কেমন আছেন নূর হোসেন? আমি নারায়নগঞ্জের ৭ খুনের আসামী নূর হোসেনের কথা বলছি না।আমি বলছি আমাদের নূর হোসেনের কথা। দেশের ১৬ কোটি গনতন্ত্রপ্রিয় মানুষের সহদর শহীদ নুর হোসেনের কথা।যে নূর হোসেন ২৪ পেরিয়ে আর ২৫ এ পদার্পন করতে পারেনি। ’৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে স্বৈরাচার এরশাদের তপ্ত বুলেট যার বয়সটা ২৪শেই থামিয়ে দিয়েছিল আজীবনের জন্য।বুকে পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গনতন্ত্র মুক্তি পাক’ সে জীবন্ত পোষ্টার নুর হোসেনের কথা। পেশায় একজন মোটর শ্রমিক হয়ে সেদিন নূর হোসেন এসেছিলেন গনতন্ত্রের পক্ষের কাতারে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে। সবাই মিছিলে যায়, মিছিলে আসে।নূর হোসেনও এসেছিল।সবার হাতে ব্যানার, পোষ্টার, প্লেকার্ড কিন্তু নূর হোসেনের সামর্থ ছিলনা একটা পোষ্টার বানানোর। তাই নিজেই জীবন্ত পোষ্টার বনে গিয়েছিলেন।
নূর হোসেনের রাজনৈতিক মতাদর্শ কি ছিল, তা বিবেচনা করছিনা, বিবেচনা করছি নূর হোসেন সেদিন যে মিছিলে শরীক হয়ে গনতন্ত্রের জন্য জীবন উতসর্গ করেছিলেন সে মতাদর্শের কথা। আর তা বিবেচনা করলে আমি, আপনি, আমরা সবাই নূর হোসেনের দলের লোক। ১০ নভেম্বর ১৯৮৭ এ নূর হোসেনের প্রান বিসর্জন এবং এর আগে পরে এরকম অসংখ্য নূর হোসেনের প্রাণের বিনিময়ে যখন ০৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচারী হোমো এরশাদ পদত্যাগ করে তখন আমরা ভেবেছিলম নূর হোসেনরা জিতেছে। নূর হোসেনদের আত্মারা শান্তি পাচ্ছে। এরশাদ যখন জেলে ছিল তখন ভাবছিলাম নূর হোসেন যে গনতন্ত্রের জন্য প্রাণ দিয়েছে আজ জীবন্ত নূর হোসেন সে গনতন্ত্রের স্বাদ নিতে না পারলেও তার আত্মা মুক্ত বিহঙ্গে গনতান্ত্রিক পরিবেশে আমাদের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
পৃথিবীর অন্যান্য স্বৈরশাসকদের মতো এরশাদের ফাঁসি হবে, ফায়ার স্কোয়ার্ডে এরশাদের মৃত্যু হবে এটাই জাতীর প্রত্যাশা ছিল। আর সে প্রত্যাশা অনুযায়ী এরশাদকে বিচারের আওতায় আনাও হয়েছিল। তারপর জানিনা কোন অদৃশ্য হাতের ইশারায় ০৯ জানুয়ারী ’৯৭ সনে এরশাদ জেলখানা থেকে বেরিয়ে আসেন। যারা নূর হোসেনকে এরশাদ স্বৈরাচারী আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রামে উদ্বোদ্ধ করেছিলেন পরবর্তীতে এরশাদ তাদের সহচর হয়ে গেল। নূর হোসেন আবার বেওয়ারীশ হয়ে গেল, যেমনিভাবে বেওয়ারীশ হয়েছিলেন ১০ নভেম্বর রক্ত দিয়ে জুরাইন বেওয়ারীশ কবরস্থানে সমাহিত হয়ে।
নূর হোসেনের নামে গুলিস্থান জিরো পয়েন্টে একটি স্কোয়ার নির্মান করা হলেও নব্য স্বৈরাচারের চর দখলের মত দেশের গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠান, ঐতিহাসিক স্থাপনা শহীদ মিনার দখল হওয়ার মত তা আজ দখল হয়ে গেছে। আজ নূর হোসেন স্কোয়ারে নব্য স্বৈরাচার শেখ হাসিনার এ পোট্রেট এবং তার দলের অংগ সংগঠনের পোষ্টার দেখলে যে কেউ হয়তো মনে করতে পারেন এটি নূর হোসেন স্কোয়ার না বরং শেখ হাসিনা স্কোয়ার। গনতন্ত্রের নামে স্বৈরাচারের এ আস্ফালন দেখে নূর হোসেনের আত্মা-মন আজ ভীষন খারাপ।আর এরশাদের সাথে শেখ হাসিনার দহরম মহরম দেখে নূর হোসেনের আত্মা ভাবছে কেন আমাকে ২৪ শে থামিয়ে দিলে। গনতন্ত্রের নামে তোমাদের ক্ষমতাতন্ত্রের মিছিলে আমি যদি সেদিন যোগ না দিতাম তাহলে আমি বেচে যেতাম, বেচে থাকতাম। আজ আমি যদি বেচে থাকতাম তাহলে আমার বাবাকে অর্থকষ্ট আর অনটনে রোগ শোকে এত তাড়াতাড়ি চলে যেতে হতোনা, আর বৃদ্ধ মা কে আজ দু মুঠো ভাতের জন্য অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতোনা।
এতো হয়তো গনতন্ত্র শহীদ নূর হোসেনের বিদেহী আত্মার কষ্ট, আক্ষেপ। আর আমরা যারা অসংখ্য নূর হোসেনরা মৃত্যু মিছিল থেকে ফিরে এসেছিলাম তাদের বিবেকীয় প্রশ্ন ভাষা সৈনিক হয়েও আজ শহীদ মিনার যদি গোলাম আযমদের জন্য নিষিদ্ধ হতে পারে, তাহলে আজ নূর হোসেন স্কোয়ার নব্য গোলাম আযম গনতন্ত্র যুদ্ধের রাজাকার শেখ হাসিনা এবং তার সাঙ্গোপাঙ্গোদের জন্য নিষিদ্ধ না হয়ে শেখ হাসিনা স্কোয়ারে পরিনত হলো কেন? অন্তত নূর হোসেন স্কোয়ারে শেখ হাসিনার এ বিশাল পোট্রেটটি দেখে চেতনা জ্বরে আক্রন্তরা কিছু সময়ের জন্য চৈতন্য ফিরে একবারও কি বলতে পারলোনা, এটা কি নূর হোসেন স্কোয়ার, না শেখ হাসিনা স্কোয়ার?
Moniruzzaman Manikকেমন আছেন নূর হোসেন? আমি নারায়নগঞ্জের ৭ খুনের আসামী নূর হোসেনের কথা বলছি না।আমি বলছি আমাদের নূর হোসেনের কথা। দেশের ১৬ কোটি গনতন্ত্রপ্রিয় মানুষের সহদর শহীদ নুর হোসেনের কথা।যে নূর হোসেন ২৪ পেরিয়ে আর ২৫ এ পদার্পন করতে পারেনি। ’৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে স্বৈরাচার এরশাদের তপ্ত বুলেট যার বয়সটা ২৪শেই থামিয়ে দিয়েছিল আজীবনের জন্য।বুকে পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গনতন্ত্র মুক্তি পাক’ সে জীবন্ত পোষ্টার নুর হোসেনের কথা। পেশায় একজন মোটর শ্রমিক হয়ে সেদিন নূর হোসেন এসেছিলেন গনতন্ত্রের পক্ষের কাতারে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে। সবাই মিছিলে যায়, মিছিলে আসে।নূর হোসেনও এসেছিল।সবার হাতে ব্যানার, পোষ্টার, প্লেকার্ড কিন্তু নূর হোসেনের সামর্থ ছিলনা একটা পোষ্টার বানানোর। তাই নিজেই জীবন্ত পোষ্টার বনে গিয়েছিলেন।
নূর হোসেনের রাজনৈতিক মতাদর্শ কি ছিল, তা বিবেচনা করছিনা, বিবেচনা করছি নূর হোসেন সেদিন যে মিছিলে শরীক হয়ে গনতন্ত্রের জন্য জীবন উতসর্গ করেছিলেন সে মতাদর্শের কথা। আর তা বিবেচনা করলে আমি, আপনি, আমরা সবাই নূর হোসেনের দলের লোক। ১০ নভেম্বর ১৯৮৭ এ নূর হোসেনের প্রান বিসর্জন এবং এর আগে পরে এরকম অসংখ্য নূর হোসেনের প্রাণের বিনিময়ে যখন ০৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচারী হোমো এরশাদ পদত্যাগ করে তখন আমরা ভেবেছিলম নূর হোসেনরা জিতেছে। নূর হোসেনদের আত্মারা শান্তি পাচ্ছে। এরশাদ যখন জেলে ছিল তখন ভাবছিলাম নূর হোসেন যে গনতন্ত্রের জন্য প্রাণ দিয়েছে আজ জীবন্ত নূর হোসেন সে গনতন্ত্রের স্বাদ নিতে না পারলেও তার আত্মা মুক্ত বিহঙ্গে গনতান্ত্রিক পরিবেশে আমাদের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
পৃথিবীর অন্যান্য স্বৈরশাসকদের মতো এরশাদের ফাঁসি হবে, ফায়ার স্কোয়ার্ডে এরশাদের মৃত্যু হবে এটাই জাতীর প্রত্যাশা ছিল। আর সে প্রত্যাশা অনুযায়ী এরশাদকে বিচারের আওতায় আনাও হয়েছিল। তারপর জানিনা কোন অদৃশ্য হাতের ইশারায় ০৯ জানুয়ারী ’৯৭ সনে এরশাদ জেলখানা থেকে বেরিয়ে আসেন। যারা নূর হোসেনকে এরশাদ স্বৈরাচারী আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রামে উদ্বোদ্ধ করেছিলেন পরবর্তীতে এরশাদ তাদের সহচর হয়ে গেল। নূর হোসেন আবার বেওয়ারীশ হয়ে গেল, যেমনিভাবে বেওয়ারীশ হয়েছিলেন ১০ নভেম্বর রক্ত দিয়ে জুরাইন বেওয়ারীশ কবরস্থানে সমাহিত হয়ে।
নূর হোসেনের নামে গুলিস্থান জিরো পয়েন্টে একটি স্কোয়ার নির্মান করা হলেও নব্য স্বৈরাচারের চর দখলের মত দেশের গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠান, ঐতিহাসিক স্থাপনা শহীদ মিনার দখল হওয়ার মত তা আজ দখল হয়ে গেছে। আজ নূর হোসেন স্কোয়ারে নব্য স্বৈরাচার শেখ হাসিনার এ পোট্রেট এবং তার দলের অংগ সংগঠনের পোষ্টার দেখলে যে কেউ হয়তো মনে করতে পারেন এটি নূর হোসেন স্কোয়ার না বরং শেখ হাসিনা স্কোয়ার। গনতন্ত্রের নামে স্বৈরাচারের এ আস্ফালন দেখে নূর হোসেনের আত্মা-মন আজ ভীষন খারাপ।আর এরশাদের সাথে শেখ হাসিনার দহরম মহরম দেখে নূর হোসেনের আত্মা ভাবছে কেন আমাকে ২৪ শে থামিয়ে দিলে। গনতন্ত্রের নামে তোমাদের ক্ষমতাতন্ত্রের মিছিলে আমি যদি সেদিন যোগ না দিতাম তাহলে আমি বেচে যেতাম, বেচে থাকতাম। আজ আমি যদি বেচে থাকতাম তাহলে আমার বাবাকে অর্থকষ্ট আর অনটনে রোগ শোকে এত তাড়াতাড়ি চলে যেতে হতোনা, আর বৃদ্ধ মা কে আজ দু মুঠো ভাতের জন্য অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতোনা।
এতো হয়তো গনতন্ত্র শহীদ নূর হোসেনের বিদেহী আত্মার কষ্ট, আক্ষেপ। আর আমরা যারা অসংখ্য নূর হোসেনরা মৃত্যু মিছিল থেকে ফিরে এসেছিলাম তাদের বিবেকীয় প্রশ্ন ভাষা সৈনিক হয়েও আজ শহীদ মিনার যদি গোলাম আযমদের জন্য নিষিদ্ধ হতে পারে, তাহলে আজ নূর হোসেন স্কোয়ার নব্য গোলাম আযম গনতন্ত্র যুদ্ধের রাজাকার শেখ হাসিনা এবং তার সাঙ্গোপাঙ্গোদের জন্য নিষিদ্ধ না হয়ে শেখ হাসিনা স্কোয়ারে পরিনত হলো কেন? অন্তত নূর হোসেন স্কোয়ারে শেখ হাসিনার এ বিশাল পোট্রেটটি দেখে চেতনা জ্বরে আক্রন্তরা কিছু সময়ের জন্য চৈতন্য ফিরে একবারও কি বলতে পারলোনা, এটা কি নূর হোসেন স্কোয়ার, না শেখ হাসিনা স্কোয়ার?
Moniruzzaman Manik
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫১