অনলাইন গণমাধ্যমগুলোকে একটি নীতিমালার আওতায় আনতে সরকার আগামী অক্টোবরের মধ্যে এর খসড়া চূড়ান্ত করবে বলে জানিয়েছেন তথ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন। অনলাইন গণমাধ্যমের লাইসেন্স নেওয়ার জন্য এককালীন পাঁচ লাখ টাকা তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। প্রতিবছর ৫০ হাজার টাকা ফি দিয়ে এই লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। সরকার প্রয়োজনে লাইসেন্স ফি পুনর্নিধারণ করতে পারবে। মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩০ দিন আগে লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করতে হবে। কোনো কারণে নির্দিষ্ট সময়ে লাইসেন্স নবায়নে ব্যর্থ হলে পাঁচ হাজার টাকা সারচার্জ জমা দিয়ে সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে। আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত ফরমে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে পাঁচ হাজার টাকার অফেরতযোগ্য ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার জমা দিয়ে আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। “আবেদনের সঙ্গে ‘আর্নেস্টমানি’ বাবদ অফেরতযোগ্য দুই লাখ টাকা ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার জমা দিতে হবে। লাইসেন্স পাওয়ার পর এ আর্নেস্টমানি জামানত হিসেবে গণ্য হবে।” খসড়ায় বলা হয়, কোনো অনলাইন গণমাধ্যমের মালিক বা পরিচালক সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে একাধিক অনলাইন গণমাধ্যমের মালিক বা পরিচালক হতে পারবেন। সরকারের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে, বিটিআরটির দেওয়া শর্ত ভাঙলে, নীতিমালার শর্ত ভাঙলে এবং সরকারের নির্দেশ না মানলে লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করা হবে। এছাড়া অনলাইনে সম্প্রচারিত বিষয় (কনটেন্ট) ৯০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে নীতিমালার খসড়ায়। সচিব বলেন, “সরকারি হিসাবে সারাদেশে ২০০ অনলাইন সংবাদপত্র রয়েছে। তবে অনলাইন সংবাদ মাধ্যম পরিচালনার জন্য এখন দেশে কোনো আইন, নীতিমালা বা অধ্যাদেশ নেই।” দৈনিক পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণের বিষয়ে ‘সিদ্ধান্ত’ নিতে আলাদাভাবে আলোচনা করা হবে বলে হেদায়েতুল্লাহ জানান।
নির্বাচনের আগে মানুষের রোধ করতেই এমন পায়তারা। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কিছু বললে পাচ্ছে জামাত শিবিরের সার্টিফিকেট। মানুষ যদি প্রতিবাদী হয় তবে তাকে করা হচ্ছে গুম, র্যাব নামের ফোর্সটিকে ব্যাবহার করা হচ্ছে যাচ্ছেতাই। সরকার নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে একটার পর একটা নতুন নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে চলেছে। তারা মোটামোটি নিশ্চিত যে মানুষ এখন অনলাইন নির্ভর হয়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। তাই মানুষ অনেক বেশি জানতে পারে এই সকল অনলাইন নিউজের কারনে যারা নিউজ অনেক সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রকাশ করে। তারা যে ধরনের নীতিমালা প্রনয়ন করতে যাচ্ছে এখানে স্পষ্টভাবেই বুঝা যায় যে গন-মাধ্যমগুলোর গলায় দড়ি বেধে একটা ঘন্টা বেধে দিলেই তারা চুপচাপ ভাল ছেলের মত ব্যবহার করবে। যেহেতু দড়ির মাথা তাদের হাতে। যারা বিদেশ থেকে অনলাইন সংবাদপত্র চালায় তাদের কি হবে? তারা ক্রমেই বাকশালের এক নবরুপ প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। এই সমাজে এখন অপরাধের কোন সাজা হয়না। আর যে সমাজে অপরাধের বিচার হয় না সেখানে একটার পর একটা অপরাধের মাত্রা বাড়তেই থাকবে এটাই নিয়ম। যার বাস্তব প্রমান বর্তমানের আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। আর রাজধানীর বাইরের মানুষ এবং বর্হিবিশ্বের যত বাঙ্গালী আছে তারা এখন টিভি নিউজের চাইতে অনেকটাই অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়েছে। তাই এই মাধ্যম এখন তাদের কাছে চোখরাঙ্গানীর মত লাগছে বলেই এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। অবশ্য এতে কারো কারো যে লাভ হবেনা তা নয়। লাভ হবে সেই সব পুঁজিবাদী গন-মাধ্যমগুলোর যারা তাদের প্রভুদের খুশি করে থাকবে এবং যে পরিমান টাকার কথা লাইসেন্স হিসেবে নেয়া হবে তাকে প্রভুদের পান ছিগাড়েটের বিল হিসেবে মনে করবে। অর্থাৎ তাদের প্রতিযোগী কম থাকলে যে একচেটিয়া ব্যবসা করা যায়। অনলাইন গণমাধ্যম স্থাপন ও পরিচালনায় তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে সভাপতি করে ১৪ সদস্যের ‘জাতীয় রেগুলেটরি কমিটি’ এবং মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবকে (সম্প্রচার) সভাপতি করে নয় সদস্যের আরো একটি তদারকি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে এতে। এখন দড়ি নিয়ে তাদের দৌড়াদৌড়ি শুরু হবে কার গলায় কোন ঘন্টা আগে পড়ানো যায়। এরপর হয়তো সরকার ব্লগ চালানোর জন্য নিয়মনীতি চালু করতে পারে। পৃথিবীতে গন-মাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার চাইতে আর বড় কোন মানবাধীকার লঙ্ঘনের উদাহরন হতে পারেনা। আর আমাদের বর্তামান সরকার সেই পদক্ষেপই নিতে যাচ্ছে। যতই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করা হোক না কেন ফলাফল শুন্যই হবে। কেননা অত্যাচারী যতই শক্তিশালী হোক না কেন তার স্থায়ীত্ব্য খুবই কম।