আর মাত্র একদিন পরেই নির্বাচন । চারিদিকে এখন শীতের হাওয়ার চাইতে বেশী বইছে নির্বাচনী হাওয়া । তবে শীত ও নির্বাচনী হাওয়া গায়ে লাগাতে লাগাতে সবাই যেন ভুলেই গিয়েছে যে ইংরেজি বছর ২০১৮ এর হাওয়া গায়ে লাগানোর জন্য হাতে আছে আর মাত্র ৩ দিন ।
তার পরেই চলে আসবে নতুন বছর ২০১৯।
৩০ তারিখ নির্বাচন । ৩১ তারিখ ও ১ তারিখ যাদের পছন্দের দল জয়লাভ করবে তারা আনন্দে আর যাদের পছন্দের দল হেরে যাবে তারা দুঃখে নতুন বছরটিকে স্বাগতম জানানোর কথা হয়তো আর মনেই থাকবেনা । তাই আমি আগে ভাগেই সবাইকে হ্যাপি নিউ ইয়ার জানাতে চলে এলাম যেন পরে আর কোন আফসোস না থাকে
পহেলা বৈশাখ আমাদের বাঙ্গালীর উৎসব কিন্তু ইংরেজি নববর্ষ আমরা বাঙ্গালী ছাড়াও পৃথিবীর আরও অনেক দেশের উৎসব ।
আমরা সবাই তো জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে ইংরেজি নববর্ষ পালন করি কিন্তু এই নববর্ষ কিভাবে আসলো তার ইতিহাস কয়জনই জানি । আজ ইংরেজি নববর্ষ নিয়ে লিখতে গিয়ে আমার নিজের খুব জানার ইচ্ছে হল তাই একটু পড়াশোনা করতে গিয়ে অনেক তথ্য পেলাম যার কিছু অংশ আপনাদের জন্যও নিয়ে আসলাম ।
আসুন জেনে নেই ১ জানুয়ারি ইংরেজি নববর্ষ নিয়ে কিছু কথা
ইংরেজি বছর এর শুরু প্রায় ৪ হাজার বছর আগে, খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ অব্দে, মেসোপটেমিয় সভ্যতায়। প্রাচীন মেসোপটেমিয়া ছিল এখনকার ইরাকে। এই মেসোপটেমিয় সভ্যতার আবার ৪টা আলাদা আলাদা ভাগ আছে— সুমেরীয় সভ্যতা, ব্যাবিলনীয় সভ্যতা, আসিরীয় সভ্যতা ও ক্যালডীয় সভ্যতা। এদের মধ্যে বর্ষবরণ উৎসব পালন শুরু হয় ব্যাবিলনীয় সভ্যতায়।
সে সময় বেশ জাঁকজমকের সঙ্গেই পালন করা হত বর্ষবরণ। তবে সেটা এখনকার মতো ১ জানুয়ারি পালন করা হত না। পালন করা হত বসন্তের প্রথম দিনে।
তখন বছর গণনা হত চাঁদ দেখে। তাই বছর শুরুর উৎসবও পালন করা হত চাঁদ দেখে। যেদিন বসন্তের প্রথম চাঁদ উঠত, শুরু হত বর্ষবরণ উৎসব। টানা ১১ দিন চলত সেই উৎসব ।
জাঁকজমক করে নববর্ষ পালন করত রোমানরাও। ওরা আবার তৈরি করে ফেলেছিল ক্যালেন্ডার। সে ক্যালেন্ডারও অবশ্য চাঁদের হিসেবেই বানানো হয়েছিল। আর সেই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ওদের নববর্ষ ছিল ১ মার্চ। আর মাসও ছিল দশটা। ওদের ক্যালেন্ডারে জানুয়ারি আর ফেব্রুয়ারি মাস ছিল না। পরে সম্রাট নুমা পন্টিলিউস জানুয়ারি আর ফেব্রুয়ারিকে ক্যালেন্ডারে যোগ করেন।
কিন্তু রোমানদের ক্যালেন্ডারে তারিখও ছিল না। চাঁদের বিভিন্ন অবস্থা দিয়ে ওরা মাসের বিভিন্ন সময়কে চিহ্নিত করত। চাঁদ ওঠার সময়কে বলা হত ক্যালেন্ডস, পুরো চাঁদকে বলত ইডেস আর চাঁদের মাঝামাঝি অবস্থাকে বলত নুনেস।
পরে সম্রাট জুলিয়াস সিজার এই ক্যালেন্ডারের পরিবর্তন ঘটান। তিনি ক্যালেন্ডস, ইডেস, নুনেসের ঝামেলা শেষ করে বসিয়ে দেন তারিখ। ফলে বছরে মোট ৩৫৫ দিন হয়। চাঁদ দেখে হিসাব করা হত বলে ১০ দিন কম হয়েছিলো ।
কিন্তু ওভাবে হিসাবের ফলে চাষিরা পড়ল সমস্যায়। সে সমস্যার সমাধান করলেন হোঞ্চাস হেডাস নামের এক রোমান। তিনি ফেব্রুয়ারির পরে আরেকটা মাস যোগ করে দিলেন ।
কিন্তু তাতে আরও সমস্যা হল । তখন সিজার অনেক চিন্তা-ভাবনা করে দেখলেন, সূর্য দিয়ে হিসাব করলেই তো সমস্যার সমাধান হয়ে যায় । এবার বছর হয়ে গেল ৩৬৫ দিনের।
ক্যালেন্ডারের ঝামেলা মিটলেও, বছর শুরু হবে কবে, সেই হিসেব কিন্তু সহজে মেটেনি। একেক সময় একেক জায়গায় একেক দিনে বছর শুরু করা হত; উৎসবও হত একেক দিনে। যিশু খ্রিস্টের জন্মের ৬০০ বছর আগে, অর্থাৎ খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দে ঠিক করা হল, বর্ষবরণ হিসেবে পালন করা হবে ২৬ মার্চ।
কিন্তু সেটাও ঠিকভাবে মানা হচ্ছিল না। পরে সম্রাট নুমা পন্টিলাস যখন জানুয়ারি আর ফেব্রুয়ারিকে ক্যালেন্ডারে ঢোকান, তিনি ঠিক করে দেন, জানুয়ারির ১ তারিখ হল বছরের প্রথম দিন। ওইদিনই হবে বর্ষবরণ।
অবশ্য সমস্যা ছিল সিজারের ক্যালেন্ডারেও। সেই সমস্যা দূর করেন একজন ডাক্তার। নাম তার অ্যালোসিয়াস লিলিয়াস। কিন্তু ইতিহাসে তার নাম সেভাবে কেউ জানে না। কারণ, ক্যালেন্ডারটির কথা সবাইকে জানান একজন পোপ— ত্রয়োদশ (১৩তম) গ্রেগরি। সবাই তাকেই চেনে। পোপ গ্রেগরির নাম অনুসারে ক্যালেন্ডারটিকে বলা হয় গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। এখন যে ইংরেজি ক্যালেন্ডারটি প্রচলিত, সেটিই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার।
এই ক্যালেন্ডারটি তৈরি করা হয় মাত্র ৪০০ বছর আগে, ১৫৮২ সালে। আর ক্যালেন্ডারটি নানা কারণে এতটাই প্রচলিত হয়ে পড়ে, সবাই এই ক্যালেন্ডারটিই অনুসরণ করতে শুরু করে। ফলে আগে যারা নিজস্ব ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বর্ষবরণ উৎসব পালন করত, তারাও এখন গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জানুয়ারির ১ তারিখে নববর্ষ হিসেবে পালন করে। যেমন আমরা পহেলা নববর্ষ-এর পাশাপাশি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী মানে ইংরেজি নববর্ষও পালন করি।
নতুন বছরে সবাই দেখি নিউ ইয়ার রিজোলিউশন দেয় নতুন বছরে আমি এটা করবো ওটা করবো কিন্তু আমি কখনো এসব করিনি কারন সবাই যা করে আমার তা করা একদম পছন্দ না তবে ব্লগে এখন সবাই যার যার নির্বাচনী ইশতেহার দিতে ব্যস্ত আর সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে আমি নিয়ে এলাম নতুন বছর ২০১৯ এ আমার কিছু ব্লগীয় রিজোলিউশন
১. কবিতার প্রতি আমার টান বেশী, আমি কবিতা ভালোবাসি । তবে সামুতে এসে কবিতা ছাড়াও দু একটি গল্প (যদিও একটুও ভালো হয়নি) অথবা অন্যান্য লেখা লেখার চেষ্টা করেছি । মাথায় কিছু গল্পের টপিক থাকলেও কবিতার মায়া থেকে দূরে থাকতে না পারা এবং আলসেমি থেকে গল্প লেখার চেষ্টা করা আর হয়না । তবে আগামী বছরে আমি গল্প লেখায় মনোনিবেশ করবো । যেহেতু সামুতে নিয়মিত লিখছি এবং ইচ্ছা আছে নিয়মিত লেখার আমার মনে হয় আমার লেখায় কিছুটা বৈচিত্র্য নিয়ে আসা দরকার তাই কবিতার পাশাপাশি গল্প বা অন্যান্য লেখায় মনোনিবেশ করার সিদ্ধান্ত । তবে কবিতাও থাকবে অবশ্যই, কবিতাই যে প্রথম আর শেষ ভালোবাসা ।
২. আমরা সবাই ব্যস্ত । এই ব্যস্ততা নিয়েই আমরা লিখি, তা পোস্ট করি, নিজের লেখার মন্তব্য এর প্রতিমন্তব্য করি আবার অন্যান্যদের লেখা পড়ি ও তাতে মন্তব্য করি । তবে আমি ভাবছি আমার সময়গুলোকে আমি ভাগ করে নিবো । অন্য লেখা না পড়ে শুধুমাত্র যদি নিজেই লিখতে থাকি আর পোস্ট করতে থাকি তাহলে জানা বা শেখা হবে কম । তাই সপ্তাহে একটি কিংবা দুটি লেখা পোস্ট করে বাকী সময়গুলো অন্যদের লেখা পড়বো ।
৩. সমালোচনা করা নিয়েও কত সমালোচনা হয় ব্লগে সমালোচক কিন্তু একজন লেখকের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ কারন যখন কেউ আপনার লেখার সমালোচনা করবে বুঝে নিতে হবে যে সে আপনার লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়েছে এমন পাঠক কয়জন হয় বলুন ? তবে আমরা কে কতটুকু পড়ে মন্তব্য করি তা আল্লাহ জানে । আমি সব লেখাই পড়ে তারপর মন্তব্য করি তবে লেখাটি নিয়ে একটু বেশী ভেবে আগামী বছরে আমি শুধু লেখা অনেক ভালো লেগেছে, চমৎকার, সুন্দর এই টাইপ মন্তব্য না করে চেষ্টা করবো একটু সমালোচনা করার আর অবশ্যই কেউ যদি আমার লেখার সমালোচনা করে আমি তাতে রাগ করবো না, যদিও এখনও করিনা
৪. মাঝে মাঝে ব্যস্ততার কারনে ব্লগে কিছু প্রিয় লেখকের লেখা মিস হয়ে যায় । আমার ব্লগে অনেকেই এসে খোঁজ খবর নেন ও লেখা পড়েন, মন্তব্য করেন । সবাইই তা করে কিন্তু আমি এ কাজটি করিইনা বললে চলে । কিন্তু আগামী বছরে আমি দাওয়াত ছাড়াই নিয়মিত সবার ব্লগ বাড়ীতে যাবো, তাদের খোঁজ খবর নিব ও লেখা পড়বো
৫. সবশেষে আজকের লেখাটি আমি প্রতি সপ্তাহে একবার করে পড়বো কারন আমরা যা বলি তা দুইদিন পরেই ভুলে যাই আজ যা যা বললাম তা যেন আমি না ভুলি তাই আজকের লেখার ইংরেজি নতুন বছর ২০১৯ এর আমার ব্লগীয় রিজোলিউশন গুলো আমি সপ্তাহে একবার করে পড়বো ।
এই মুহূর্তে অনলাইনে যেসকল ব্লগার আছেন, যেসকল ভিজিটর আছেন তারা এবং যারা নেই তারা সহ সবাইকে ইংরেজি নতুন বছরের অগ্রীম ফুলঝুরি শুভেচ্ছা
নতুন বছরে চাইলেই সবকিছু নতুন ভাবে শুরু করা সম্ভব নয় আবার কিছু বিষয় পুরনোই ভালো কিন্তু হিংসা, বিদ্বেষ, ঝগড়া, মনোমালিন্য এগুলো বেশী পুরনো হতে দেওয়া ঠিক না তাই ২০১৮ এর এসকল সব বিষয় গুলোকে বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে ২০১৯ এর শুরুটা হোক হাসিখুশি আর আনন্দে সবার জন্য এই কামনা
এ বছর ৩১ ডিসেম্বর রাতে কে কি করবে তা অনেকটা নির্ভর করছে যার যার পছন্দের দলের নির্বাচনের ফলাফলের উপর । যার দল জয়লাভ করবে সে নির্বাচনে জয়ের খুশীর সাথে উদযাপন করবে নতুন বছর আগমনের আনন্দ তাই তার জন্য ডাবল পার্টি আর যার দল হেরে যাবে তার জন্যও কিন্তু ডাবল পার্টি তবে তার পার্টিটা হবে একটু অন্যরকম । নির্বাচনে হেরে যাওয়ার কষ্ট আর ২০১৮ চলে যাওয়ার কষ্ট কারন আমার মনে হয়না হেরে গেলে তারা ২০১৯ কে বরনের আনন্দ উদযাপন করবে তাই যেহেতু আনন্দ উদযাপনে একটু রিস্ক থেকে যাচ্ছে তাই আজই হয়ে যাক একটি মিনি পার্টি
এখন যেহেতু মধ্যাহ্ন ভোজের সময় তাই সেই অনুযায়ী খাবারের মেনুগুলো সিলেক্ট করা
বাঙ্গালী খাবার দিয়ে ইংরেজি বছর উদযাপন , কারন আমার আজ খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ ভাজা খেতে ইচ্ছে হচ্ছে
আমার মতো যারা বিরিয়ানি পাগল তাদের জন্য
যারা গরুর মাংস খাননা বা মুরগীর মাংস খেতে পছন্দ করেন
পোলাও বিরিয়ানি হবে আর সাথে কোক থাকবেনা তা কি করে হয় । এক্ষেত্রে আমি কিছুটা স্বার্থপর হলাম আজ । কোক ছাড়া অন্য কোন অপশন নেই কারন আমার শুধু কোক পছন্দ তবে পানি আছে কিন্তু পাশের টেবিলে তাই আর পিক দেইনি
ডেজার্ট
বেস্ট অফ লাক টু অল । হ্যাপি নিউ ইয়ার ২০১৯
তথ্য সুত্র ঃ bdnews24.com
ফটো ক্রেডিট ঃ আমার গুগল চাচ্চু (এই চাচ্চু না থাকলে যে কি হত )
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৫