আজ ১৬ই মার্চ। বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরিদের মাতৃভাষা সংগ্রামের ইতিহাসে ১৬ই মার্চ একটি তাৎপর্য্যপূর্ণ দিন। ২৬ বছর আগে এই দিনে ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন সুদেষ্ণা সিংহ নামের এক তরুণী ভাষাবিপ্লবী। তার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বেগবান হয় বরাক উপত্যকার বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরিদের ভাষা আন্দোলন। রাস্ট্র তাদের ভাষাকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। আজকের এই দিনে গভীর ভালবাসা ও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরন করছি অসামান্যা সেই নারীকে।
মাতৃভাষা স্বীকৃতির আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি ভাষাবিপ্লবীদের ডাকে আসামের বরাক উপত্যকায় চলছিল ৫০১ ঘন্টার রেল অবরোধ কর্মসূচি। ১৬ই মার্চ ১৯৯৬ সাল শনিবার বেলা ১২টা ১০ মিনিটে করিমগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহি ট্রেনটি যখন কলকলিঘাটের রেলওয়ে স্টেশন পেরিয়ে যাচ্ছিল সে সময় সত্যাগ্রহীরা ট্রেনটিকে শান্তিপুর্ণভাবে থামায়। কিন্তু বাধ সাধে রাস্ট্রের নিয়োজিত পুলিশ। তারা প্রায় বিনা উস্কানিতে গুলিবর্ষন শুরু করে, সেখানে তাদের নির্দেশ দেবার জন্য ছিলনা কোন ম্যাজিষ্ট্রেট বা অফিসার। এর আগে পুলিশ কোন ফাঁকা গুলিও করেনি। ঘটনার বিহ্বলতায় ছত্রভঙ্গ হওয়ার আগেই সত্যাগ্রহীরা আবিষ্কার করলেন বুকে গুলি খেয়ে মৃত্যূর কোলে ঢলে পড়েছেন সুদেষ্ণা সিংহ। তার সাথে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে কাতরাচ্ছেন আরো অনেকে। এ অবস্থার মধ্যে পুলিশ ব্যাপক ধরপাকড় করে, গ্রেফতার হন শতাধিক ভাষাবিপ্লবী।
করিমগঞ্জ সদর হাসপাতালের বারান্দায় একটা স্ট্রেচারে শুইয়ে এভাবেই ফেলে রাখা হয় প্রিয় বোনটির লাশ। দেখলে চোখের পাতা ভারি হয়ে আসে তবু এই ছবিই আমাদের বাঁচতে শিখায়। অধিকার আদায়ের জন্য লড়তে শেখায়। সুদেষ্ণা হয়ে থাক পৃথিবীর সমস্ত দুর্বল, অবহেলিত, নিপীড়িত ও সংখ্যায় ক্ষুদ্র মানুষদের বাঁচার অনুপ্রেরনা।
ইমার ঠার পুনচি পালক।
সকল মাতৃভাষা বেঁচে থাকুক।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০২২ রাত ৯:০৫