মায়াবীর মন খারাপ গতকাল থেকেই। সকালেও ভালভাবে কথা বলিনি। শেষে দুপুরে আমি বললাম, বিকেলে লম্বা ম্যাসেজ দিব। পড়লেই তোমার মন ভাল হবে । অবশ্য আমার কাছে কোন ম্যাজিক নেই। নেই কোন চিন্তাভাবনা। আমি ঠিক জানি না, কি করে ওর মন ভাল করবো বা কি লিখে পাঠাবো।
শেষমেষ এটাই লিখলাম। যা লিখেছি সবটাই সত্যি:::
আজ ভোর রাতে অদ্ভূত এক স্ব্প্ন দেখলাম। দেখলাম নতুন এক অফিসে আমি গেছি, সাথে তুমি। অফিস পার্টির মত কোন একটা ফাংশান হচ্ছে। গিয়ে দেখি আগের অফিসের ম্যানেজার, দু একজন চেনা কলিগ। এক কোণে দেখলাম হইচই। এগিয়ে দেখি আগের অফিসের মহিলা সেক্রেটারী সেই আগের ম্যানেজার কে ঝারতেছে। পরে রেগে মেগে বেরিয়ে গেল। তুমি আমি অন্যপাশে গেলাম। গিয়ে দেখি অনেক অনেক কার্ডের গ্যালারী। তুমি একটা চয়েজ করলে আমি দেখতে নিলাম। সেটার ভেতরে তুমি কখন না জানি একটা সুন্দর কথা লিখছো। পড়ার পর তোমাকে খুঁজতেছি, দেখি নাই। গিয়ে দেখি স্পাই কার সাথে যেন কথা বলতেছে। এদিকে আমি তোমাকে তন্ন তন্ন করে খুঁজতেছি। হুট করে কৈ গেলা মাথায় আসতেছে না। সে সময় ঘুম ভাঙ্গল।
ঐ কার্ডের ভেতরে যে লেখা ছিল, সেটা ঘুম ভাঙ্গার পরেও মনে ছিল। এখন আর মনে পরছে না। অনেক ক্ষণ ধরে ট্রাই করলাম, কিছুতেই মনে আসছে না। শেষে এটাই লিখতে বসলাম। না হলে দেখা যাবে, স্বপ্নের ঘটনাটাও ভুলে গেছি।
এই রকম আমার অনেক স্বপ্নেই তোমাকে দেখতে পাই না, কিন্তু বুঝি যে সেটা তুমি, কন্ঠ শুনতে পাই। মুখ দেখতে পাই না। আবার খুঁজেও পাই না...
আমার ছাত্র জীবনে পরীক্ষার আগের রাত্রে স্বপ্নে দেখতাম, কিছুই লিখতে পাচ্ছি না বা কিছুই মনে আসছে না বা কঠিন পরীক্ষা প্রশ্নপত্র। পরে দেখা যেত, ফুল এ্যানসার করে আসছি। ঠিক সেরকম, তোমাকে স্বপ্নে না খুজে পাই সমস্যা নাই, বাস্তবে যেন সব সময় কাছে পাই।
কাল দুপুরে মানে ১২ টার দিকে ভাল মুড নিয়েই চ্যাট করতে বসছিলাম। লিখতে লিখতে তোমাকে খুব মিস করতে শুরু করলাম। মাথা মুথা আউলে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল সব ভেঙ্গে চুরে একাকার করে ফেলি। অনেক সময় হয় না এমন যে, বাচ্চারা জেদ ধরে, এখনিই লাগবে। ওটা না ছাড়া জীবন বাচতেছে না। আমার অবস্থা কাল সেরকম। খুব অস্থির লাগছিল। তোমার অনেক মিষ্টি মিষ্টি কথা মনে পড়ছিল। অনেক ভাললাগা বুকের ভেতরে মোচর দিচ্ছিল। ভাল যে কাল তুমি কাছে ছিলে না, দেখতে আর নিজেও অস্থির হয়ে যেতে...
বুঝতে পাচ্ছিলাম, কাল বিকেলে কোন ম্যাসেজ না দেখে এটা সেটা ভাবছো। কিন্তু হয়ত সিরিয়াসলি নাওনি। কারন আমি মাঝে মাঝে এমন করি,,, তোমার কথায় যদি বলি: "কারন ছাড়াই রাগ করো। মন খারাপ করো তুমি।" আসলে আমার এই ইমুশন গুলা কতটা এগ্রেসিভ তোমাকে বোঝাতে পারবো না।
আচ্ছা থাক, অন্য প্রসঙ্গে যাই। কাল বা আজ লেখা লেখি, পড়া শোনা, প্রোগ্রামিং প্রাকটিস কোনটাই হয়নি। এদিকে এখনও মাথা ঠান্ডা হয়নি। হয়ত তুমি এমন কিছু বলবে, সেই ভাল লাগা দিয়ে তখনকার ঐ ভাললাগা হালকা হয়ে যাবে।
এতো এতো লম্বা মেসেজ, কেউ কাউকে দেয় এই যুগে। চিঠি টাইপের হয়ে গেছে। তারচেয়ে ভয়েজ ম্যাসেজ দেয়া ইজি। তুমি তো যখন তখন ভয়েজ ম্যাসেজ শুনতে পারবে না, আবার আমিও দিতে পারবো না। তাই ব্যাকডেটেড মানুষের মত, না হয় লম্বা চিঠি লিখে গেলাম।
তুমি কি এই লেখাগুলা পড়ার সময়, আমার কন্ঠ শুনতে পাও? আমি পাই, তোমার কন্ঠ শুনতে। আজব না? আচ্ছা থাক, যেটার প্রমান দিতে পারব না, তা তোমাকে জোর করে বিশ্বাস করাতে পারব না।
লিখতে লিখতে ঘুম পেয়ে গেছে। অবশ্য যথেষ্ট কারনও আছে। কাল আর তার আগের রাতেও অনেক রাত করে ঘুমাইছি। উঠছি সকাল সকাল। ঘুম ভাঙলেই প্রথম কাজ চোখ বুজে থেকেই কল্পনায় তোমার মুখ দেখা। মন ভরে দেখে তারপর একটা পাপা দেয়া।
এসব আজগবি কথাবার্তা তোমার বা অন্য কারও বিশ্বাস হবার কথা না। বাচ্চামি লাগতে পারে আবার নাকামিও মনে হতে পারে। তা হোক, পাগল যে হয়ে গেছি সেটা ঠিক।
এখন এই পাগলটাকে বলতো, তোমার মন কি একটু ভাল হইছে? এই এতোটুকু, মিচ্চি এ্যানা, পিচ্চি এ্যানা? এই ইত্তুআনাও হয়নি? যাই হোক তোমার মনের ভেতরে সুরসুর ভুরভুর করা কথা গুলা হুরহুর কর আমাকে জানিয়ে দিও। সাত পাঁচ না ভেবেই...

## আজ ওর বাসায় অনেক গেস্ট। ম্যাসেজটা পড়েছে, কিন্তু কাল সকালে আবার পাঠাতে বলল। ওর স্বভাব হল, আমার প্রত্যেকটা ম্যাসেজ সঙ্গে সঙ্গে একবার পড়ে, পরে অবসরে আবার কয়েকবার পরে, যদি ডিলিট না হয়। ও মনের ভেতরে গেঁথে নেয়। ভালবাসা না থাকলে বছরের পর বছর কারও পক্ষে এই কাজটা করা সম্ভব না। ও করেই যাচ্ছে...
যাইহোক, শেষে আমি মায়াবীকে বললাম, তুমি অফ যাও। গেস্টদের সময় দাও। রিস্ক নেবার দরকার নেই। কাল সকালে কথা হবে। ও শুধু বলল, ভাললাগছেনা কিছু...
আমি সর্টকাট রিপ্লাই দিলাম: কেন?
ওর মন খারাপের ছোট্র একটা রিপ্লাই: বোঝনা?
ওর বা আমার, দুজনের কথা বলে তৃপ্তি মেটে না। তবুও থেমে যেতে হয়। পরিবেশ - সমাজ আমাদের থামিয়ে দেয়...
আজও মায়াবীর ওপর আমার কোন সোসাল রাইট নেই। অথচ সে পুরোটাই আমার হয়ে আছে। কপালকুন্ড বলে কথা...
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ৯:৪৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




