somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কুতুবদিয়া
দীর্ঘদিন ধরে কুতুবদিয়া দ্বীপের গঠন প্রক্রিয়া শুরু হলেও এ দ্বীপ সমুদ্র বক্ষ থেকে জেগে উঠে চতুর্দশ শতাব্দীর শেষের দিকে। ধারণা করা হয়, পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষের দিকে এ দ্বীপে মানুষের পদচারণা। “হযরত কুতুবুদ্দীন” নামে এক কামেল ব্যক্তিআলী আকবর, আলী ফ

কুতুবদিয়া দ্বীপ’ বিখ্যাত বাতিঘরের কারণে.........@

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কুতুবদিয়া দ্বীপ’ বিখ্যাত বাতিঘরের কারণে এ প্রবাদটি ছোটবেলায় বিভিন্ন পাঠ্য পুস্তকে লেখা ছিল। ইদানিং তেমনটি আর লেখা হয় না। কারণ বাতিঘরটি আর কুতুবদিয়াতে নেই। আছে বাতিঘরটির ভগ্নস্তূপ এলাকা নিয়ে গঠিত বাতিঘরপাড়া। কুতুবদিয়া কক্সবাজার জেলায় একটি দ্বীপ উপজেলা। চান্স এন্ড ব্রাদার্স কোম্পানী লিমিটেড কর্তৃক মনোনীত স্থপতি নেয়ার বার্মিংহাম এর তত্ত্বাবধানে ১৮৪৬ সালের দিকে কুতুবদিয়ার দক্ষিণধুরং ইউনিয়নের আলী ফকির ডেইল নামক স্থানে আটতলা তথা আটকক্ষ বিশিষ্ট বাতিঘরটি নির্মাণ করা হয়। ১২০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট গোলাকৃতি আলোক স্তম্ভের প্রতিটি কক্ষে মূল্যবান কাঁচ খচিত জানালা ছিল। কক্ষের চারদিকে রেলিং ছিল। সর্বোচ্চ কক্ষে বাতিঘরটি প্রজ্জ্বলন করা হতো। ১৯ মাইল দূর থেকে নাবিকরা এ বাতিঘর থেকে আলো প্রত্যক্ষ করে দিক চিহ্নিত করতো। শংখ নদীর তীব্র স্রোতের তোড়ে বাতিঘরটি ধ্বংস হতে থাকে। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে বাতিঘরটি পুরোপুরি ধ্বংস হলে গভীর সমুদ্রে চলাচলরত নাবিক ও মাঝিমাল্লাদের কথা মাথায় রেখে তদানীন্তন সরকার ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে একই এলাকায় অর্থাৎ এর দু’কিলোমিটার পূর্বে বাঁধের ভেতরে প্রায় সাত একর জমিতে আরো একটি বাতিঘর নির্মাণ করে। বাতিঘরের সাথে কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য একটি রেস্ট হাউস ও দু’টি আবাসিক কোয়ার্টার নির্মাণ করা হয়। ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে ২৯ এপ্রিল প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে পুনঃ নির্মিত বাতিঘরটি সাগরে বিলীন হয়ে যায়। নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় মেয়াদোত্তীর্ণ এসব স্থাপনা জরাজীর্ণ অবস্থায় কালের নীরব সাক্ষী হিসেবে এখনো সাগরদ্বীপ কুতুবদিয়ায় অযত্ন, অবহেলা অবস্থায় বিদ্যমান রয়েছে। কুতুব আউলিয়ার উত্তরসূরি হযরত শাহ আবদুল মালেক আল কুতুবী (রাঃ) এর মাজার শরীফের অসংখ্য ভক্ত প্রায় প্রতিদিন কুতুবদিয়া সফর করে থাকেন। কুতুবদিয়া সফরের প্রাক্কালে ঐতিহাসিক বাতিঘরের অস্তিত্ব সন্ধানের জন্য পর্যটকদের ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।

কুতুবদিয়ার ঐতিহাসিক বাতিঘর এখনো পথ দেথায় নাবিকদের
কক্সবাজারের সাগর ঘেঁরা দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার ঐতিহাসিক বাতিঘর বঙ্গোপসাগর পথে দেশী বিদেশী নাবিকদের পথের সন্ধান দিয়ে আসছে বহুকাল ধরে। কিন্তু দু’শতাব্দীকালের প্রাচীনতম এই বাতিঘরটির প্রতি কারো তেমন নজর আছে বলে মনে হয় না। নানা অনিয়ম অব্যবস্থাপনা ও অযত্ন অবহেলায় আলো জ্বলোক না জ্বলুক কালের স্বাক্ষি হয়ে ঠাই দাঁড়িয়ে আছে বাতিঘরটি। সরেজমিনে দেখা গেছে,কুতুবদিয়ার দক্ষিণ ধুরুং আলী ফকির ডেইলের গ্রামের পশ্চিম সমুদ্র সৈকতে বাতিঘরটির অবস্থান।
জানা যায়,বৃটিশ সরকার ১৮৪৬ খ্রিষ্টাব্দে ৪৪২৮ টাকা ব্যয়ে বার্মিংহাম ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা এটি নির্মাণ করেছিল। যা ৮তলা বিশিষ্ট গোলাকৃতির। উচ্চতা ১২০ফুট ছিল। মাঠির নীচে ও এক তলা ছিল। প্রত্যেক তলার উচ্চতা ১৫ফুট। এ বাতিঘরের আলো চতুর্দিকে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়াত। দেশ স্বাধীনতা পূর্বে ঐতিহাসিক বাতিঘরটি ভেঙ্গে পড়েছিল। এর ১কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে বেড়িবাঁধের ভিতরে ১৯৭২সনে ষ্টিলএঙ্গেল দ্বারা এটি পুনঃস্থাপন করা হয়। বর্তমানেই এটিই সাগর পথে চলাচরকারী অসংখ্য মাঝি-মাল্লা ও দেশি-বিদেশী জাহাজের নাবিকদের পথ দেখায়। কুতুবদিয়া বাতিঘরের ৪৫কিলোমিটার উত্তরে দেশের প্রধান চট্টগ্রাম সমুদ্র মন্দর। ৩০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে গভীর সমুদ্রে সাঙ্গু গ্যাস ক্ষেত্র। ২৫কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে বাস্তবায়নাধীন সোনাদিয়া গভীর সমুদ্র বন্দর এর অবস্থান। তা’ছাড়া বর্তমানে কুতুবদিয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। সরকার ২০১০ সালে এই গ্যাস ক্ষেত্রের সফল জরিপ কার্যক্রম ও সফল করেছে। এমন এক গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে কুতুবদিয়ার ঐতিহাসিক বাতিঘরটির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম বলার অপেক্ষা রাখে না। এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাতিঘরটির রক্ষাণাক্ষেণ ও তত্বাবধান আব্যন্তরীণ নৌ-বানিজ্য অধিদপ্তরের। প্রাচীনতম বাতিঘরটিতে অধুনিকতার ছোয়া লাগেনি এখনো। যেই অবস্থায় পুনঃ নির্মাণ করেছিল সেই অবস্থায় রয়ে গেছে। প্রায় ৭একর জায়গার উপরে স্থাপিত বাতিঘরের মধ্যে একটি রেষ্ট হাউস দু’টি আবাসিক কোয়ার্টার দীর্ঘ ২০ বৎসর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়। একমাত্র ওয়ার্লেস যন্ত্রটি ৯১’র ঘুর্ণিঝড়ে নষ্ট হয়ে যায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে বাতিঘরে নানা আগাছা পরগাছা ও জরাজীর্ণ ভবন যেন ভূতুড়ে বাড়িতে পরিনত হয়েছে। বিশাল এলাকায় বাউন্ডারী ওয়ালে ঘেরা একটি বিশাল দিঘী ও চার পাঁচ একর জায়গা রয়েছে। এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন,এখানে কর্মরত ইনচার্জ প্রতি মৌসুমে বিভিন্ন ক্ষেতখামার করে তা’ ভোগ করেন। অথচ এই জায়গা গুলো লিজ দিলে প্রতি বৎসর অন্তত ৪/৫লাখ টাকা সরকারী কোষাগারে জমা হতে পারে।
অভিযোগ রয়েছে এখানকার কর্মচারী বিভিন্ন অজু হাত দেখিয়ে জায়গা ও দিঘী লিজ না দিয়ে নিজেরাই ভোগ করছে। বাতিঘরে জেনারেটরের মাধ্যমে ১৫টি ব্যাটারীতে চার্জ করা হয়। ওই ব্যাটারীর মাধ্যমে বাতিঘরে আলো জ্বলে থাকে। জেনারটেরর জন্য বাৎসরিক ৩৫০০ লিটার ডিজেল বরাদ্ধ থাকে। প্রায় সময় ইঞ্জিন বিকল দেখিয়ে ডিজেল গুলো বাইরে পাচার করার অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে বাতিঘরের আলো দেখা না দেখা কর্মরত কর্মচারীদের খেয়ালখুশির উপর নির্ভর করে। এতে করে সমুদ্র পথে বিভিন্ন বোট জাহাজ অনেক সময় দুর্ঘনার শিকার হয়। বাতিঘর এলাকায় বেড়িবাঁধের অত্যান্ত ঝঁকিপূর্ণ অবস্থা। অতিশিঘ্রই এখানে বেড়িবাঁধের ব্যবস্থা না হলে বাতিঘরটি ও সমুদ্র গর্ভে বিলীন হবার আশংকা রয়েছে। বাতিঘরে যাওয়া আসার একমাত্র আকবর শাহ রোডের বেহাল অবস্থা। প্রায় ৩কিলোমিটার সড়কটি ব্রিক সলিং হয়েছিল বহু আগে। প্রায় ১কিলোমিটার এলাকা এখনো কাঁচা রয়ে গেছে। এ সড়কের অধিকাংশ ইট চুরি হয়ে গেছে এবং বাকীগুলো এলোমেলো হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। দেশীবিদেশী যে কেউ কুতুবদিয়ায় আসলে তারা অবশ্যই বাতিঘর দেখতে যায় এ সড়ক হয়ে। ll
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নেতানিয়াহুও গনহত্যার দায়ে ঘৃণিত নায়ক হিসাবেই ইতিহাসে স্থান করে নিবে

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৩৮

গত উইকেন্ডে খোদ ইজরাইলে হাজার হাজার ইজরাইলি জনতা নেতানিয়াহুর সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
দেখুন, https://www.youtube.com/shorts/HlFc6IxFeRA
ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে নেতানিয়াহুর এই হত্যাযজ্ঞ ইজরায়েলকে কতটা নিরাপদ করবে জনসাধারণ আজ সন্দিহান। বরং এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×