somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে চলছে স্বেচ্ছাচারিতা আর সীমাহীন দূনীর্তি

১৭ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর ডিপো-সিএমএসডি) স্বাস্থ্যসেবা খাতের বিভিন্ন উপকরণ ও সামগ্রী ক্রয়ে নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন টেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতাকে বাদ দিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতাকে সরবরাহের আদেশ দিয়ে কেনা হচ্ছে মালামাল। পাশাপাশি কমদামের ওষুধ ও যন্ত্রপাতি কয়েকগুণ বেশি দামে কেনা এবং মানহীন চিকিৎসা সরঞ্জাম ও উপকরণ কেনার মাধ্যমে চলছে লুটপাট।

কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) শীর্ষ কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তাদের পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতে একদিকে যেমন কঠিন শর্ত জুড়ে দিচ্ছে, অন্যদিকে নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা আর দুর্নীতির আশ্রয় নিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সরাসরি এই কারসাজির সঙ্গে জড়িত। এর মাধ্যমে সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি টাকা। সরকার সমর্থক স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের নেতা ও সিএমএসডির কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে এই সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।বিগত স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রফেসার রুহুল হকের আশির্বাদপুষ্ট এই কর্মকর্তার অপকর্ম সম্পর্কে এর আগেও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সরকার সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠনের নেতা হওয়ায় ডা. আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

সিএমএসডি কার্যাদেশ দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো নীতির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। অভিযোগ পাওয়া গেছে, সিএমএসডি প্যাকেজ- জি ১৩৪৭এর আওতায় মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন দরপত্র গ্রহণে সর্বনিম্ন দর ছিল এক কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু এটি গ্রহণ না করে সর্বোচ্চ দরদাতাকে এক কোটি ৬০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় কার্যাদেশ দেয়া হয়। একইভাবে প্যাকেজ জি-১৩০৯ এর আওতায় সর্বনিম্ন দরপত্র বাতিল করে বেশি দর দেয়া দরপত্রটি গ্রহণ করা হচ্ছে।

জলাতঙ্ক রোধে এক লাখ ৫৫ হাজার ভ্যাকসিন কেনার জন্য সিএমএসডি প্যাকেজ জি-১৩০৯ এর আওতায় তিনটি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। রেনাটা দর দিয়েছিল সাত কোটি ৪৪ লাখ টাকা। অন্য দুই প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা এবং এস এস করপোরেশনের দর ছিল যথাক্রমে পাঁচ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ও ছয় কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে কাজটি পাওয়ার কথা ছিল ইনসেপ্টার, কিন্তু এক কোটি ৮৬ লাখ টাকা বেশি দর দিয়েও কাজটি পেয়ে গেছে রেনাটা।সিএমএসডির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, প্যাকেজ জি ১৩২৪ প্রিন্টিং মেটারিয়াল সরবরাহের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ না দিয়ে অনিয়ম ও কারচুপির মাধ্যমে প্রায় তিন কোটি টাকা বেশিতে অন্য প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়ার পাঁয়তারা চলছে। সিএমএসডি কার্যাদেশ দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো নীতির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে শুরু করে ২০১৩-১৪ অর্থবছর পর্যন্ত সিএমএসডির প্রায় ৭০ ভাগ কাজই পেয়েছে স্টারলিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান। অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সর্বনিম্ন দরদাতাকে পাশ কাটিয়ে উচ্চ দরে এ প্রতিষ্ঠানটিকেই কাজ দেয়া হচ্ছে। স্টারলিং নামের প্রতিষ্ঠানরি দরপত্র গ্রহণ ও কার্যাদেশ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে অন্যসব সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সরকারের কাছে তদন্তেরও দাবি জানিয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন সময় চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও অপ্রয়োজনীয় যন্ত্র ও সরঞ্জামাদি কেনারও অভিযোগ আছে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) বিরুদ্ধে।

বিশ্বব্যাংক ও জাইকাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার অর্থ সাহায্যের বিভিন্ন প্রকল্পে এইসব অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে লুটপাট করা হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এইসব অনিয়মের কারণে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে পাওয়া অর্থ সাহায্য প্রত্যাহারেরও আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকে।

এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমএসডির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম রসুল বলেন, ‘ক্রয় কমিটির যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমেই কার্যাদেশ দেয়া হয়ে থাকে সর্বনিম্ন দরদাতারা প্রি-কোয়ালিফিকেশনে টিকছে না, ফলে সর্বোচ্চ দরদাতাকে কাজ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আর অন্য কোনো কারণ নেই। নিয়ম মেনেই এখানে কার্যাদেশ দেয়া হচ্ছে।’

এ বিষয়ে তিনি আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে না পারার কষ্টটা সমালোচনার কোন বিষয়বস্তু নয়

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬

গতকালের একটি ভাইরাল খবর হচ্ছে কয়েক মিনিটের জন্য বিসিএস পরীক্ষা দেয়া হলো না ২০ প্রার্থীর !! অনেক প্রার্থীর কান্নাকাটির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান এর নিয়ামানুবর্তিতার জ্ঞান বিতরনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×