
আমার জন্মদিন আমার মা বাবা তাদের স্বীকারত্ত্বি মতে জীবনে একবারই পালন করেছেন। তখন আমার বয়স মাত্র ৪। নানা বাড়ি দাদা বাড়ির অনেকেই ঐদিন এসেছিল। আমার কিছু মনে নেই। সবই শোনা কথা। তার সাথে প্রমান স্বরুপ একটা সাদাকালো গ্রুপ ছবি।
প্রত্যেকেই কোন না কোন গিফ্ট এনেছিল। বেশির ভাগ ছিল খেলনা বা সংসারে কাজে লাগে এমন কিছু। বড় হয়ে ওঠা পর্যন্ত সেসবই ছিল আমার খেলনা সমগ্র।
অন্যদিকে আমার বাবা মা ছোট বোনটার বার্থডে ৩-৪ বার আয়োজন করেছিল ক্লাস টেনের আগেই। ৪ বছর বয়সে আমার প্রথম বার্থডের পর ২য় বারের মত বার্থডে আয়োজন করল ভার্সিটির বন্ধুরা। ঐ একবারই। তারপর অনেক বছর কেটে গেল। বিয়ের ৩য় বছরে সহধর্মীনি বার্থডে আয়োজন করল সেই দিন যেটা কিনা আমার সার্টিফিকেট বার্থডে। যাই হোক, মনটা ভরে গেল। হাজার হলেও নিজে থেকে সে কিছু একটা করার চেষ্টা করেছে।
পরবর্তীতে জানিয়ে দিলাম, আমার আসল বার্থডে। তখন থেকে কয়েক বছর অফিস থেকে ফেরার পথে অনেক অনেক ফোন তার, যেন বার্থডে কেক আনতে মিস না করি। একটা সময়, সে নিজেই কেক বানাতে শুরু করল বাসায়। প্রথম প্রথম ভাল হত না, অখাদ্য গুলো হাসিমুখে গিলতে হত। আর এখন মোবাইলে ম্যাসেজ, সাথে বাইরে ঘোরাঘুরি, একটু রেস্ট্যুরেন্ট এ খাওয়া দাওয়া। বার্থডে শেষ।
বন্ধু বান্ধবের মধ্যে মিলু আর মালু (ছ্দ্ম নাম) মোবাইল ক্যালেন্ডার নোটিফিকেশন ধরে আমাকে ম্যাসেজ দেয় আজও। কয়েক বছর হল আমার বিবাহিত ছোট বোনটাও বার্থডে ম্যাসেজ বা কল দেয়।
সবারই একটা সিক্রেট ওয়ার্ল্ড থাকে। আমারও আছে। আমার সে ওয়ার্ল্ডে একজনই আছে। বু্দ্ধি বয়স থেকে। আরও স্পষ্ট করে বললে ক্লাস নাইন থেকে। ওর নাম মায়াবী। সে আজও পর্যন্ত আমাকে বার্থডে উইশ করেই যাচ্ছে। আমি জানি, আমি এ দুনিয়ায় না থাকলেও সে যদি থাকে, আমাকে বার্থডে উইশ করেই যাবে।
আগে অনেক অনেক গিফ্ট পাঠাত। যখন আমার সংসার হল, গিফট পাঠানো বন্ধ হল। আমার বার্থডে তে সে শাড়ি পরে বা আমার দেয়া কোন ড্রেস পরে আমাকে সুযোগ মত ছবি পাঠিয়ে দেয়। একা একা রিক্সায় ঘোরে। কখনও মন খারাপ হলে, বান্ধবীদের সাথে আড্ডায় বসে। আরও বেশি খারাপ হলে, মাথা আওলে গেলে, নাওয়া খাওয়া সব ছেড়ে চুপচাপ বাসায় কাটিয়ে দেয়। অপেক্ষায় থাকে আমার একটা ফোন কলের।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৯:৫৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




