ছোটবেলায় বাবার সাথে দাবা খেলতাম। অফিস থেকে এসেই বাবা বলতেন--"কই রে! বোর্ড পাতা, একদান খেলি!"। আমি হন্তদন্ত হয়ে বোর্ড সাজাতে বসতাম। সব গুটিই ঠিকঠাক সাজাতাম, কিন্তু মন্ত্রী আর রাজা'কে বসাতে গিয়ে প্রায়ই গরমিল হয়ে যেত। বাবা এসে ঠিক করে দিতেন। শুরু হত তুমুল লড়াই। খেলা কিছুদূর এগোতেই দেখা যেত আমার মন্ত্রী গায়েব। বাবা খেয়ে ফেলেছেন। মন্ত্রী হারিয়ে আমার কাজ হত খেলায় হেরে যাবার জন্য অপেক্ষা করা আর হেরে যাবার পর কেঁদে কেঁদে বাবাকে বলা--"বাবা, আরো একদান খেলব!!"। বাবা হাসিমুখে আবার খেলা শুরু করতেন। আমি পরিস্কার বুঝতে পারতাম-এবার তিনি আমাকে জেতানোর জন্য খেলছেন। আমার সবসময়ই লক্ষ্য থাকত কিভাবে বাবা'র মন্ত্রী খাবো!! মন্ত্রী খেলেই খেলা শেষ! নিশ্চিত জয়-কে ঠেকাবে? মন্ত্রীর ক্ষমতা সম্পর্কে আমার এমনই উচ্চ ধারণা হয়ে গিয়েছিল। সেই বয়সেই আমি জানতাম, মন্ত্রী'র আছে সবকিছু করার ক্ষমতা, যে কোনো জায়গায় যাবার ক্ষমতা।
দাবার বোর্ডে একপক্ষের একজন মন্ত্রী থাকে। আমাদের দেশের মন্ত্রী সংখ্যা অনেক। সবার হাতেই আলাউদ্দিনের একটা করে চেরাগ। সেই চেরাগ দিয়ে যা খুশি তাই করতে পারেন তারা। পত্র-পত্রিকায় দেখি মন্ত্রীরা না দেখে, না বুঝে ফাইল সই করে দিচ্ছেন! দেশের ভাল-মন্দ চিন্তা না করেই করে ফেলছেন নানা রকম চুক্তি। কিন্তু এমন তো হবার কথা ছিল না! আমাদের আশা--মন্ত্রীরা কোনো ফাইল সই বা চুক্তি করার আগে শতবার ভাববেন আর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে কাজগুলোর কথা ভুলে যাবেন না। তবেই না দেখা যাবে সোনালী দিনের সূচনা!
আমরা কেন পারব না!! আমরা যে কোনো দেশের মানুষের চেয়ে বেশি ভদ্র, বেশি আন্তরিক, বেশি সাহসী, বেশি কর্মঠ। আমাদেরও হাত আছে, আমরা যে কোনো কাজ সৎভাবে করতে পারি। আমাদের পা আছে, উন্নয়নের রাস্তায় আমরাও হেঁটে যেতে পারি অনেক অনেক দূর!! আমাদের চোখ আছে, এ চোখের সামনে কোনো অন্যায় আমরা হতে দেবো না! আমাদের কান আছে, আমরা শুনবো না আর কোনো হত্যা-নির্যাতনের কাহিনী।
মন্ত্রীরা আমাদের হয়ে মিথ্যা, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়বেন। পক্ষপাত, অসততা নামের প্রতিপক্ষগুলো যেন আমাদের মন্ত্রীদের খেয়ে ফেলতে না পারে!!
আলোচিত ব্লগ
গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ
একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন
কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।
ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ
মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!
বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন