somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শাহীন তাজ
আমি পরিবর্তনকামী, আগে নিজের থেকে তারপর ব্যক্তি থেকে গোষ্ঠী, গোষ্ঠী থেকে জনপদ, জনপদ থেকে দেশ... উফ! আর ভাবতে চাই না। তবে পরিবর্তন হোক বৈশ্বিক। আমাদের বোধ-বুদ্ধি, মানসিকতা, ধ্যান-ধারণা, নীতি-নৈতিকতা, শিক্ষা, আচার-আচরণ, ভাবনা-চিন্তার আমূল পরিবর্তন চাই। আমরা

ক্রিকেট জুয়ায় আইসিসি ও বিগ থ্রি (কিস্তি ০৩)

২৭ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের দুই কিস্তিতে আমি কিছু বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলাম আইসিসির বর্তমান নীতি ও ঘৃণ্য পক্ষপাতিত্ব নিয়ে। বিশ্ব ক্রিকেট বর্তমানে যে কয়টি বিষয় নিয়ে তোলপাড় তাঁর মধ্যে নিঃসন্দেহে অন্যতম তাসকিন আহমেদের নিষিদ্ধকরণ এবং আইসিসির ভুল নীতি নিয়ে। সবাই এক বাক্যে তাসকিন আহমেদের নিষিদ্ধকরণ প্রশ্নে দোষী সাব্যস্ত করছে আইসিসিকে। সেটা নিশ্চয় তাসকিনের প্রতি সহানুভূতি থেকে নয়, আসলেই ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতিতে অবৈধভাবে তাসকিন আহমেদকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

কোন বোলারকে নিষিদ্ধ করতে চাইলে অবৈধ বোলিংয়ের দায়ে তাহলে প্রথমে যে কাজটি করতে হয় তা হলো, কোন নির্দিষ্ট ম্যাচের নির্দিষ্ট কিছু বলের এ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে রিপোর্ট করতে হবে। রিপোর্টে নির্দিষ্ট করে ঐ ম্যাচের সন্দেহজনক এ্যাকশনের উল্লেখ করে দিতে হবে। পরীক্ষাগারে শুধুমাত্র ঐ এ্যাকশনগুলোর উপরেই পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে ঐ এ্যাকশনগুলো যদি উৎরাতে না পারে তবে ঐ বলগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা আসবে। এমনটাই আমরা জেনে আসছি। কিন্তু কি হলো তাসকিনের ক্ষেত্রে............?

তাসকিন আহমেদের বাউন্সারগুলোতে নাকি সমস্যা, ১৫ ডিগ্রির বেশি বেকে যায় কনুই। সেজন্য তাকে বিশ্বকাপ হতেই প্রত্যাহার করে নিতে হলো। কেন জনাব? কোন ভিত্তিতে এটা হয়েছে? কেন এমনটা হয়েছে? এসব অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে যে বিষয়টি দাঁড়ায় তা হলো, পুরো প্রক্রিয়াটিই প্রশ্ন বিদ্ধ এবং সাঁজানো। যুক্তির বাইরে, নীতির বাইরে, বিবেকের বাইরে গিয়ে তাসকিনকে নিষিদ্ধ করা হলো। সহজ সূত্র বলে দিচ্ছি যারা এখনো গো-মূর্খ হয়ে শুধুমাত্র আমাদের যৌক্তিক সন্দেহকে ষড়যন্ত্রতত্ত্ব নাম দিয়ে নাক কুঁচকাচ্ছেন তাদেরকে। জেনে রাখা ভালো কয়েকটা সূত্র।

সূত্র ০১। তাসকিনকে যে ম্যাচের বোলিং এ্যাকশনের জন্য সন্দেহ করা হয়েছে সে ম্যাচে তাকে যে বলটির জন্য সন্দেহ করা হয়েছে তা নিশ্চিতভাবে আম্পায়াররা ঠিক করে উঠতে পারেননি। কারণ আসলেই কোন সমস্যা ছিল না তাসকিনের। যার ফলে উপরের নির্দেশে করতে বাধ্য আম্পায়াররা নির্দিষ্ট করে কোন ত্রুটি পাননি বলেই নির্দিষ্ট করতে পারেননি তাসকিনের কোন বলে সমস্যা। পরের সূত্রে উল্লেখ করছি তা।

সূত্র ০২। তাসকিনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তার বাউন্সারে নাকি সমস্যা। বাস্তবে যে ম্যাচের উপর ভিত্তি করে তাকে পরীক্ষা দিতে পাঠানো হলো সেই ম্যাচে আদতে তাসকিন কোন বাউন্সারই ছোড়েননি। যেখানে বাউন্সারই করেননি ঐ ম্যাচে সেখানে কেমন করে আম্পায়াররা তার বাউন্সারে সমস্যা পেলেন? উনারা কি অলীক স্বপ্নে তাসকিনকে বাউন্সার ছুঁড়তে দেখেছেন? হা হা হা, তা পারেনও বটে। কারণ উনাদের পিছনে আই ছি ছি বাপ আছে না।

সূত্র ০৩। কোন ম্যাচের বোলিংকে কেন্দ্র করেই যেহেতু বোলিং এ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হয় সেহেতু ঐ ম্যাচের কৃত বল নিয়েই এ্যাকশন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যেমনটা হয় আমাদের এসএসসি পরীক্ষা হয় নবম-দশম শ্রেণীর সিলেবাসে, ইন্টারমেডিয়েট পরীক্ষা হয় ইন্টারমেডিয়েটের সিলেবাসে। বোলিং এ্যাকশন পরীক্ষাও সন্দেহজনক ম্যাচের ডেলিভারিগুলো নিয়েই হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে ভারত মানে নয়া আইসিসির ল্যাবে কি করে ঐ ম্যাচের বাহিরের ডেলিভারি নিয়ে পরীক্ষা দিতে হলো? মানে সিলেবাসের বাইরের প্রশ্ন কেন, কোন যুক্তিতে, কার ঈশারায় সন্নিবেশ করা হলো? এখানে কোন বাপের ইঙ্গিত ছিল? কে এই অন্য সিলেবাসের পরিবর্তন করলো কোন ক্ষমতাবলে? বাহ! আই ছিছি।

সূত্র ০৪। তাসকিনের বোলিং এ্যাকশনের বাউন্সারে সমস্যা নাকি। ঠিক আছে ভাই বুঝলাম। প্রশ্ন হইলো একজন বোলার ওভারে কয়টা বাউন্সার দেয়। আর সেগুলো করতে কত মিনিট সময় নেয়। অথবা পুরো একজন পেস বোলারের ওভার মানে ৬ বল সম্পন্ন করতে কতক্ষণ সময় লাগে? ঘন্টায় যদি ১৩ ওভার করা যায় সেক্ষেত্রে প্রায় ৫ মিনিট সময় লাগে ৬ বলের জন্য। প্রতি ডেলিভারিতে প্রায় ১ মিনিট। একেকটা বলের জন্য যে পরিমাণ বিশ্রাম দরকার মাসলগুলোর জন্য তার জন্য পর্যাপ্ত। কিন্তু তাসকিনের পরীক্ষায় কি হলো?

শালারা নাকি ২ মিনিটে ৮টা বাউন্সার ছুঁড়াইছে। প্রতি ১৫ সেকেন্ডে ১ বল, প্রতি ১৫ সেকেন্ড বিশ্রাম দিছে তাসকিনের একটা গোলা ছুড়তে? কেমনে সম্ভব এইটা? ১ মিনিটের জায়গায় মাত্র ১৫ সেকেন্ড! তাসকিন তো একটা মানুষ, সেতো দানব না রোবটও না। ১৪০ এর উপরে গতিতে বল ছুঁড়তে যে পরিমাণ বিশ্রাম দরকার তার মাসল গুলোর সেই সময় কই গেল? এত অল্প সময়ে এত বেশি পরিশ্রম কেমনে সইবো রক্ত মাংশের গড়া দেহ? ৮ বলের তিনটাতে নাকি সমস্যা। এত কম সময়ে এতবেশি বল করাইলে যে কারো এর চেয়ে বেশি সমস্যা হওয়ারই কথা। তাও আবার নানান যন্ত্ররঙ্গ লাগাইয়া, মানসিক টেনশন নিয়া , প্রতিকূল বৈরী পরিবেশে শত্রুর খাঁচায় পরীক্ষা।

আমার কথা হইলো এত অল্প সময়ে স্টক বলগুলো এত বেশি পরিমাণে করাইলে, পেশীরে মাত্রাতিরিক্ত লোড দিলে এইটা হইতেই পারে, এতে সমস্যার সৃষ্টি হতেই পারে। সেক্ষেত্রে নিয়মই দায়ী নয় কি? কেউ যদি খাইতেই না চায় পেট ভরা থাকলে তাহলে তারে মিষ্টি দেন আর পোলাও দেন, সে কিন্তু বমি করে দিবে। তাসকিনের ক্ষেত্রেও তাই হয়ছে। এবং এইটা যে নয়া আইছিছি বাপের ঈশারা তা আর বলতে!

সূত্র ৫। এরা মানে তাসকিন আরাফাতরা আগেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন টুর্নামেন্টে এই আম্পায়ার, এই আইছিছির অধীনেই নানা সময় খেলে আসছে একই এ্যাকশন নিয়ে তখন তো কোন প্রশ্ন উঠে নাই, এখন কেন উঠছে? কারন কি এটাই এখন তাসকিন আরাফাতরা ফর্মের তুঙ্গে, রেন্ডিয়া অস্ট্রেলিয়ার পথের বাঁধা তাই? ছিঃ আইছিছি, ছিঃ। দালালীর একটা সীমা থাকা দরকার।

নানান ঘটনা পুঞ্জি আর সূত্র মিলালে আসলেই পরিষ্কার হয়ে যায় বিষয়টা আসলে কি। আমরা যখন ফর্মের তুঙ্গে, দেশে বিদেশে আমাদের দল যখন নানান প্রশংসায় প্রশংসিত, একে একে সব দলের বিরুদ্ধে আমাদের জয়গুলো আসতে শুরু করেছে নিয়মিত, সব দলগুলোর বিপক্ষে আমরা হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছি তখন আমাদেরকে রেইস থেকে ছিটকে ফেলে দেওয়ারই পায়তারা চলছে। কথায় আছে, রেসের বাঁজিতে যদি জিততে চাও তবে ঘোড়ার মালিক নয় বরং ঘোড়াকেই রেইস থেকে ছিটকে দাও। আমাদের রেসের ঘোড়া আমাদের দক্ষ, মেধাবী, পরিশ্রমী খেলোয়াড়েরা। এক্ষেত্রে এদেরকে একে একে রেস থেকে ছিটকে দিতেই এই ষড়যন্ত্র খেলা চলছে, মালিক বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আপনা আপনি রেস থেকে ছিটকে যায়।

তাই বলা যায়, এসব কিছু আমাদেরকে- আমাদের ক্রিকেট যাত্রাকে ভঙ্গ করতেই। ক্রিকেটে আমাদের যে ঈর্শনীয় অর্জন, তাকে ধূলিসাৎ করতেই ধজভঙ্গ আইছিছির অধীনে ইন্ডিয়াসহ বিগ থ্রির ষড়যন্ত্র চলছে গোপনে। আপনি যতই ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসী না হোন, যতই ইন্ডিয়ার প্রভুভক্ত কুত্তা হোন না কেন, তারা কিন্তু কখনোই আমাদের ছেড়ে কথা বলেনি- বলবেও না। সেই নমুনাই এখন দেখতে পাচ্ছি চোখের সামনে।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×