মৌলবীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলাধীন কুমরা সীমান্তে ৫০০ বিঘা জমি দীর্ঘদিন ধরে ভারতের দখলে। এই জমি উদ্ধারের তৎপরতা শুরু করেছে বাংলাদেশ। কুমরা সীমান্তের খুঁটি ভেঙ্গে বাংলাদেশের ৫০০ বিঘা ভূমি দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের দখলে রেখেছে ভারত। সীমানা পিলার উপড়ে ফেলে কৌশলে ৫০০ বিঘা জমি বিএসএফ দখল করে নেয়ার বিষয়টি সম্প্রতি যৌথ সীমানা জরিপের পর নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান।
শ্রীমঙ্গলস্থ ১৪ রাইফেলস (বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল নুরুল হুদা গত রোববার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সীমানা জরিপে বিষয়টি বেরিয়ে আসার পর বিএসএফ তৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিবাদ করেনি। কাগজপত্রের ভিত্তিতে এই জমির মালিক বাংলাদেশ। এই জমি বাংলাদেশের দখলে আনতে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত উদ্যোগের প্রয়োজন।
কুরমা সীমান্তে যৌথ জরিপের তথ্য ও কুরমা সীমান্তের স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্র থেকে বলা হয়- বাংলাদেশ-ভারত সীমানা ভাগের সময় মৌলবীবাজারের কমলগঞ্জের কুরমা সীমান্তের চম্পা রায় চা বাগানের পাশে একটি ছোট খালকে ঘিরে দু'দেশের সীমানা নির্ধারণ করে সেখানে খুঁটি স্থাপন করা হয়। সে খালের পাশে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের ৫০০ বিঘা জমি মানচিত্র অনুযায়ী এখনো বাংলাদেশের। ১৯০৫ থেকে সীমান্ত খুঁটি এলাকার ৫০০ বিঘা ভূমি ব্যবহার করতো সেখানে বসবাস কারী চম্পা রায় চা বাগানের শ্রমিকরা। বৃষ্টির সময় পাহাড়ী ঢলের স্রোতে সীমানা হিসেবে নির্ধারিত হওয়া খালটির গতিপথ পাল্টে দু'টি ধারায় পানি প্রবাহিত হতে থাকে। এ সময় সুকৌশলে বিএসএফ খালের পুরাতন অংশে মাটি ভরাট করে পর্যায়ক্রমে সীমান্তে খুঁটি ভেঙ্গে ফেলে। শ্রীমঙ্গলস্থ ১৪ রাইফেল (বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল নুরুল হুদা আরো জানান, ১৯৪৫ সালে ম্যাপে নিশ্চিত হওয়া যায় বিএসএফের দখলকৃত ভূমি বাংলাদেশের। তিনি বলেন, বিষয়টি ভারতের বিএসএফকে অবহিত করে বাংলাদেশের ভূমি ফেরত দাবি করা হয়। এক পর্যায়ে এ ভূমির ওপর আপত্তি জানিয়ে যৌথ জরিপের আহবান।
গত বছর ভারতের রাজধানী দিল্লীতে মহাপরিচালক পর্যায়ে এক বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৪ ডিসেম্বর-২০১০ তারিখে লে. কর্নেল নূরুল হুদার উপস্থিতিতে শুরু হয় দু'দেশের সীমানা জরিপ। আর এ জরিপে বেড়িয়ে আসে কমলগঞ্জ উপজেলার চাম্পা চা বাগানের পাশে ভারতের চন্দন নগরের সাথে সম্পৃক্ত ৫০০ বিঘা জমি বাংলাদেশের। মৌলবীবাজারের জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের এ জমিটি উদ্ধারের ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে বিজিবি'র সেক্টর কমান্ডারদের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়। সীমান্তে ৫০০ বিঘা জমি উদ্ধারের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় এবং সেখান থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।