তখন আমরা একই কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে সাইন্স ফ্যাকালটিতে ভর্তি হই। ততদিনে ফুফুর বিশ্বাস যোগ্যতা অর্জন করেছি। মায়াবীকে আমার ওপরই ছেড়ে দিয়েছে বলা যায়। ওর প্রাইভেট টিচারের ব্যাচ ঠিক করে দেয়া, সব নোট কালেক্ট করে ফটোকপি রেডি করে বাসায় পৌছে দেয়া, আসা যাওয়ার পথে রিক্সা না পেলে ম্যানেজ করা ইত্যাদি ইত্যাদি...

সপ্তাহে ৬দিন আমাদের সকালে বিকালে ব্যাচে পড়া। এর ভেতরে ৩ দিন কমন ব্যাচ। ঐ ৩দিন আমি সাইকেল নিয়ে যেতাম মায়াবীর বাসায়। দরজায় ৩টা টোকা মারতেই সে বুকের সামনে কয়েকটা খাতা রেখে বেরিয়ে আসতো। আধা কিমি গলি পেরিয়ে মেইন রোড পর্যন্ত আমি পাশাপাশি হাটতাম। তেমন কোন কথা হতো না। কিন্তু অনেক কথা মনে মনে বলতাম। অনেকটা নাটকে যেমন দেখা যায়, লাভাররা ভার্সিটির রাস্তা ধরে হাটছে আর প্রেমালাপ করছে। আমার ফিলিংসা সেরকমই ছিল। কিন্তু ওর তখনও আমাকে নিয়ে সে ভাবনা ছিল না।
আমি রিক্সা ধরে দিতাম। আসি বলে মাথাটা একটু কাত করে ঝাকাতো। আমি পেছনে পেছনে যেতাম। কখনও ভিরে হারিয়ে ফেলতাম রিক্সাটা। ফুফু আমাকে ওর রিক্সায় যেতে বলেছিল। কিন্তু লজ্জায় আমি রাজি হইনি একদিনের জন্যেও।
কলেজে গিয়ে আমি আমার বন্ধুদের সাথে, ও ওর বান্ধবীদের সাথে ঘুরত। এমন ভাব করতাম যে কেউ কাউকে চিনি না। মায়াবি ভীষণ সুন্দরী ছিল। শত শত মেয়েদের ভেতর হাটলেও ওকে আলাদা করে চোখে পড়ত।
এতো কিছুর আড়ালেও ওর যে আলাদা একটা রঙিন জগৎ আছে, আমি জানতাম না। সে জগতে অন্য আর একজনের জায়গা। আমার ব্যাচ চেন্জ করে অন্য ব্যাচে শিফট করে। ম্যাথ টিচার চেন্জ করে। তখন বুঝিনি। যার ফলাফল ২৪ জুন ২০০১ সালে পেলাম। সে বাসা থেকে পালিয়ে গেল। আমি সে খবর শুনলাম পরের দিন। অনেক জবাব দিহিতার ভেতরে পড়তে হল। যার কোন উত্তর আমার জানা ছিল না। এক দিকে হৃদয় মোচড়ানোর ব্যথা। আর অন্যদিকে পালিয়ে যাবার সহযোগিতা করার ব্লেম।
কপালকুন্ড বলে কথা...
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:০৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




