[পূর্বের অংশের পর। প্রথম খন্ড দেখতে ভিজিট করুনঃ Click This Link ]
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আর্টিকেলটি পড়ুন এবং দেখুন, এখানে কোন রাজনৈতিক দলের প্রচার চালানো হয় নাই। যদি প্রমাণ করতে পারেন এখানে কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা দলসমূহের পক্ষে প্রচারণা চালানো হয়েছে তবে আমি আপনাকে ১ লক্ষ্য টাকা নগদ ক্ষতিপূরণ দেব। তবে প্রমাণ ব্যতিত কিছু বলবেন না
বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষতাঃ মুসলমানদের জন্য কতটুকু নিরপেক্ষ
ইসলাম কথাটির অর্থ শান্তি। বর্তমানে ১৫০ কোটি মুসলমানের বাস এ পৃথিবীতে। সবারই ধারণা ইসলাম একটি ধর্ম। বাস্তবে ধর্ম ইসলামের একটি অংশ মাত্র। ইসলাম হল একটি পূর্নাঙ্গ জীবনবিধান যাতে আরো অনেক কিছুর মতো ধর্মের উপস্থিতি রয়েছে। ইসলামের ধর্ম অংশটুকু হলো ব্যক্তিগত জীবনের জন্য। এছাড়াও পারিবারিক এবং রাষ্ট্রীয় জীবনধারা ইসলামে দেয়া আছে যার বাংলা সংবিধান (constitution)। মূলত শান্তির জন্য যে জীবনবিধান/সংবিধান তাই ইসলাম।
ইসলামবিদ্বেষীগণ এবং মুনাফিকরা সর্বদা ইসলামকে ধর্ম বলে চালাবার অপচেষ্টা করে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। তারা নিজেদের দাড়ি-টুপি-পাঞ্জাবী দ্বারা শোভিত করেন মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা (acceptance) পাওয়ার জন্য। এভাবে তারা ইসলামের ভিতরে ঢুকে মানুষকে ইসলামের ধর্ম (ব্যক্তি জীবনে করণীয়) বিষয়ক কাজগুলো আলোচনা করে এবং ইসলাম যে জীবনবিধান (দ্বীন/শরিয়াহ/সংবিধান) তা উহ্য রাখে। এতে করে মুসলমানেরা দুষ্ট লোকের মিষ্ট কথায় প্রভাবিত হইয়ে ইসলাম যে একটি পূর্নাঙ্গ জীবনবিধান তা ভুলে যায় এবং পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিতব্য আইনসমষ্টি প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়। কেননা, ইসলামকে যখন ধর্ম বলা হয় তখন তা প্রতিষ্ঠা পাওয়ার যোগ্যতা হারায়। যদি একটি ধর্মকে প্রতিষ্ঠা করা হয় তাহলে বাকি ধর্মগুলোও প্রতিষ্ঠা প্রাপ্তির দাবি জানাবে। কিন্তু ইসলাম ধর্ম জন্য প্রতিষ্ঠা পাওয়ার যোগ্যতা চায় না, এটি প্রতিষ্ঠা পাওয়ার যোগ্যতা রাখে কেননা এটিই একমাত্র ধর্ম (যদিও ইসলাম ধর্ম না, তারপরও প্রমানের স্বার্থে ধরে নেই) যাতে দেয়া আছে রাষ্ট্রীয় বিধান (সংবিধান)-সামাজিক বিধান (বিজ্ঞানসম্মত এবং মানবতার পক্ষের প্রথা। যথা- কোরবানি, সদকা, ফিতরা) ও বিশেষ কিছু পারিবারিক বিধান(পারিবারিক আইন। এর মধ্যে রয়েছে উত্তরাধিকার সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পারিবারিক আইন যা আমাদের দেশে মুসলিম পারিবারিক আইন নামে পরিচিত) যা অন্য যেকোন ধর্মে অনুপস্থিত। একারণে ইসলামের মূল ভিত্তি আল-কুরান কে বলা হয় “একটি পূর্নাঙ্গ জীবনবিধান”... অনেকেই একথাটি বহুবার বলেছে কিংবা শুনেছে কিন্তু মর্মোদ্ধারের চেষ্টা করে নাই। আল কুরানে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে,
“তিনি সেই জন যিনি নাযিল করেছেন এই কিতাব, তার মধ্যে কতকগুলো আয়াত নির্দেশাত্মক- সেই সব হচ্ছে এই গ্রন্থের ভিত্তি আর বাকিগুলো রুপক। তবে তাদের বেলা যাদের অন্তরে যাদের অন্তরে আছে কুটিলতা তারা অনুসরন করে এর মধ্যে যেগুলো রুপক বিরোধ সৃষ্টির কামনায় এবং এর ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রচেষ্টায়। আর এর ব্যাখ্যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না” (সুরা আল-ইমরান, আয়াত ৬)
এখানে স্পষ্ট করে বলে দেয়া আছে কুরানের কোন আয়াতগুলো কুরানের ভিত্তি। এখানে যদি বলা হতো “…তার মধ্যে কতকগুলো আয়াত আসল……” তবে কোন আয়াতগুলো আসল আর কোন গুলো নকল তা বাছাই করতে মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়ত। কী বলত, নির্দেশাত্মকগুলো আসল, কেউ বলতে উপদেশবাচকগুলো। কিন্তু সর্বোজ্ঞানী আল্লাহ তা’লা বলেই দেয়েছেন যেসকল আয়াত দ্বারা আমাদের নির্দেশ করা হয়ছে তাই আসল। আর যারা অন্যগুলো নিয়ে টানাটানি করে তারা ফিতনাসৃষ্টিকারী। এখানে, ইসলামবিদ্বেষীগণ এবং মুনাফিকরা সর্বদা যারা ইসলামকে ধর্ম বলে চালাবার অপচেষ্টা করে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে, নিজেদের দাড়ি-টুপি-পাঞ্জাবী দ্বারা শোভিত করেন মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা (acceptance) পাওয়ার জন্য, যাতে তারা ইসলামের ভিতরে ঢুকে মানুষকে ইসলামের ধর্ম (ব্যক্তি জীবনে করণীয়) বিষয়ক কাজগুলো আলোচনা করে এবং ইসলাম যে জীবনবিধান (দ্বীন/শরিয়াহ/সংবিধান) তা উহ্য রাখে তাদের চরিত্র প্রতিফলিত হয়েছে। তাই আমার আকুল অনুরোধ থাকবে এই সকল ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দূরে থাকার।
রাষ্ট্রে সংবিধান প্রতিষ্ঠা করা যায়, কোন ধর্ম নয়। (পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এক ধর্ম প্রতিষ্ঠা পেলে অন্য ধর্মও প্রতিষ্ঠার দাবি জানাবে। আর অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস আসে আবেগ থেকে যা কোন যুক্তি মানে না। এ জন্য যুক্তি দিয়ে “অমুক ধর্ম সেরা” এই কথাটি মানুষকে বোঝান যাবে না বা ঐ ধর্ম প্রতিষ্ঠা করা যাবে না) তাই সর্বজ্ঞানী মহান আল্লাহ তা’লা আমাদের জন্য একটি সংবিধানও দিয়েছেন ধর্মের পাশাপাশি। এই আইনমালায় সকল ধর্মের সহাবস্থান নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা যেমন বর্তমানে প্রচলিত সংবিধান মেনে চলি অনুরুপ ভাবে এই সংবিধানও মেনে চলতে হবে। ইন্ডিয়ার সংবিধান হিন্দু দ্বারা, আমেরিকার সংবিধান খ্রিষ্টান-নাস্তিকদের গড়া। তার মানে কি এই যে, ঐ সংবিধান ইন্ডিয়ার সংবিধান বৌদ্ধদের ধর্ম বিরোধী কিংবা আমেরিকার সংবিধান খ্রিষ্টান-নাস্তিক দের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করে? যদি আপনার উত্তর না হয় তবে আমি বলি, শরিয়াহ আইন ইসলামে থাকলেও/মুসলমানদের দ্বারা প্রতিষ্ঠা পেলেও এতে কোন সম্প্রদায়ের প্রতি পক্ষপাতিত্বের কোন অবকাশ নাই। তবে দেখুন, শরিয়াহ আইন মানতে কোন ধর্মে নিষেধ করা হয় নাই। শরিয়াহ আইন একটি সংবিধান। ইসলাম বাদের অন্য সকল ধর্মে স্বীয় রাষ্ট্রের সংবিধান মেনে চলতে বলা হয়েছে। অতএব, শরিয়াহ আইনের ফলে কোন ধর্মাবলম্বীদের জাত যাবে না। কিন্তু শরিয়াহ বাদে অন্য কোন সংবিধান যদি কোন মুসলিম গ্রহন করে তবে সে মুরতাদ হয়ে যায়। আল-কুরানে বলা হয়েছে-
“আর যারা বিচার করে না আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দ্বারা, তাহলে তারা নিজেরাই অন্যায়কারী” (আল-মায়িদাহ, আয়াত ৪৫)
সুতরাং, শরিয়াহ ব্যতিত কোন আইনই ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক। আর ধর্ম নিরপেক্ষতা হল তা যা কোন ধর্মের সাথেই সাংঘর্ষিক না। কিন্তু মানবসৃষ্ট বর্তমানের সংবিধান ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ায় এটি আসলে ধর্ম নিরপেক্ষ না।
তাই, আসুন (আপনি যে ধর্মাবলম্বীই হোন না কেন) বর্তমান তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতাকে বর্জন করুন এবং প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষি ইসলামিক সেকুলারিজম এর পক্ষে আসুন।
এমতাবস্থায় মুসলিম ভাইয়েদের করনীয়
উপরের আলোচনা দ্বারা এই-ই প্রতীয়মান হয় যে, বর্তমান সংবিধান মানা আমাদের জন্য হারাম। তাই আমাদের অবশ্যি শরিয়াহ আইন চালুর জন্য জিহাদ (সংগ্রাম) করতে হবে। জিহাদের ফযীলত কুরানে পাকে বর্ণিত হয়েছে এভাবে-
“তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করো; আল্লাহ তাদের শাস্তি দেবেন তোমাদের হাতে, আর তাদের লাঞ্ছিত করবেন আর তোমাদের সাহায্য করবেন তাদের বিরুদ্ধে, আর মুমিন সম্প্রদায়ের বুক প্রশমিত করবেন” (সুরা তাওবা, আয়াত ১৪)।
এখানে আমাদের জহাদ করতে বলা হয়েছে। আর কাদের সাথে জিহাদ করতে হবে তাও বলা হয়েছে নিম্নোক্ত আয়াতটিতে
“তোমরা কি যুদ্ধ করবে না সেই সব সম্প্রদায়ের প্রতি যারা তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে, আর সঙ্কল্প করেছে রাসূলকে বহিষ্কৃত করার, আর তারাই তোমাদের উপরে শুরু করেছে প্রথমে? তোমরা কি তাদের ভয় করো? কিন্তু আল্লাহই অধিকতর দাবিদার তোমরা তাকে ভয় করবে- যদি তোমরা মুমিন হও” (সূরা আত তাওবা, আয়াত ১৩)
এখানে আমাদের যুদ্ধ করতে হবে তাদের সাথে যারা আমাদের সাথে চুক্তিভঙ্গ করেছে, আমাদের চোখে ধূলা দিচ্ছে। আর এক্ষেত্রে রাসূলকে বহিষ্কৃত করা বলতে বুঝানো হয়েছে রাসূলের সুন্নাত এবং তার প্রতিষ্ঠিত আইনসমূহ বাতিল করার। নিশ্চিতপক্ষে বর্তমান মানবতাবাদীরাই আমাদের উপর অত্যাচার শুরু করেছে আমাদের রাসূলের আদর্শ ও প্রতিষ্ঠিত শরিয়াহ এর বিরুদ্ধাচারন করে, নির্বাসনে পাঠিয়ে। তারা আমাদের মানবতাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা-র নামে চোখে ধূলা দিচ্ছে। তারা আমাদের মসজিদ বানানোকে নিষিধ ঘোষনা করছে (নরওয়ে), তারা বোরখা নিষিধ করছে (ইতালি, ফ্রান্স)... তারাই তো আমাদের উপর আক্রমণকারী। আমরা তো স্রেফ এখন নিজেদের প্রোতিরোধের স্বার্থে যুদ্ধ করব। আমাদের উচিত তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ (দয়া করে আমাকে উগ্রপন্থী বলবেন না। এই জিহাদ বলতে কেবল সশস্ত্র জিহাদ না। জিহাদ হতে পারে কলমের জিহাদ, তরবারীর জিহাদ, অন্তরের জিহাদ তথা কোন উপায়ন্তর না থাকলে অন্তরে ঘৃণা করা। যার যা সামর্থ্য সে অনুযায়ী জিহাদ। আর আমাদের পরিবেশ, পরিস্থিতি আর সুকৌশলে জিহাদ করতে হবে। বর্তমানে তারা আমাদের ভাতে মারছে তথা স্লো পয়জনিং করছে। এখন সশস্ত্র জিহাদের সময় না। এখন সময় কলমের জিহাদের। আমাদেরও তাই করতে হবে। যখন তারা আমাদের সাথে সরাসরি জিহাদ ঘোষণা করবে তখন আমরাও তীরবেগে ঝাপিয়ে পড়ব। আমাদের সর্বদা সবকিছুর জন্যই প্রস্তুত থাকতে হবে।) করা। এটা আল্লাহর আদেশ।
এছাড়াও কুরান পাকে বলা হয়-
“মুশরিকদের কোন অধিকার নাই আল্লাহর মসজিদগুলো দেখাশুনা করার যখন তারা নিজেদের বিরুদ্ধে অবিশ্বাসের সাক্ষ্য দেয়। এরাই তারা যাদের কাজকর্ম ব্যর্থ হয়েছে, আর আগুনের মধ্যে তারাই অবস্থান করবে” (সুরা আত তাওবা, আয়াত ১৭)
দেখুন পৃথিবীর প্রতি দেশেই এক বা একাধিক মসজিদ আছে। আর এই মসজিদগুলো রক্ষনাবেক্ষনের জন্য যে সকল কমিটি আছে তা হয় সরকার প্রভাবিত বা সরকার দ্বারা পরিচালিত বা নিবন্ধিত। বর্তমান বিশ্বের প্রায় সব সরকারই নাস্তিক বা মুশরিক (উদাহরণঃ আমাদের বর্তমান (২০১১ সাল) প্রধানমন্ত্রী দূর্গাকে মা বলেন, আবার নামাজও পড়েন। এটা মুশরিকি)... তাই এসকল মুশরিকদের কোন অধিকার নাই যে তারা মসজিদগুলো রক্ষনাবেক্ষন করবে। এরপর দেখুন, পৃথিবীতে যতো গনতান্ত্রিক দেশ আছে তাতে একাধিক রাজনৈতিক দল আছে আছে যারা পরস্পর পরস্পরকে দোষারোপ করে এবং তাদের সকল কার্যক্রম ব্যররথ হয়েছে (বাংলাদেশ সরকারের ব্যর্থ কাজের চেয়ে সফল কাজের বর্ননা দেওয়া সহজ। কেননা, সরকারের প্রায় প্রতিটি কাজই অসফল প্রমাণিত এবং হাস্যকর। আর যার দরুন এই অসচেতন, মানবাতবাদী (?), সেকুলার সমাজও অসন্তুষ্টি প্রকাশে পিছিয়ে নেই। আর আমেরিকা, ব্রিটেন ইত্যাদি দেশের নেয়া বড় সব পদক্ষেপই ব্যররথ। যথাঃ উপনিবেশবাদ, আফগান বা ইরাক দখল, পুজিবাদ, সমাজতন্ত্র, গনতন্ত্র(?) প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি)
আমার উপরের কথাগুলো দেখে মনে হতে পারে আমাদের বুঝি এখনই জিহাদে ঝাপিয়ে পড়ার আদেশ দেয়া হয়েছে কুরানে। আসলে তা নয়। জিহাদে আমাদের ঝাপিয়ে পড়তে হবে তবে তা সশস্ত্র জিহাদে নয়। তারাই তো প্রথমে আমাদের আক্রমণ করলে তবেই আমরা তার কঠোর পালটা জবাব দেব। তারা আমাদের কলমের মাধ্যমে আঘাত দিচ্ছে, মিডিয়া দ্বারা ক্ষতি করছে, আমরাও তাদের কলম এবং মিডিয়ার মাধ্যমেই পালটা জবাব দেব। নিশ্চয়ই সত্য মিথ্যার উপর জয়ী হবে। আমার উপরে দেয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উদাহরণ নিয়ে অনেকে হয়তো বলার অপচেষ্টা করবে যে, আমি তাকে জিহাদের মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছি। আসলে তা না। মুসলিমরা বড়ই উদার। সর্বপ্রথম মক্কা বিজয়ের (এর পর রাসূলের (সা) ওফাতের পর অনেক বিজয় সংঘটিত হয়, মুশরিকদের পতন হয়) মাধ্যমে সাহাবায়ে কেরাম কুরানের উপরোক্ত বানীগুলোকে বাস্তবে পরিণত করেছিলেন। তখন আমরা কুরাইশ সর্দার আবু সুফিয়ানকে মাফ করে দেই, মাফ করে দেয়া হয় সেই স্ত্রীলোককে যে হযরত হামযা (রা) এর কলিজা চর্বন করেছিল, আমাদের রাসূল (সা) মাফ করে দেন ঐ কৃতদাসকে যে কিনা হামযা (রা) এর ঘাতক ছিলেন। ভবিষ্যতেও আমরা এর নমুনা রেখেই যাব। মুসা (আ) ফিরাউনকে সত্য ধর্মের প্রতি আহবান করেছিলেন, ঠিক তেমনি আমি করছি সকল মুসলিম (ঐ সকল মানুষ যারা যে কোন জায়গায় ধর্মের স্থলে ইসলাম লেখেন, হোন তারা মুনাফিক কিংবা মুশরিক)... কিন্তু মুসা (আ) ফিরাউনকে মারেন নাই। আমিও কাউকে কতল করব না যদি না আমার উপর আঘাত না আসে। আর রক্তের বদলে রক্তই একমাত্র যথাযোগ্য শাস্তি। বিধর্মীদের সাথে দয়ালু আচরণ আমরা শিক্ষা পাই উপরে মক্কা বিজয়ের উদাহরণ থেকে। আরো পাই কুরান এর এ আয়াত হতে-
“আর যদি কোন মুশরিক তোমার কাছে আশ্রয় চায় তবে তাকে আশ্রয় দাও যেন সে আল্লাহর বানী শোনে, তারপর তাকে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌছে দিয়ো। এটি এই জন্য যে তারা হচ্ছে এমন এক সম্প্রদায় যারা জানে না” (সূরা আত তাওবা, আয়াত ৬)
বিরোধীপক্ষকেও আশ্রয় দেয়াও আমাদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। এসময় আমাদের এই করণীয়টিও মনে রাখতে হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহর অসীম কুদরতে আমরাই একমাত্র জাতি যারা মানুষের বিপদের সময় সাহায্য করতে পিছপা হই না যদি তারা আমাদের শত্রুও হয়।
জিহাদের সময় আমাদের আরো যে বিষয়গুলো লক্ষ রাখতে হবে তা হলো পরিবেশ। পরিস্থিতির দাবি অনুযায়ী মহানবী (সা) তৃতীয় স্তরের মুমিন (অন্তরে ঘৃণা) হতে বাধ্য হয়েছেন। যদি দেখা যায়, অন্যায় প্রতিরোধ করতে গেলে বা অন্যায় করতে নিষেধ করতে গেলে প্রাণনাশের ভয় রয়েছে তবে সে ক্ষেত্রে অন্তরে ঘৃণা করাই যথেষ্ট হবে।
আমরা অনেক জিহাদের সময় ধৈর্য্য রাখতে পারি না, হুট-হাট কাজ করি, দ্রুত ফল আশা করি এবং শর্ট-কাট পদ্ধতি অনুসরণ করি। এতে করে আমাদের উদ্দেশ্য সাময়িক ভাবে সফলকাম হলেও সেটি টেকসই হবে না। আমাদের অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে এবং যোগ্যলোককে নেতা হিসেবে মানতে হবে। তবেই আমরা সফলকাম হতে পারব ইন শা আল্লাহ। নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের সাথে থাকবেন
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
এই আর্টিকেলটির কোন স্বত্ত্বাধিকার সংরক্ষিত নয়। সকলে এর ব্যাপক পরচারের ব্যবাস্থা করবেন এটিই কাম্য। তবে লেখক কি উদ্দেশ্যে কি কথা বলেছেন তা লেখকই ভাল জানেন। তাই কোন পরশ্ন থাওকলে তার উত্তর লেখকই ভাল দিতে পারবেন (আল্লাহর পর, নিশ্চই আল্লাহ সর্বোত্তম জ্ঞানী)... তাই এতটুকু অনুরোধ থাকবে লেখাটি যখন অপরের নিকট পৌছে দিবেন তখন ইসলামের বৃহত্তর স্বার্থে লেখকের নাম এবং যোগাযোগের ঠিকানাগুলো ঠিক রাখবেন এতে করে লেখক এই আর্টিকেলের উপর আনা অভিযোগসমূহের সমুচিত জবাব প্রদান করতে পারবেন। আর্টিকেলটির কোন অংশে যদি আপনার দ্বিমত থাকে তবে অবশ্যই তা জানাতে ভুল করবেন না। মানুষ মাত্রই ভুল। সাহাবায়ে কেরামও অনিচ্ছাকৃত অনেক ভুল করেছেন আর আমি তো সেই কোন ছার। প্রকৃত বন্ধু সেই যে সামনে ভুল ধরিয়ে দেয়, পশ্চাতে প্রশংসা করে। আর্টিকেলটিতে কোন তথ্যগত ভুল (যেমনঃ কুরান-হাদিসের ভুল রেফারেন্স ইত্যাদি) বা যেকোন প্রকার ভুল থাকলে তা পশ্চাতে না বলে সামনে বলবেন এটাই আমার প্রত্যাশা।
নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা আল্লাহর এবং আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।
মোহাম্মদ আশরাফ আজীজ ইশরাক (ফাহিম)
মেইলঃ [email protected] অথবা [email protected] অথবা [email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:২৬