somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মের দেয়াল-০৩

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই অল্প সময়ে এই বজ্জাদ,চরিত্রহীন ছেলেটা আমার মনের অনেকটা জায়গা দখল করে ফেলে।কিন্তু তার জন্য ভালোবাসা নামক শব্দটা যেনো উচ্চারণ করাও 'পাপ' অথবা 'নরক'।বছরের পর বছর মানুষের পাশে থাকলেও নাকি তাকে চেনা যায় না,সেটা আমি মানি।তবে জাহিদের মধ্যে যে মনুষ্যত্ব বোধ অনেক বেশী তা আমি এই কিছুদিনে বুঝেছি।
কাজের মধ্যে তেমন কিছু সে করেনা,একটা DSLR আর ক্যামেরা নিয়ে সারাক্ষন বিয়ে বাড়িতে ছবি তুলে বেড়ায়।বিয়ে বাড়ি আর বড় কোন অনুষ্ঠানের বাড়তি খাবারগুলো আবার গরীব ও পথশিশুদের মাঝে বিলিয়ে দেয়।দিদির কাছে শুনেছি ঈদ-কুরবানী কিংবা পুজোতে অসহায় মানুষদের কাপড় এবং খাবার প্রদানের জন্য ও নাকি সে কি সব কমিটিতে যুক্ত।
ক্যামেরা নিয়ে বেশ কিছুদিন আমার সাথেও ঘুরেছে।নদীর পাড়ে,পাহাড়ের উপড়ে কিংবা রাস্তার পিচঢালা পথে জ্যোৎসা রাতে আমার সাথে গল্প করেছে আর ছবি তুলে দিয়েছে।নিষেধ করিনি কোনকিছুতেই,কটা দিন পর তো মায়ের সাথে চলেই যাচ্ছি।চুপচাপ দেখি না হয়, এই পাগলের পাগলামি।
জাহিদের পাগলামি যে 'ভালোবাসি' নামক শব্দে এসে থামবে,কোনদিন কল্পনাও করিনি।বাসা থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিলাম,ফোন-ফেসবুক অফ করে দিলাম।কাজ হয়নি,জাহিদের মতো ছেলেরা প্রেমে পড়লে অনেক কিছু করতে পারে।বাসার সামনে রাতভর কুকুরের ঘেউঘেউ শব্দে বুঝেছি,এখানে এসেও শুরু করেছে।কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না।দিদিকে বললে,আনন্দে লাফিয়ে উঠবে আর মাকে বললে পুলিশে ফোন করবে।বাধ্য হয়ে বাসার নিচে নামতেই দেখি জাহিদ দাঁত বের করে হাসছে।
বেয়াইনসাব,আমি জানতাম আপনি আসবেন।
আমার মাথায় অনেক যন্ত্রনা হচ্ছিলো।তারপর ও বললাম,
চলে যান প্লিজ।আমাকে একা থাকতে দিন।
সেদিন মন্দির থেকে ওভাবে চলে এলেন।কিছুই বলে এলেন না।
জাহিদ সাহেব,আমি আপনাকে ভালোবাসি না।
কিন্তু পূজা দেবী আমি আপনাকে ভালোবাসি,সত্যি ভালোবাসি।বিয়ে করতে চাই, খাটি ভালোবাসা কোন ভেজাল নেই।
হে ভগবান! এটা মরে গেলেও সম্ভব না।কোনদিন না।কিছুতেই না।আপনার পায়ে ধরি প্লিজ চলে যান।
আমার কথা শেষ না হতেই জাহিদ পায়ের কাছে বসে পড়ে।
আমিও আপনার পায়ে পড়ি পূজা দেবী, প্লিজ ফিরিয়ে দিবেন না।
আমি দ্রুত খানিকটা পিছনে সরে গেলাম।চোখে জল চলে এলো।
জাহিদ সাহেব।রাত বাড়ছে, কেউ দেখলে আমি বেঁচে থাকতে পারবোনা।আমি যে কেনো আবার আপনার সাথে দেখা করলাম?
আমি দৌড়ে বাসার দিকে চলে এলাম।উপরের বারান্দা থেকে মা তাকিয়ে আছেন।
বাসায় ঢুকেই মায়ের সামনে পড়ার মতো সাহস আর ছিলো না।নিজের রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করতেই দেখি জাহিদ ফোন দিচ্ছে।ফোন ধরেই বললাম,
আপনি আমাকে আজ মায়ের কাছে ছোট করেছেন।আপনাকে কোনদিন ক্ষমা করবোনা।
পূজা দেবী,সন্তানেরা মায়ের কাছে কখনো ছোট হয় না।বরং ভালোই হয়েছে তিনি দেখেছেন।
আপনি যদি সত্যি আমাকে ভালোবাসেন আমাকে একা থাকতে দিন।
আপনাকে ভালোবাসি বলেই একা থাকতে দিতে পারছিনা।আচ্ছা সমস্যাটা কোথায় বলুন তো,আমি মুসলিম শুধু এই তুচ্ছ সমস্যা?
আমি গম্ভীর গলায় বলায়,
এটা আপনার কাছে তুচ্ছ সমস্যা মনে হচ্ছে?
হ্যা হচ্ছে।ভালোবাসার কাছে এসব তুচ্ছ।
জাহিদ সাহেব।একই মায়ের পেটে জন্ম নিলেও আমি লাবন্য নই।ভুল মানুষকে ভুল কথা বলছেন।
পূজা দেবী, আমি কিন্তু একবার ও আমার ভাই আর আপনার বোনকে কথার মাঝে টানছিনা। আপনি ও আনবেন না।
রাখছি জাহিদ সাহেব।আর কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।
আমি আমার উত্তর জানতে কাল আবার আসবো পূজা দেবী।বারবার আসবো।
আমি ফোন কেটে দিয়ে কাঁদতে লাগলাম।মা দরজা ধাক্কাচ্ছে,
'পূজা' এই পূজা, দরজা খোল। তোর সাথে কথা আছে আমার।
এখন যাও মা,আমি একটু একা থাকতে চাই।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৩
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×