somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিলাদুন্নবী নিয়ে পবিত্র কোরআনের অপব্যাখ্যা......মুসলিমদের সোচ্চার হওয়া উচিত।

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বর্তমান মুসলিম সমাজ শিরক ও বিদআতে ভরপুর। এগুলো সমাজে এমনভাবে মিশে গেছে যে, কোন মুসলিমের জন্য সঠিক ইসলাম থেকে এসব শিরক ও বিদআত আলাদা করা এখন অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। ইসলাম নিয়ে এখন একেক আলেমের একেক মত। আর আমরাও সেইসব আলেমদের কথাগুলো অন্ধের মত বিশ্বাস করে নেই। অথচ একবারের জন্যও যাচাই-বাছাই করিনা যে কথাগুলো পবিত্র কোরআন ও হাদীসের আলোকে কিনা?? বর্তমানে এক শ্রেনীর আলেম দেখা যায় যারা ইসলামে নিত্য-নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করে সমাজের সহজ-সরল, মূর্খ মানুষদেরকে বিভ্রান্ত করে অর্থ আয় করছে। যেন বিনা পুজিতে এক বিশাল ব্যবসা এটি।

এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বিষয়টি হচ্ছে, নবী করীম (সাঃ) এর প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন করা।
আর এ বিষয়টিকে পূজি করেই পবিত্র রবিউল আঊয়াল মাসে চলে এক শ্রেনীর কথিত নবী (সাঃ) প্রেমীক আলেমদের (যারা ইসলামে নিত্য-নতুন পদ্ধতি আবিষ্কারক) জন্য টাকা আয়ের এক মহাউৎসব। আর একারনেই আমার মনে হয় তারা এ দিনটিকে প্রচার করে থাকেন, "সব ঈদের বড় ঈদ, ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ)।" (যদিও তারা এটা কখনও প্রকাশ করে না)।

যারা ঈদে মিলাদুন্নবী সেই ভাবে বিশ্বাস করে তাদের অনেকের নিকট জানতে চেয়েছিলাম যে, ১২ রবিউল আউয়াল যে ঈদে মিলাদুন্নবী বা অন্যান্য দুই ঈদের চেয়েও বড় ঈদ এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন ও হাদীসের কোন রেফারেন্স আছে কিনা? অথবা আমরা যেভাবে এদিনটিতে আনন্দ-উৎসব, মিছিল, খাওয়া-দাওয়া করে উৎযাপন করি এ ব্যপারেও কোন দলীল আছে কিনা? এবং বাংলাদেশের গতকালের বিভিন্ন পত্রিকাও দেখি কোন উত্তর পাওয়া যায় কিনা??

কারও নিকট কোরআন-হাদীসের আলোকে কোন উত্তর পাইনি। তবে অনেকেই উত্তর দিছেন দলীল না থাকলে বড় বড় অনেক আলেম কেন পালন করে যার কোন ভিত্তি নেই??
তবে হ্যাঁ গতকালের ইনকিলাব পত্রিকায়, "আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ)" শিরোণামে প্রকাশিত লেখায় এদিনটি পালনে আল্লাহর নির্দেশ বলে পবিত্র কোরআনের একটা আয়াত উল্লেখ করা হয়েছে যা পবিত্র কোরআনের অপব্যাখ্যা বলেই প্রমানিত।

তিনি আয়াতটি কোন আলেমের নিকট (যারা ঈদে মিলাদুন্নবীর সাথে একমত) থেকে নিয়ে লিখেছেন নাকি রিপোর্টারের নিজস্ব জ্ঞান থেকে লিখেছেন কিনা জানিনা। তবে রিপোর্টের শেষে ঈদে মিলাদুন্নবী আয়োজন কারী কিছু আলেমের উদ্ধৃতি দেয়ায় মনে হয় উল্লেখিত আয়াত ও ব্যাখ্যার সাথে সংশ্লিষ্ট আলেমরাও একমত। আলেমরা একথাও বলেছে যারা ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের বিরুধী তারা নবীর দুশমন।
আমি রিপোর্টিতে প্রকাশিত আয়াতের অংশটুকু উল্লেখ করছি, "আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, 'হে প্রিয় হাবিব (সা.) ! বলে দিন, এসব কিছু আল্লাহর ফজল এবং তার রহমতের পরিচায়ক। *(যা হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কে প্রেরণের মাধ্যমে তোমাদের উপর করা হয়েছে) সুতরাং মানুষের বিশেষ করে ঈমানদারদের উচিত রাসূল (সা.) এর আগমনে আনন্দ প্রকাশ করা। ইহা সে সকল হতে কত উত্তম, যা তারা সঞ্চয় করে বলেছে।' (সূরা ইউনুস - ৫৮)।
click

এখানে প্রথম বন্ধনীতে যে কথাটি (*) উল্লেখ করা আছে সেটি লেখক অথবা যে তাফসীর থেকে রিপোর্টার সংগ্রহ করেছেন সেই তাফসীর কারকের নিজস্ব মতামত। এবং উক্ত মতামতের কারনে আয়াতের শেষে "রাসূল (সা.) এর আগমনে" কথাটিও লাগানো হয়েছে যা পবিত্র কোরআনে উল্লেখ নেই।

আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে এবং যতটুকু কোরআন পড়েছি বা জেনেছি তা থেকে বলতে পারি মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের কোন আয়াতের কোন শব্দে অস্পস্টতা রাখেননি। তবে হ্যাঁ কোন আয়াতে কিছু বিষয় উজ্জ থাকলে তা আগের আয়াত বা পরের আয়াতে পরিষ্কার করে দিয়েছেন।

'হে প্রিয় হাবিব (সা.) ! বলে দিন, এসব কিছু আল্লাহর ফজল এবং তার রহমতের পরিচায়ক।' এখানে এসব কিছু বলতে আল্লাহ কি বুঝিয়েছেন তা পুর্বের ৫৭ নম্বর আয়াতেই আল্লাহ পরিষ্কার করে দিয়েছেন। এখানে নিজস্ব মতামত প্রয়োগের কোন প্রশ্নই আসে না।

সুরা ইউনুসে ৫৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, "হে লোকেরা! তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে নসীহত এসে গেছে। এটি এমন জিনিস যা অন্তরের রোগের নিরাময় এবং যে তা গ্রহন করে নেয় তার জন্য পথনির্দেশনা ও রহমত।"

এবং তার পরেই ৫৮ নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন, "তুমি বলে দাও - আল্লাহর এই দান ও রহমতের প্রতি সকলেরই আনন্দ হওয়া উচিত; তা এটা (পার্থিব সম্পদ) হতে বহুগুনে উত্তম যা তারা সঞ্চয় করছে।" (তাফসীরে ইবনে কাসীর)

আর উক্ত তাফসীরে 'আল্লাহর এই দান' বা পত্রিকায় উল্লেখিত 'এসব কিছু' বলতে একমাত্র পবিত্র আল কোরআন শরীফকেই বুঝানো হয়েছে। এছাড়া পবিত্র কোরআনে অসংখ্য জায়গায় পবিত্র কোরআন শরীফকে মুমিনদের জন্য হেদায়াত বা নসিহত অথবা পথনির্দেশক ও রহমতও বলা হয়েছে।

সর্বশেষ আমি সমস্ত ইসলাম ধর্মের অনুসারীগনকে বলতে চাই পবিত্র কোরআনের কিছু অংশ পড়ে বা কোন সূরার দু/একটি আয়াত অথবা আয়াতের কিছু অংশ পড়ে পুরো কোরআনকে বা ইসলামকে বুঝার চেষ্টা করবেন না। পবিত্র কোরআন পড়ে নিজে নিজে কোন অর্থ ধরে নেয়ার বা নিজের সুবিধার্থে নিজস্ব কোন মতামত প্রকাশ করারও কোন সুযোগ নাই। তাই সাবধান পবিত্র কোরআন অথবা হাদীস থেকে নিজে যাচাই-বাছাই না করে বিশ্বাস করবেন না।
এখন ঈদে মিলাদুন্নবী সুন্নাত না বিদআত এ বিষয়ে পরবর্তীতে লিখব ইনশাহ্ আল্লাহ। দোয়া করবেন আল্লাহ যে সহায় হন। আমীন।।


সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৯
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×