আমার বাসা থেকে অফিসের দুরত্ব তেমন না। প্রতিদিন রিকশাই আসি, তবে রিকশায় আসলে কিছুটা পথ হাটতে হয়। আজ এ অফিসে চাকুরীর শেষ দিন, বেশ বেলা করেই বিদায় নেয়ার উদ্দেশে আসছিলাম। বাস খালি পেয়ে উঠে পরলাম, বাসটা অফিসের পাশ ঘেষেই যায় কিনা।
অন্যমনস্ক ছিলাম হঠাৎ কর্কশ আওয়াজে নিজেকে ফিরে পেলাম। শব্দ গুলো হচ্ছে এক ছোট্ট হকারের " দেহেন আমার চাইরডা আঙ্গুল নাই কাম কইরা খাইতে পারি না। একটা কলম ৫ টাকা দিয়া কিন্না সাহায্য করেন, আফা নিবেন, ভাই নিবেন"
এমন হকারদের সাথে আমরা বেশ পরিচিত। বাসে যারা চড়েন লজেন্স বিক্রেতার হাতে পরেন নাই এমন খুব কম আছে। ওদের লজেন্স ফেরত দিয়ে টাকা দিলে খুশি হয়। মূলত টাকাটাই ওদের টার্গেট থাকে। ছেলেটাকে দেখে কষ্ট হলো ডেকে ৫ টাকা বের করে দিলাম ছেলেটাও কলমটা আমার হাতে দিলো। আমি ভাবলাম কলম দিয়ে কি করবো অফিসেতো চাহিবামাত্র কলম দিতে বাধ্য থাকে। বরং টাকাটা দিলে ওর হেল্প হবে, কলমটাও অন্য জায়গায় বিক্রি করতে পারবে। কিন্তু আমাকে বিস্মিত করে সে বলল কলম নেন আমি ভিক্ষা করি না!
আমি নিজেকে ফিরে পেলাম, আমি ভুল জায়গায় ক্লিক করেছি। আমাদের এসব হকারদের উপর এমন মনোভাব তৈরী হয়েছে যে ঘটনাটা বিশ্বাস করতে সমস্যা হচ্ছিলো। ছেলেটার ছবি তুলতে মন চাচ্ছিলো, সবাইকে জানাতে মনে চাচ্ছিলো যে এখনো এমন হকার আছে যারা ভিক্ষাকে ঘৃনা করে এবং নিজের পায়ে দাড়াতে চায়!
হতাশ হয়ে অফিসের সামনে নেমে পরলাম, হেটে সামনে যাব এমন সময় দৌরে এসে ফুটপাতে দাড়িয়ে অন্য গাড়ি দেখছিলো। আমি ওর ছবি তুলতে চাইলাম, আপত্তি করলো না। ছবি তুললাম, নাম জিজ্ঞাসা করলাম, বয়স বললো।
নাম- আজ দিনটা অন্যরকম, সরি নামটা ভুলে গেছি
বয়স- আনুমানিক-১৩
ছবি তোলার স্থান- দিলকুশা, ঢাকা
সময়- আনুমানিক দুপুর ১২.৩০
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:২৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




