একটা সময় ছিলো নির্দিষ্ট কিছু পেশা সম্মানের দিক থেকে এগিয়ে থাকতো। যেমন ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, ব্যারিষ্টার ইত্যাদি। ভালো ছাত্ররা ডাক্তার হতো, ইঞ্জিনিয়ার হতো, শিক্ষক হতো। সমাজে তাদের একটা সম্মান ছিলো আলাদা। টাকা পয়সা দিয়ে সে সম্মানের বিচার হতো না। কিন্তু এখন সেই পরিবেশ অনেকটাই মলিন হয়ে গেছে। এতো এতো নতুন নতুন সব পেশার আবির্ভাব হয়েছে আর এই সব পেশায় এতো পরিমান আয় ইনকামের ব্যবস্থা হয়েছে যে, শিক্ষিত আর অশিক্ষিতের মধ্যে পার্থক্য বা ভেদাভেদ অনেকটাই কমে গেছে। বরঞ্চ শিক্ষিত ডাক্তারের চেয়ে মোবাইল হাতে ভ্লগারের দাপট এখন সমাজের সর্বত্র। এটা সমাজের জন্য মোটেও ভালো কোন ইঙ্গিত নয়। যারা
জনকল্যাণে নিজেকে যে বিলিয়ে দেয়, সমাজ যদি তার মূল্যায়ন না করে, তবে সেই সমাজে জনকল্যাণ করার লোক আসবে কিভাবে? ক্রিকেট ব্যাট হাতে সাফল্য অর্জন সেতো সাময়িক পূলক। কিন্তু সমাজ ও মানব কল্যাণে এর ভুমিকা কতটুকু? অথচ এই সাময়িক অর্জন আজ আমাদের কাছে মূখ্য বিষয় হয়ে দাড়াচ্ছে। সেই আলেকজেন্ডার ফ্লেমিং বা নিউটনও যদি এমন সস্তা বাহবায় নিজেকে বিলিয়ে দিতেন, তবে আমরা এই সভ্য আর আধুনিক সমাজ পেতাম না। ব্যাপারটা বুঝতে হবে।
সমাজে কার কি অবদান এবং সেই অবদানের উপর ভিত্তি করে তাকে সেই প্রাপ্য মর্যাদাটা ও স্বিকৃতিটা দিতে হবে। শুনেছিলাম কোন এক গাড়ি দূর্ঘটনায় একজন একজন বিজ্ঞানি ও একজন সেলিব্রেটি আহত হলে লোকজন সবাই সেই সেলিব্রেটিকেই বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলো। অথচ সেই বিজ্ঞানীর জ্ঞ্যান যে লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচায় সেই হুঁশ কারোর মাঝেই কাজ করেনি। কিভাবে করবে? ঐ যে সামাজিক মর্যাদা ও স্বকিৃতির দৈণ্যতায় ভুগছে এই সমাজ।
এখন আমরা সবাই রাফসান হতে চাই, কে চিনে ডঃ কুদরতই খোদাকে? কে চিনে পাটের আঁশ দিয়ে সোনালী ব্যাগ বানানো বিজ্ঞানী মোবারক খানকে? সমাজে এদের কদর ও স্বিকৃতি কোথায় যে এমন বিজ্ঞানীর আবির্ভাব ঘটবে ? সব তো ব্যাট হাতে সাকিব আর মোবাইল হাতে রাফসান হওয়ার স্বপ্নে বিভোর।
একজন শিক্ষিত মানুষের পাশে একজন অশিক্ষিত আজ আনায়াসে দাড়িয়ে যায় শুধু টাকার জোরে। এমনকি ধরাকে সরা জ্ঞ্যানও করে শুধু মাত্র এই টাকার জোরে। কে জানে ফুড ব্লগার থেকে এখন খাদ্য মন্ত্রীও হতে পারে যে কেউ ... !
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৮