১৫ অক্টোবর চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের উরুমচি শহরের গণ আদালোতে ৫ জুলাইয়ের ঘটনার তিনটি গুরুতর মামলার রায়ের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে । এর মধ্যে তিনজন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে এবং এদের যাবজ্জীবন রাজনৈতিক অধিকার বাতিল করা হয়েছে । এর আগে ১২ অক্টোবর আদালতে অন্য ৭জনের মধ্যে ৬জনকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে এবং যাবজ্জীবন রাজনৈতিক অধিকার বাতিল করা হয়েছে । ইচ্ছামতো হত্যা, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের অভিযোগে এদের বিরুদ্ধে এ রায় দেয়া হয় ।
৫ জুলাইয়ের ঘটনায় মোট ১৯৭জন মারা গেছে , প্রায়১৬০০জন আহত হয়েছে এবং সরাসরি অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ৬ কোটি ৯০ লাখ রেনমিনপি । চীনের আধুনিক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গবেষণা ইনস্টিটিউটের নিরাপত্তা ও কৌশল গবেষণালয়ের প্রধান লি ওয়েই বিশ্লেষণ করে বলেন , রাবিয়া কাদিরের নেতৃত্বাধীন " বিশ্ব উইগুর সম্মেলনের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য হল তথাকথিত স্বাধীন দেশ গঠন করা । বিদেশের চীন বিরোধী শক্তির সমর্থন পাওয়ার জন্য তাদের উস্কানি ও প্ররোচনায় ৫ জুলাইয়ের ঘটনার সৃস্টি হয়েছে ।
২৬ জুন দক্ষিণ চীনের কুয়াংতু প্রদেশের সাওকুয়াং শহরে সিনচিয়াংয়ের শ্রমিক ও স্থানীয় শ্রমিকের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে । এটা একটি সাধারণ ফৌজদারী মামলা । কিন্তু বিশ্ব উইগুর সম্মেলন এর অজুহাতে ৫ জুলাইয়ের ঘটনা সৃষ্টি করেছে । বিশ্ব উইগুর সম্মেলনের প্ররোচনায় ৩ জুলাই কিছু পূর্ব তুর্কিস্তানী ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, অষ্ট্রিয়া এবং তুরস্কসহ ২২টি দেশস্থ চীনা দূতাবাসের সামনে অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি করেছে । অলিম্পিক গেমস চলাকালে তিব্বতের কিছু কিছু লোক সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে । মশাল নেভানোর চেষ্টা চালিয়েছে এবং মশাল রিলে বাধা দিয়েছে । কিন্তু অলিম্পিক গেমস চলাকালে আমরা কিছুই করতে পারিনি । এবার আমাদের সুযোগ এসেছে । কথা বলছেন চীনের উইগুর ভাষার বাতাস নামে ওয়েবসাইটের কর্মকর্তা আহমাদ তুর্সন । অভ্যন্তরীন সংস্থার একজন প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে তিনি বিদেশের সঙ্গে যোগসাজশ করে ৫ জুলাইয়ের ঘটনা সৃষ্টি করেছেন । তার উস্কানি ও প্ররোচনায় ঘটনার সময় ও স্থান স্পষ্টভাবে নির্ধারিত হয়েছে । ৫ জুলাই রাতে কয়েক হাজার দুষ্কৃতকারী উরুমচি শহরের অনেক জায়গায় হামলা , ভাংচুর , লুটপাট ওঅগ্নিসংযোগ করে নিরিহ নাগরিকদের হত্যা করে । সেই রাত স্থানীয় অধিবাসীদের মনে কালো ছায়া ফেলেছে । কিন্তু ১৯৭ জন মানুষের মৃত্যুতে বিশ্ব উইগুর সম্মেলনের একটুও অনুতাপ হয়নি । ৬ জুলাই ভোরবেলা তারা জরুরী টেলিফোন সভার মাধ্যমে অভ্যন্তরের উইগুর জনসাধারণের মধ্যে ঘটনা সম্প্রসারিত করার অপচেষ্টা করেছে এবং চীনের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ সৃষ্টির অনুরোধ জানিয়েছে ।
তাদের ষড়যন্ত্র সফল হতে পারেনি । চীনের সমাজ বিজ্ঞান একাডেমীর সীমান্ত এলাকার ইতিহাস ও ভূগোল গবেষণালয়ের এসোসিয়েট গবেষক স্যু চিয়েনইং বলেন , সিনচিয়াংয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির তত্পরতা কখনো বন্ধ হয়নি । কিন্তু এটা সিনচিয়াংয়ের মৌলিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন, বিভিন্ন জাতির জনগণের মহা সংহতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেনি । গত ১০-১২ বছরে সিনচিয়াংয়ের পরিস্থিতি খুবই ভাল ছিল। বলপ্রয়োগ ও সন্ত্রাসবাদী ঘটনা রোধ করা হয়েছে । সিনচিয়াংয়ের অর্থনীতির উন্নয়ন দ্রুত, জাতির মধ্যে সম্পর্ক ভাল । সিনচিয়াং এবং অভ্যন্তরের অন্যান্য অঞ্চলের সম্পর্ক দিন দিন নিবিড় হচ্ছে । এ কারণে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির স্বাধীন হওয়া সম্ভব হবে না ।
[চীনা ওয়েবসাইট]
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ১১:১৩