প্রথম পর্ব : Click This Link
স্কুলের নতুন একাডেমিক বিল্ডিং উদ্বোধনের পর মান্যবার রাষ্ট্রদূত মীর্জা শামসুজ্জামানের সাথে ২০০৪-৫ এর ইসি মেম্বারগণ ডান দিক থেকে যথাক্রমে
স্কুলের নিজস্ব জমিতে ফ্রি ভবন পেয়ে বিগত ১৫/১৬ বছরে ৭/৮টি কমিটি নেতাগিরী করেছেন ঠিকই কিন্তু স্কুল উন্নয়ন খাত রেখেছেন সম্পূর্ণ জিরো। অথচ আরো ছোট পরিসরে কম ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে ভাড়া করা বিল্ডিংএ স্কুল পরিচালনা করে উদ্যোক্তারা ভাল লাভবান হওয়ার অনেক ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। এটা একটা রেওয়াজে পরিনত হয়েছিল যে, স্কুল পরিচালনা কমিটির নির্বাচনের পূর্বে নানা রকম মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ভোট বাগিয়ে নেয়ার পর নিজেদের পছন্দের শিক্ষক নিয়োগ, অপছন্দের শিক্ষক ছাঁটাই, বিশাল অডিটরিয়ামে বছরে কয়েকটি প্রোগ্রামে স্যুট-টাই আর বক্ষদেশের এক পাশে ফুলেল ব্যাজ লাগিয়ে স্টেজে বসে নিজেদেরকে সামথিং স্পেশাল প্রমাণ করার কসরতই বেশী করেছেন। ভোট বাগিয়ে নেয়ার জন্য কখনো বইংগা-চাটগাঁইয়া ইস্যু, কখনো আওয়ামী আতংক, কখনো বিএনপি আতং আবার কখনো জামায়াত আতংক কাজে লাগানো হতো। আবার কখনো অভিভাবকদের বোকা বানিয়ে ইস্যু বানানো হতো এই বলে- বিগত কমিটিগুলো স্কুলটিকে কলেজ নামকরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন, এবার আমরা ক্ষমতা পেলে এটিকে 'এস কে বি জেড বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজ' নামকরণ করব। অথচ তারা খুব ভাল করেই জানতেন যে, এসব দেশে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানকে স্কুলই বলে, এই আইন বদল করার কোন ক্ষমতা তারা রাখেন না। এসব শিক্ষিত নামের কলংকরা ভোট বাগানোর জন্য এমন বাটপারি করতেও লজ্জা বোধ করতেন না। এমন করতে করতে স্কুলের অবকাঠামোগত উন্নয়ন দূরে থাক, স্কুল ভাবনে রং লাগানো এবং ধ্বসে পড়া বাউন্ডারী ওয়াল পর্যন্ত মেরামত করতে পারেননি। বছরের পর বছর এভাবে মিথ্যা আশ্বাসে অতিষ্ট হতে হতে ২০০৪ এর ইসি নির্বাচনের পূর্বে একটি সুগভীর চক্রান্তের(?) মাধ্যমে ক্ষমতা লিপ্সু, তথাকথিত নেতাদের হটিয়ে একটি শিক্ষানুরাগী এবং সত্যিকার দেশপ্রেমী নেতৃত্বের হাতে ক্ষমতা অর্পিত হয়। তাঁরা এই স্কুলটির অভুতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করে স্কুলের ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন।
২০০৪-২০০৫ এর পরিচালনা কমিটি এবং স্কুলের যুগান্তকারী উন্নয়ন : মরুর দেশ, এদেশের মাটি ও বাতাসে রয়েছে যথেস্ট লবনাক্ততা। স্কুলের প্রায় ১২০০ ফুট লম্বা বাউন্ডারী ওয়াল লবনাক্ততার কবলে পড়ে প্রায় ভেঙ্গে ভেঙ্গে ঝড়ে পড়তেছিল, স্কুল একাডেমিক বিল্ডিংএর দেয়ালগুলির রং ঝরে যাচ্ছিল এবং বেশ কয়েক স্থানে রঙের প্রলেপের নিচে প্লাস্টার লবনাক্ততায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিরাট অডিটরিয়ামের এ/সি গুলি নষ্ট হয়ে যায়। স্কুলের প্রধান তোড়নটিও নষ্টের খাতায় নাম লেখিয়েছিল। সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল, ততদিনে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী বৃদ্ধি পাওয়াতে দুই সিফ্টে স্কুল চালানো হতো। মেয়েরা মর্ণিং এবং ছেলেরা ইভিনিং শিফ্টে ক্লাশ করতে গিয়ে ছেলেরা, ওদের অভিভাকবৃন্ধ এবং সম্মানীত শিক্ষক শিক্ষিকাগণ ভোগান্তিতে পড়ে যান। স্কুলের ট্রান্সপোর্টেশনেও চাহিদারতুলনায় যানবাহনের পরিমান ছিল কম। এসব সমস্যা সমাধান কল্পে একটি একাডেমিক বিল্ডিং সহ যাবতীয় উন্নয়ন কাজের জন্য প্রয়োজন প্রায় দেড় থেকে দুই মিলিয়ন দেরহাম। এত অর্থ কে দেবে? স্কুলের ফান্ডে জনতা ব্যাংক আবুধাবী শাখার একাউন্টে প্রায় ১১/১২ লাখ দেরহাম জমা থাকলেও ওসব অর্থ স্কুল উন্নয়নের কাজে লাগানো যাচ্ছে না। কারণ ওগুলো টিচার্স-স্টাফদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ। ২০০৪-২০০৫ এর পরিচালনা কমিটি স্কুলের উক্ত সমস্যা গুলো সমাধা করে এটিকে নবজন্ম দান করেছিল বললে বাড়িয়ে বলা হবে না।
শেখ খলিফা বিন যায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুলের নিভু নিভু আলোকে প্রজ্জলিত মশালে রূপদানের ইতিহাস লিখতে গেলে একজন সিদ্দিকুর রহমানকে সামনে আনতেই হয়। বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর চৌকস অফিসার, কমান্ডার সিদ্দিকুর রহমান। বাংলাদেশ দূতাবাস আবুধাবীর লেভার কাউন্সিলর। বলে রাখা ভাল, বাংলাদেশ সরকার সেনা,নৌ ও বিমান বাহিনী থেকে কিছু কিছু অফিসার পাঁচ বছরের জন্য পররাস্ট্র মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে দূতাবাস সমূহে নিয়োগ দিয়ে থাকেন। চারদলীয় জোট সরকারের সময় নৌবাহিনী থেকে সিদ্দিকুর রহমান সাহেবকে লেভার কাউন্সিলর হিসাবে আবুধাবীস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠানো হয়। বাংলাদেশ অ্যাম্বাসী থেকে যে দুইজন প্রতিনিধি এসকেবিজেড বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুলের ইসি মেম্বার হিসাবে মনোনীত হয়ে থাকেন, পদাধিকার বলে তিনি এর অন্যতম।
চলবে...............
শেখ খলিফা বিন যায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল, আবুধাবী (পর্ব ২)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি
মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন
=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=
০১।
=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।
পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।
জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সমস্যা মিয়ার সমস্যা
সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।
তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন