
বেশ ক'দিন ধরে অনলাইন আর অফলাইনের পরিচিত কিছু মুখের খিস্তি খেউরি (ভাষার অশালীন ব্যবহার) আমরা দেখে আসছি। এক দিকে জ্যাকব মিল্টন, পিনাকি ভট্টাচার্য্য। অপর দিকে মির্জা আব্বাস, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বর্তমান সরকারের কৃত সংস্কার মির্জা আব্বাস বাতিল করে দেবেন মর্মে একটি বক্তব্য দিলে এবং বিএনপির নির্বাচনে যাওয়ার ব্যপক তাড়াহুড়ার বিষয়টি মাথায় রেখে জ্যাকব মির্জা আব্বাস ও মির্জা ফখরুল উভয়কেই ব্যপক গালি গালাজ করেন। পরবর্তিতে মির্জা গং জ্যাকব গংদের জন্মের ঠিক নাই ব্লা ব্লা বলে নিজেদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান।
এখন কথা হচ্ছে গালাগালি তো অপ্রয়োজনীয়। কাওকে যদি আপনি তার দোষ ধরিয়ে দিতে চান, তবে তার কৃত অপকর্মগুলো তুলে ধরাই যথেষ্ট। যেমন করেছেন পিনাকী। তিনি জনগনের সামনে প্রশ্ন রেখেছেন একজন স্কুলের ঘন্টা বাজানো দপ্তরীর ছেলে মির্জা আব্বাস কিভাবে ঢাকা ব্যাংকের মালিক বনে যেতে পারেন। তার ছোট ভাই কোন কোন এলাকার চাঁদাবাজিতে সর্বদাই সক্রিয়। কিভাবে রেলে জমি দখল করে মির্জা আব্বাস বড় নেতা! মির্জা ফখরুলের এলকায় কিভাবে আওয়ামি পূনর্বাসন হচ্ছে দেদারছে।
এই সময়ের তরুণ প্রজন্ম কিন্তু আগের দিনের মতো অন্ধ নয়- এই বিষয়টি মির্জা গংদের ক্যালকুলেশনে আছে বলে আমার মনে হয় না। তারা বিগত বছর গুলোতে যেমন আওয়ামীলীগের অপকর্ম সমুহ প্রত্যক্ষ করেছে, পাশপাশি মির্জাদের অক্ষমতা, অযোগ্যতাকে গুনতিতে নিয়েছে। মির্জা গং যদি মনে করেন যে আওয়ামিলীগ জনগনের ধাওয়া খেয়ে মাঠ ছেড়ে চলে গিয়েছে বিধায় তাদের শূণ্যস্থান তারা পূরণ করবেন, তাহলে তারা ভুলের মধ্যে বসবাস করছেন।
তৃণমূল পর্য্যায়ে বিএনপির কর্মী আর মির্জা গং কিন্তু এক নয়। তৃণ মূল কর্মিগন বিগত ১৭ বছর যে পরিমান মামলা হামলায় যর্যরিত হয়েছে, কষ্ট সহ্য করেছে, মির্জা গং তার বিন্দুমাত্র কষ্ট সহ্য করেনি। আজ তারা তাঁদের চাঁদাবাজি টেন্ডার বাজি দূর্নীতির রাজনীতি বন্ধ হবার উপক্রম হচ্ছে দেখে হাত কামড়ানো শুরু করেছে। এই দেশের মানুষ অনেক কষ্ট সহ্য করেছে, আর এমন অরাজকতা, দুশাসন সহ্য করতে রাজী নয়। তাদের এহেন কথা বার্তার কারণে বিএনপি তার নিরব সমর্থকদের সমর্থন হারাচ্ছে।
বিগত ১৭ বছর তারা একটি বালুর ট্রাক সরাতে পারেনি, আন্দোলোন করে আওয়ামিলীগের একটা পশমও ছিড়তে পারেনি, বরং বাজারে প্রচলিত আছে যে তারা বড় বড় নেতারা আওয়মিলীগ থেকে মোট মোটা অংকের অর্থ পেয়ে নিজেদের আখের গুছিয়েছেন।
সুতরাং এই জুলাই এর বিজয় জনগনের বিজয়। এই বিজয়ে বিএনপি-র কোন ভাগ নাই, কিন্তু তারা এখন এই বিজয়ের বড় বেনিফিশিয়ারী হতে মরিয়া। কিন্তু তারা এটা জানে না যে, ১৭ বছরে এই দেশের মানুষ অনেক ডিজিটালাইজড হয়েছে। সেই সময়ের শিশু কিশোর আজ তরুণ হয়েছে, কিন্তু এই তরুনদের ভেতরে বিএনপি-র কোন চেতনার বিকাশ ঘটেনি। তারা বিএনপি বলতে বোঝে কেচি গেটের ভিতরে চাদর মুড়ি দিয়ে বসে থাকা বয়স্ক রিজভীকে। বিএনপি বলতে তারা বোঝে আন্দোলোনের নামে মিথ্যা আশ্বাস ও ফাঁকা বুলি আওড়ানো মির্জা ফখরুল। মির্জা আব্বাসকে তো কোন আন্দোলোনেই দেখা যায় নাই। আজ কত কত নেতা বিএনপির ব্যানারে কত রং চঙে কথা বলে।
হাসিনা ১৭ বছরে যেভাবে তার গদি রক্ষার্থে তার বিশ্বস্ত সব পোশা আর্মি র্যাব প্রশাসন বিডিআর দিয়ে গুম খুন করেও তার গদি টিকিয়ে রাখতে পারে নাই, আফসোস যে মির্জা গং এর থেকে কোন শিক্ষাই গ্রহণ করে নাই। তাদের বর্তমান আচরণ আর বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আচরণের মধ্যে কোন তফাত এই নতুন প্রজন্মের চোখে পড়ে না।
সুতরাং বিএনপি-র বড় বড় নেতাদেরকে বলি ঐ পুরাতন জং ধরা মান্ধাত্তার আমলের ধ্যান ধারণা আর জমিদারি কায়দায় দেশকে শোসনের মানসিকতা পরিহার করে সাধারণ জনগনকে ভালো কিছু দেয়ার মানসে যদি রাজনীতি করতে পারেন, তবে মাঠে থাকুন, নচেৎ মান সম্মান যেটুকু আছে, সেটুকুও হারাতে হতে পারে হাটুর বয়সি পোলাপানের হাতে।
ছবি- অন্তর্জাল হইতে সংগৃহিত।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:২৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




