাররা সারা রাস্তা জ্যামে পড়ে থেকে এইখানটায় এসে সময় পুষিয়ে নেবার যে অপচেষ্টা করেন তা কি চিরতরে বন্ধ করে দেয়া যায় না? সেনানিবাস আর বিডিআর এর মতো বিশাল জায়গায় যদি পাব্লিক পরিবহন নিয়ন্ত্রিত থাকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কেন নয়? বুয়েটের শিক্ষার্থীরা হরহামেশাই পরীক্ষা পেছানো, ক্লাশ পেছানো আন্দোলন করে শুনতে পাই। এই ছেলেগুলো কি পারে না বুয়েটের সামনের রাস্তায় যান্ত্রিক পরিবহন বন্ধ করতে বুয়েট কর্তৃপক্ষকে আইনি লড়াইয়ে নামতে বাধ্য করতে? যদি বাস চলাচল বন্ধ করা সম্ভব হয় তবে আর যাই হোক কাউকে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে যন্ত্রদানবের পায়ের কাছে মাথা পেতে দিতে হবে না।
সম্রাটের ফেসবুক প্রোফাইলটা দেখে চোখ ভিজে উঠল।। প্রিয় উক্তিতে লিখে রেখেছে Life is short, So enjoy It. মানুষের জীবন এতো ছোটো কেন?