somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের আদিবাসী ভাষা পরিচিতি (১ম কিস্তি)

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে বসবাসকারী আদিবাসীদের ভাষা বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে পৃথিবীর অন্যতম ৪টি ভাষা পরিবারের প্রায় ৩০টি ভাষা রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ ভাষা পৃথক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হলেও কয়েকটি ভাষা পরস্পর এতটা ঘনিষ্ঠ যে এগুলোকে উপ-ভাষিক বৈচিত্র্য বলা যায়। যেমন তঞ্চঙ্গা মূলত চাকমা ভাষাই উপভাষা। অনুরূপ রাখাইন মারমা ভাষার, লালং বা পাত্র গারো ভাষার এবং বিষ্ণুপ্রিয়া মনিপুরী এবং হাজং বাংলা ভাষার উপভাষা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। আর সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আদিবাসী ভাষা সংখ্যা হচ্ছে ২৬টি। যদিও একটি ওয়েবসাইটে বাংলাসহ মোট ৩৭টি ভাষার নাম উলেখ করা হয়েছে। এখানে উলেখ্য যে উক্ত ওয়েব সাইটে আসামিজ, বার্মিজ, চিটাগানিয়ান, হাকা-চীন, রিয়াঙ, সিলেটি প্রভৃতিকে পৃথক পৃথক ভাষা হিসেবে দেখানো হয়েছে-যা গ্রহণযোগ্য নয়।

জর্জ গ্রিয়ারসনের লিঙ্গুইজটিকস সার্ভে অব ইন্ডিয়া প্রকাশিত হবার পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এ অঞ্চলের আদিবাসী ভাষা নিয়ে উলেখযোগ্য কোন কাজ হয়নি। ফলে ভাষাগুলোর শ্রেণীকরণসহ ভাষাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নির্ণয় এবং তুলনামূলক কোন আলোচনা হয়নি। সুগত চাকমা তাঁর এমফিল অভিসন্দর্ভে শুধুমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রামের উপভাষাগুলিকে প্রাথমিক শ্রেণীকরণের চেষ্টা করেছেন। এ ছাড়া বিগত প্রায় একশ বৎসরে ভাষাগুলোতে নানা পরিবর্তন সাধিত হয়েছে; ফলে উলেখিত অনেক তথ্যের সঙ্গে মাঠ-গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যের মিল নেই। আমরা এখানে বাংলাদেশে আদিবাসী ভাষাগুলোর একটি পরিচিতি দেবার চেষ্টা করেছি।

বাংলাদেশে বিভিন্ন ভাষা-পরিবার ও পরিবারের ভাষাসমূহ

ভাষা-পরিবার

ভাষাসমূহ

১.ভাষা পরিবার: অস্ট্রো-এশিয়াটিক
১.১ মোন-খমের শাখা-
১.২ মুন্ডারি শাখা-
খাসিয়া, (লিঙ্গাম)
সাঁওতাল, মুণ্ডা ইত্যাদি।

২. ভাষা পরিবার: তিব্বতি-চীন
২.১ বোড়ো শাখা-
২.২ কুকি-চীন শাখা-
২.৩ সাক্-লুইশ শাখা-
২.৪ লোলো-বার্মিজ শাখা-

৩. ভাষা পরিবার: দ্রাবিড়

৪. ভাষা পরিবার: ইন্দো-ইউরোপিয়
মান্দি (গারো), ককবরক, কোচ, লালেং (পাত্র) পালিয়া, রাজবংশী ইত্যাদি।
মৈতেয়মণিপুরী, খুমি, বম, খেয়াং, পাংখো, লুসাই, ম্রো ইত্যাদি।
চাক, ঠার বা থেক
মারমা (রাখাইন) ইত্যাদি
কুঁড়ুখ ও আদি মালতো (বর্তমানে লুপ্ত)
বাংলা, চাকমা (তনচঙ্গা), বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী, সাদরি, হাজং ইত্যাদি।

অস্ট্রো-এশিয়াটিক ভাষাসমূহ

পৃথিবীতে অস্ট্রো-এশিয়াটিক জাতির জনসংখ্যা কম হলেও বিতৃত এলাকা নিয়ে এদের বসবাস। বাংলাদেশে প্রচলিত অস্ট্রো-এশিয়াটিক ভাষাসমূহ আবার দুটি শাখায় বিভক্ত। এগুলো হচ্ছে-মোন-খমের ও মুন্ডারি।

মোন-খমের শাখা: বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় একশটিরও অধিক ভাষা মোন-খমের শাখা-র অন্তর্ভূক্ত। এই ভাষাগুলি পূর্ব-ভারত থেকে ভিয়েতনাম মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া এবং ইউনান-চীন থেকে মালয়েশিয়া ও আন্দামান সাগরের নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ছড়িয়ে রয়েছে। বাংলাদেশে এই শাখার ভাষার মধ্যে উলেখযোগ্য খাসিয়া বা খাসি ভাষা । খাসিয়া ভাষারই একটি উপভাষিক বৈচিত্র্য মনে করা হয় ‘লিঙ্গাম’কে।

খাসিয়া বা খাসি ভাষা: বাংলাদেশের সিলেটের সীমান্ত-সংলগ্ন অঞ্চলে বসবাসকারী মঙ্গোলয়েড খাসিয়া জাতির ভাষা। বর্তমানে খাসিয়া জনসংখ্যা প্রায় ১২,২৮০ জন। ভারতের মেঘালয় ও আসাম রাজ্য মিলিয়ে প্রায় দশ লক্ষ লোক খাসি ভাষায় কথা বলে। খাসিয়া ভাষার সাথে বার্মার মোঁয়ে, পলং ভাষার এবং উপমহাদেশের তালাং, খেড়, সুক, আনাম, খামেন, চোয়েম, ক্ষং, লেমেত, ওয়া প্রভৃতি আদিবাসীদের ভাষার মিল লক্ষ করেছেন বিভিন্ন ভাষাবিজ্ঞানী। খাসি ভাষা মৌখিক ভাষা। এই ভাষার কোন নিজস্ব বর্ণমালা নেই। তবে ১৮১২ সালে কৃষ্ণচন্দ্র পাল নামক একজন ধর্মযাজক সর্বপ্রথম বাংলা বর্ণমালায় ও খাসি ভাষায় নিউ টেস্টামেন্ট বাইবেল অনুবাদ করেন। ১৮৩৮ সালে পরে ওয়েলস মিশনারি দলের টমাস জোনস রোমান হরফে খাসিয়া ভাষা লেখার প্রচলন করেন। বর্তমানে খাসি ভাষা রোমান হরফেই লেখা হয়। খাসি ভাষার উপভাষা রয়েছে বেশ কয়েকটি।


মুন্ডারি শাখা:
অধিকাংশ ভাষাতত্ত্ববিদ মুন্ডারি শাখাকে অস্ট্রিক ভাষা-গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত মনে করলেও এর ভিন্ন মতও রয়েছে। কোন এক জাতি সুদূর অতীতে হয়ত ভারতবর্ষে চলে আসে এবং তাদের আনা ভাষা পরবর্তীতে স্থানীয় অন্য কোন ভাষার প্রভাবে মুন্ডারী শাখার ভাষার সৃষ্টি করে। সাঁওতালি ভাষা মুন্ডারি শাখা ভুক্ত।

সাঁওতালি ভাষা: বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অর্থাৎ রাজশাহী, নওগাঁ, দিনাজপুর, বগুড়া, রংপুর, ঠাকুরগাঁ প্রভৃতি অঞ্চলে দুই লক্ষাধিক সাঁওতাল বসবাস করে। তবে ভারত, বাংলাদেশ এবং নেপাল মিলিয়ে পৃথিবীতে ৫২ লক্ষ লোক সাঁওতালি ভাষায় কথা বলে। হাজার হাজার বছর ধরে বংশ পরম্পরায় মুখে মুখে প্রচলিত হয়ে আসা এই সাঁওতালি ভাষার কোন নিজস্ব বর্ণমালা নেই। তবে খ্রিস্টান মিশনারিদের হাতে সর্বপ্রথম সাঁওতালি ভাষার লিখিত রূপ দেওয়া হয় রোমান হরফে। ১৮৬৯ সালে ভারতের সাঁওতাল পরগনার লুথারিয়ান মিশনে স্থাপিত একটি ছাপাখানা থেকে প্রথম সাঁওতাল ভাষার ব্যাকরণ ও অন্যান্য বই প্রকাশিত হয়। পশ্চিমবঙ্গে রঘুনাথ মুর্মু ‘অলচিকি’ নামে সাঁওতালি বর্ণমালা তৈরি করে এবং তার সরকারি স্বীকৃতিও লাভ করে। বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত দেশী শব্দগুলো প্রধানত সাঁওতালি ও মুন্ডা ভাষা থেকে আগত

মুণ্ডা ভাষা:
বাংলাদেশের উত্তর ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় ২১৩২ (১৯৯১ আদমশুমারি অনুযায়ী) জন মুণ্ডা বসবাস করে। ভারতে এদের সংখ্যা ৪ লক্ষ। মুণ্ডাদের নিজস্ব ভাষা রয়েছে। মুণ্ডা ভাষা অস্টো-এশিয়াটিক ভাষা পরিবারের মুণ্ডারি শাখার অন্তর্গত। প্রায় তিন-চার হাজার বছর আগে পিজিন ভাষা হিসেবে মুণ্ডা ভাষার প্রচলন হয়েছিল। বাংলা ভাষার কিছু রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য (ক্রিয়াপদের লিঙ্গহীনতা, শব্দদ্বৈত ইত্যাদি) মুণ্ডা ভাষাজাত বলে ভাষাবিজ্ঞানীগণ মনে করেন। রূপতাত্ত্বিক দিক থেকে ‘মুণ্ডা’ ভাষার কিছু বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করেছেন পরেশচন্দ্র ভট্টাচার্য- ‘আকৃতিগত দিক থেকে মুণ্ডা ভাষা প্রত্যয় যুক্ত হয়ে থাকে। ভারতীয় আর্য ভাষার মতো এই অস্তিত্ব বর্তমান। অর্ধব্যঞ্জন ধ্বনিও এই ভাষায় শ্রুত হয়। শব্দগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে দু অক্ষর বিশিষ্ট। ভাষার তিন বচন দুই লিঙ্গ। শব্দে গুরুত্ব আরোপের জন্য শব্দদ্বিত্বের প্রয়োগ বহুল প্রচলিত’। মুণ্ডা ভাষার কোন নিজস্ব হরফ নেই। এজন্য এদের কোন লিখিত সাহিত্য নেই। মুখে মুখে এই ভাষা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে টিকে আছে। যদিও বর্তমানে এ ভাষার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে।

চীনা-তিব্বতি ভাষাসমূহ

ভাষাবিজ্ঞানীরা চীনা-তিব্বতি পরিবারের ভাষাসমূহের বিচ্চৃতি মধ্য এশিয়া থেকে দক্ষিণে বার্মা এবং বালিষ্টান থেকে পিকিং পর্যন্ত পূর্ব গোলার্ধের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল পর্যন্ত বলে উলেখ করেছেন। এই চীনা-তিব্বতি ভাষা পরিবার দুটি ভাগে বিভক্ত চীনা, এবং তিব্বতি-বর্মি। তিব্বতি-বর্মি আবার দুইটি ভাগে বিভক্ত-একটি টিবেটো-হিমালয়ান ও অপরটি আসাম-বার্মিজ। আসাম-বার্মিজ আবার কয়েকটি শাখায় বিভক্ত। যেমন বোডো, নাগা, কুিক-চীন, কাচিন, বার্মিজ ইত্যাদি।

বোডো শাখা: মান্দি বা গারো, ককবোরক (ত্রিপুরা), পাত্র, প্রভৃতি ভাষাসমূহ এই শাখার অন্তর্ভূক্ত।

মান্দি ভাষা: বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, মধুপুর গারো পাহাড় সংলগ্ন ও সিলেট অঞ্চলে মান্দিদের (গারো) বসবাস। মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার ধারক ও বাহক এই মান্দি জাতির স্বীকৃত ভাষার নাম ‘আচিক বা মান্দি ভাষা’। মান্দিদের মোট ১৩টি গোত্রের মধ্যে বাংলাদেশের ৭টি গোত্রের কথা জানা যায়। গোত্র ভেদে মান্দিদের আলাদা আলাদা উপভাষার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ভাষার নিজস্ব কোন বর্ণমালা না থাকলেও রোমান হরফ ব্যবহৃত হয় ব্যাপকভাবে। ভারতের মেঘালয় রাজ্যে বসবাসরত গারোরা নিজ ভাষাতেই পড়াশুনা ও সাহিত্য রচনা করে থাকে।

লিঙ্গাম: লিঙ্গামরা নিজেদেরকে পৃথক জাতিসত্তার মানুষ দাবী করলেও গবেষকদের মতে এরা মূলত খাসি এবং গারোদের সম্মলিত একটি জাতি। ভাষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তাই উভয় দলের সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে। যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত গবেষণা না করে মন্তব্য করা উচিত নয়। বাংলাদেশের নেত্রকোনা-ময়মনসিংহের গারো পাহাড় সংলগ্ন অঞ্চলেই প্রধানত লিঙ্গামদের বাস। তবে এদের সঠিক জনসংখ্যা বিষয়ে কোন তথ্য-পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। লিঙ্গাম ছাড়াও এদেরকে মিগাম, মারামস ইত্যাদি নামে অভিহিত করা হয়। ভারতের গারো পাহাড়ের দক্ষিণ-পশ্চিম পাদদেশে বসবাসকারী লিঙ্গামদের মোট জনসংখ্যা ২৭,৪৭৮ (১৯৯১)। ভাষা পরিবার বিচারে এরা চীনা-তিববতি পরিবারের বোডো-গারো শাখাভুক্ত। তাছাড়া, খাসিরা তাদের মধ্যে যারা পশ্চিম দিকের পাহাড়ে বাস করে তাদের গধৎধসং বলে। কেননা প্রাচীন কালে সেখানে মারাম কিংডম ছিল, এ দিক দিয়ে খাসিদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক অনেক প্রাচীন।

ককবোরক ভাষা: ত্রিপুরা জাতির ভাষার নাম ককবোরক যার অর্থ মানুষের ভাষা। বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসরত প্রায় দশ লক্ষ ত্রিপুরা ককবরক ভাষায় কথা বলে। মধ্যযুগে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী শাসিত পূর্ববঙ্গের এক বিশাল এলাকায় ককবরক ভাষা প্রচলিত ছিল। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের মধ্যে জনসংখ্যার দিক থেকে ত্রিপুরাদের অবস্থান তৃতীয়। ১৯৯১ সালের আদমশুমারি অনুসারে এদের জনসংখ্যা ৭৯৭৭২ জন। টিপরা এবং ত্রিপুরা উভয়ই মূলত একই জনগোষ্ঠী। বাংলাদেশে ত্রিপুরারা মূলত রাঙামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি জেলায় বাস করে। এছাড়াও চট্টগ্রাম, কুমিলা ও সিলেট জেলায় বেশ কিছু সংখ্যক ত্রিপুরা বাস করেন। তবে বাংলাদেশের বাইরে ভারতের ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম, আসাম, ও অরুণাচলে এরা বাস করে । ত্রিপুরারা তাদের ভাষাকে বলে ‘ককবোরক’। ককবোরক শব্দের অর্থ মানুষের ভাষা। এটি মূলত সিনো-টিবেটান পরিবারের ভোট-বর্মী শাখার বোডো দলভুক্ত। ত্রিপুরা জাতি মোট ৩৬টি দফায় বা গোত্রে বিভক্ত। বাংলাদেশে ১৬টি গোত্রের সন্ধান পাওয়া যায় যাদের মধ্যে উপভাষা ভেদ রয়েছে। অতীতে ককবোরক ভাষার নিজস্ব হরফ ছিল বলে লোককাহিনী প্রচলিত রয়েছে। বর্তমানে এর কোন অস্তিত্ব নেই। অনেক আগে থেকেই ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ককবোরক ভাষা বাংলা হরফেই লিখিত হয়ে আসছে। ককবোরক ভাষার ব্যাকরণ অনেক পুরাতন; প্রায় একশ বছর পূর্বেই এই ব্যাকরণ রচিত হয়।

কোচ ভাষা: কোচ সম্প্রদায়ের আদিম আবাসস্থল কোচবিহারে। তবে নাগপুর ও আসামেও তারা বাস করতো। বাংলাদেশে ঢাকার উত্তরে গাজীপুর জেলায় তারা প্রথম প্রবেশ করে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে বাংলাদেশের মধুপুর, গাজীপুর, কাপাসিয়া, কালিয়াকৈর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, এবং রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে কোচরা বাস করে। কোচ সম্প্রদায় কত বছর যাবৎ এ অঞ্চলে বসবাস করছে তা সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায় না। কোচদের পৃথক ভাষা রয়েছে। কিন্তু তাদের ভাষার উদ্ভব সম্পর্কে কোন ধারণা লাভ করা সম্ভব হয়নি। কোচদের ভাষা বাংলা ভাষা থেকে স্বতন্ত্র্য কোচ সম্প্রদায়ের নিজস্ব কোন লিপি নেই। ভাষিক গঠন ও কাঠামো দেখে মনে হয় চীনা-তিব্বতি পরিবারের ভোট-বর্মী শাখার বোড়ো দলভুক্ত। ১৯৫৯ সালে গবেষক রবিন্স বালিং এর এ বিষয় লেখা প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি গারো মতো কোচকেও চীনা-তিব্বতি ভাষা পরিবারের বোড়ো শাখাভুক্ত বলে উলেখ করেছেন।

পাত্র বা লালং: বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিসত্তাদের অন্যতম অংশ হলো পাত্র। সিলেট জেলার সদর ও গোয়াইনঘাট থানাদ্বয়ের অন্তর্ভুক্ত ২৩ গ্রামে প্রায় ৪০২টি পরিবারের ২০৩৩ জন আদিবাসী পাত্র সম্প্রদায়ের বসবাস। কারো কারো মতে এদের সংখ্যা পাঁচ-ছয় হাজার হবে। পাত্র-রা নিজেদের ভাষার নাম লালং বলে এবং নিজেদের লালং জাতি হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। এদের ভাষার সঙ্গে গারোদের ভাষার মিল লক্ষ করা যায়।



চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১০:২৪
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রোফেসরদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সমবায়ের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করি : প্রধানমন্ত্রী

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১২ ই মে, ২০২৪ ভোর ৪:১০



বিগত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিজ সংসদীয় এলাকায় সর্বসাধারনের মাঝে বক্তব্য প্রদান কালে উক্ত আহব্বান করেন ।
আমি নিজেও বিশ্বাস করি এই ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক ।
তিনি প্রত্যন্ত অন্চলের দাড়িয়ারকুল গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×