বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চার বছর মেয়াদি অনার্স কোর্সকে তিন বছর মেয়াদি করা এবং অতিরিক্ত এক বছর ডিপ্লোমা ও কারিগরি শিক্ষার সংযুক্তির পরিকল্পনা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলামের ঘোষণার মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়। এই সংস্কারের ফলে শিক্ষার্থীরা অনার্স ও ডিপ্লোমা—দুই ধরনের সার্টিফিকেট পাবে, যা তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগকে আরও বিস্তৃত করতে পারে।
পরিবর্তনের যৌক্তিকতা ও সম্ভাব্য সুফল
১. শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি: তিন বছর মেয়াদি অনার্সের পাশাপাশি এক বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ও কারিগরি শিক্ষার সংযুক্তি শিক্ষার্থীদের হাতে নির্দিষ্ট দক্ষতা ও বাস্তবিক জ্ঞান অর্জনের সুযোগ এনে দেবে। একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা থাকায় তারা চাকরির বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠবে।
২. চাকরির বাজারে অধিক গ্রহণযোগ্যতা: বর্তমান চাকরির বাজারে শুধু একাডেমিক ডিগ্রি থাকাই যথেষ্ট নয়, প্রযুক্তিগত ও কারিগরি দক্ষতাও গুরুত্বপূর্ণ। নতুন এই ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা একইসঙ্গে একাডেমিক ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করবে, যা দেশ-বিদেশে চাকরির সুযোগকে আরও সম্প্রসারিত করবে।
৩. বিদেশি শিক্ষাপ্রণালীর সাথে সামঞ্জস্য: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিন বছর মেয়াদি অনার্স ও এক বছর বিশেষায়িত কোর্স বা মাস্টার্সের প্রচলন রয়েছে। বাংলাদেশেও এই মডেল অনুসরণ করলে উচ্চশিক্ষার সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানের একটি সংযোগ তৈরি হবে।
সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ ও সমাধান
১. কার্যকারিতা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া:
নতুন শিক্ষাব্যবস্থার কার্যকারিতা নির্ভর করবে তার বাস্তবায়নের ওপর। যথাযথ কারিকুলাম, দক্ষ প্রশিক্ষক এবং মানসম্মত কারিগরি শিক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি।
২. শিক্ষার্থীদের মানসিক প্রস্তুতি:
দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত চার বছর মেয়াদি অনার্স সিস্টেমে অভ্যস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য এই পরিবর্তন মানিয়ে নেওয়া কঠিন হতে পারে। তাদের সচেতন করা এবং এই পরিবর্তনের সম্ভাব্য ইতিবাচক দিক তুলে ধরার জন্য ওরিয়েন্টেশন বা ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং ব্যবস্থা চালু করা উচিত।
৩. নতুন সিস্টেমের গ্রহণযোগ্যতা:
চাকরিদাতারা এই পরিবর্তন কতটা গ্রহণ করবেন তা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সরকার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্পোরেট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে নতুন শিক্ষাব্যবস্থার গুরুত্ব ও কার্যকারিতা তুলে ধরা প্রয়োজন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স কোর্সের এই নতুন মডেল শিক্ষার্থীদের জন্য এক সম্ভাবনাময় পরিবর্তন আনতে পারে। দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি, এটি শিক্ষার সঙ্গে বাস্তবজীবনের সংযোগ আরও দৃঢ় করবে। তবে, এই নতুন ব্যবস্থার সফল বাস্তবায়ন ও দীর্ঘমেয়াদি সুফল পেতে প্রয়োজন যথাযথ পরিকল্পনা, কাঠামোগত উন্নয়ন এবং সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


