ছোটবেলায় সবারই কিছু কিছু শখ বা ইন্টারেস্ট থাকে।কেউ যেমন কয়েন কালেক্ট করে কেউ বা ছাদে বাগান করে কেউ বা স্টাম্পস কালেক্ট করে মোদ্দা কথা ভিন্ন ভিন্ন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন ইন্টারেস্ট থাকে।খেলাধুলা মিউজিক বই পড়ার পাশাপাশি আমার একটা বিষয়ে খুব ইন্টেরেস্ট ছিলো আমাদের সময়কার তারকাদের অটোগ্রাফ কালেক্ট করা।সেটা ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রের হলেও সবাই মোটামুটি তারকা হিসেবে পরিচিত।এরকম তারকাদের অটোগ্রাফ নিতে গিয়ে কিছু মজার ঘটনা শেয়ার করবো আজকে। ঠিক কার অটোগ্রাফ সবার আগে নিয়েছিলাম মনে করতে পারছি না তবে এর মাঝে মজার গুলোর কথাই বলবো।
রাজিবঃবাংলাদেশর সিনেমার ইতিহাসে শক্তিমান খলনায়ক।৯৬ এর অসহোযোগ আন্দোলনের সময় নয়া পল্টনে বিএনপির হেড অফিসের সামনে বিএনপি বানাইলো গনতন্ত্রের মন্ঞ্চ আওয়ামীলিগের প্রেসক্লাবের সামনে করা জনতার মন্ঞ্চের আদলে।সেখানে সারাদিন গান হতো ভাষন দিতো ঐ দলের নেতারা।যাই হোক একদিন বিকেল বেলায় ক্রিকেট না খেলে বন্ধুরা ঐখান দিয়া ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম।দেখি রাজিব সেখানে ।বন্ধু রিকুরে কইলাম ওর অটোগ্রাফ নিমু সে বলে দুর বাদ দে।আমি কইলাম না দোস্ত দাড়া একটা দোকান থেকে একটু কাগজ নিয়া গেলাম বললাম আংকেল অটোগ্রাফ প্লিজ।সে কাগজ কলম নিয়া যা লিখলো দেখে আমি তো টাস্কি।কি লিখছিলো জানেন? আমরা সবাই জিয়া হবো যাইহোকক সামনে তো আর কিছু বলা যাবেনা ।সে লিখতে লিখতে আবার নেতা কর্মীদের বলছিলো ম্যাডামকে বলেন আমাকে বরিশালে নমিনেশন দিতে একদম জিতে আসবো।মনে মনে আমি কই ব্যাটা জাহান্নামে যা
আজম খানঃমতিঝিল সেন্ট্রাল গভঃ হাইস্কুল মাঠে বা এজিবি কলোনিতে ক্রিকেট খেলে সন্ধ্যায় প্রায় কমলাপুর রেল স্টেশানের ঐ দিকে রেস্টুরেন্টে খেতে যেতাম।প্রায় বিকেলে দেখতাম বাংলা ব্যান্ডের গুরু আযম খান ঐ দিক দিয়ে ঘুরে বেড়াতো।একদিন অটোগ্রাফ চাইলাম উনি লিখলেন মানিক আমার সাগর মনে এইটা আমার নেওয়া সেরা অটোগ্রাফ
শহীদ আফ্রিদিঃ ৯৭ সালে এই ফাকিটা যখন ৩৭ বলে ১০০ করেছিলো কেনিয়ার বিরুদ্ধে এর কিছুদিন পরেই ঢাকায় আসলো করাচি ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই দলের হয়ে খেলতে যতোদুর মনে পড়ে বাংলাদেশ এ দলের বিরুদ্ধে।মহল্লার এক বড় ভাইয়ের কাছে থেকে পেলাম ভিআইপি টিকেট সো সোজা ভিআইপি গ্যালারিতে।খেলা শেষে সোজা ওদের ড্রেসিং রুমে ঢুকে তার অটোগ্রাফ নিলাম।অভ্যাসবশত বলে ফেললাম টেলিফোন নাম্বার প্লিজ ফাইক্কাটা চেহারা এমন ভাব করলো মনে হয় আমি দুনিয়ার সব চেয়ে দামি জিনিষটা চাইছি তার কাছে।সে বললো নো টেলিফোন নাম্বার ।আমি কইলাম ইটস ওকে।
অরুনঃদীপু নাম্বার ২ মুভিটা আমি মনে হয় ৫থেকে ৭ বার দেখছি।আমার দেখা সেরা একটা মুভি।এর নায়ক অরুন।সোজা কথায় অরুনের পুরাই পান্খা আমি তখন।কেমনে ওরে মিট করা যায়?শুনলাম সিদ্ধেশরী থাকে কয়দিন যায়া ঘুরাঘুরি করলাম যদি দেখা পাই।বাট একদিন শুনলাম রমনা পার্কের চাইনিজ রেস্টুরেন্টে এই মুভির সবাই আসবে।গেলাম সেখানে এবং নিলাম তার অটোগ্রাফ।সাথে অন্যদেরও।
মোহাম্মদ রফিকঃ তখনকার বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার এই ক্রিকেটার।একদিন ধানমন্ডি আবাহনী মাঠে রফিকের অটোগ্রাফ নিলাম।সে বাম হাত দিয়া লিখছে তেমন ভালো হয়নাই।আমি ভাবলাম আবার নিমু।তো আবার বললাম ভাইয়া একটা অটোগ্রাফ দেন প্লিজ সেও দিলো।বাট সেম এস বিফোর আসলে পরে জেনেছি বেচারা পড়ালেখা তেমন একটা করে নাই তাই হাতে লেখা ঐরকম
হরি হরনঃ Colonial Cousins এর মেম্বার এবং হিন্দি মুভি সিংগারের সাথে দেখা হয়েছে সুইজারল্যান্ডে।একদিন সন্ধ্যা বেলায় ডিনারের আগে হোস্টেলের বাহিরে আড্ডা দিচ্ছিলাম।দেখি এই ভদ্রলোক হেটে যাচ্ছে।আমি দেখেই চিনে ফেললাম।সাঠে সাথে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম আপনি কি হরিহরন?উনি বলল ইয়েস।তারপর আরো অনেক কথা হলো।শেষে অটোগ্রাফ দিলো।
নোবেলঃ বাংলাদেশের সেরা মডেল নোবেল।আপনি কি জানেন নোবেল একজন ভালো ক্রিকেটারও।অফিস ক্রিকেট লীগ নামে একটা ক্রিকেট লীগ হতো তখন।নোবেল খেলতো পারটেক্সের হয়ে মনে হয়।ধানমন্ডি মাঠে নিছিলাম তার অটোগ্রাফ
জুয়েলঃ৯৬ সালের বই মেলা থেকে হুমায়ুন আহমেদের শুভ্র বইটা কিনে বের হচ্ছি দেখা হলো প্রিয় সংগীত শিল্পী জুয়েলের সাথে।শুভ্র বইটা বাড়িয়ে দিয়া অটোগ্রাফ চাইলাম সে বলল আরেকজনের বইয়ে আমি অটোগ্রাফ দেওয়া কি ঠিক হবে ?বললাম ভাইয়া কি করবো কাগজ নাই সাথে।কি আর করা সে দিলো অটোগ্রাফ
আরো অনেকেরই অটোগ্রাফ আমি নিয়েছি।হইতো পরে কোনোদিন লিখবো সেইসব নিয়া।
আমি আসিফ মহিউদ্দীন কে সেই দিন থেকে ব্যক্তিগতভাবে অপছন্দ করি, যেদিন সে পাকিস্তানি ফ্ল্যাগ লাগায় তার কাভারে। আমি তাকে গালিও দিয়েছি।সে আমাকে ব্লক করে ফেসবুকে ।তার এই আঘাতে আমার খুশি হবার কথা ছিলো, কিন্তু আমি সত্যি এখন বিষন্ন।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:২১