somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি এখন ব্লগার !!

২২ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি ব্লগার হব।
হঠাৎ করেই একদিন সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেললাম। কেনইবা নেব না। হয়ত নতুন কারো সাথে পরিচিত হচ্ছি। হাত বাড়িয়ে দিয়ে- আমি অমুক। একজন ব্লগার। বস্।আর যায় কোথায়! পাশের জন সাথে সাথে- ওয়াউ! আপনি ব্লগার? তা দেশের এই ক্রান্তিকালে আপনারা লেখনির মাধ্যমে..ইত্যাদি ইত্যাদি।
আর তখন আমি! ঠায় দাঁড়িয়ে থাকি অপ্রস্তুতের অস্বস্থি নিয়ে। ইচ্ছা হয় তখনই ছুটে গিয়ে ‘ব্লগার’ হই।
এইতো সেদিন ক্লাশে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে আলোচনার একপর্যায়ে এক বন্ধুর মতের বিরোদ্ধে যেইনা মত দিতে গেলাম, এমনি সে আমাকে থামিয়ে দিয়ে হুমকির সুরে বলে বসল, তুই বেশি জানিস আমার থেকে? আমি একজন ব্লগার!!
এসব হুমকি তাও সহ্য হচ্ছিল। কিন্তু যেদিন দেখলাম আমার প্রেমিকা একজন ব্লগারের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা চ্যাট করছে ফেইসবুকে, আর আমার সামনে এসে যুক্তি দিয়ে বলছে- ব্লগাররা কত কিছু জানে! তাদের সাথে কথা বললেও আরাম পাওয়া যায়! সেদিন আর সহ্য করা সম্ভব হলনা। অন্তরটা ব্লগারদের প্রতি বিদ্বেষে জ্বলে উঠল।
ক্ষেপে গিয়ে ব্লগারদের গোষ্টি উদ্ধার করতে শুরু করতেই সে থামিয়ে দিয়ে বলল- এই, ব্লগারদের নিয়ে কোন বাজে কথা সহ্য করব না। প্রয়োজনে তোমার আমার পথ ভিন্ন হতে পারে।
সেদিন বুঝলাম, না, ব্লগার না হলে বুঝি প্রেমটাও বাঁচাতে পারবো না।
তো পাকা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম। আমি ব্লগার হব।
কিন্তু সিদ্ধান্ত নিলেইতো হয় না। ব্লগের নিয়ম কানুন, লেখার ধরন ইত্যাদিতো জানতে হবে। তাই ফেইসবুকে ব্লগারদের ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠাতে শুরু করলাম। ওমা! এখানেও দেখি অপমানের চুড়ান্ত। কেউ এ্যাকসেপ্ট করেননা। মুলার মতো ঝুলিয়ে রেখে দেন। আমিও চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকি। ফলাফল একমাসের মতো ব্লক খাইলাম। অবশ্য দুই-একজন দয়া বশতঃ ফলোয়ার বানালেন।
দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে আমি ব্লগে একাউন্ট খুলতে বসলাম। সামহোয়ার ইন ব্লগ লিখতে দেখে এক বন্ধু আঁতকে উঠলো। বলল, করিস কি? সামু- এতো বাংলাদেশের ব্লগ জগতের গুরু। অন্য একটা দিয়ে শুরু কর।
আমি বললাম, লিখলে এখানেই। দেখনা কি বাজিমাত করি।
তো একাউন্ট খুলতে বসলাম। প্রথম দেখায় বিষয়টা সহজ মনে হলেও ভুল ভাঙ্গতে একটুও সময় লাগেনি। একবার নাম ঠিক হয় তো কাম ঠিক হয়না। কাম ঠিক হয়তো পাসওয়ার্ড ভুল হয়। এভাবে ভুল সংশোধনের খেলা খেলতে লাগলাম। একবার, দুইবার, তিনবার, অসংখ্য বার..হ্যাঁ। শেষ পর্যন্ত আমিই সফল হই। আনন্দে চিৎকার করে বলতে যাব- আমি এখন ব্লগার--এমনি নজরে পড়ল এক কোনায় লেখা আপনি সাত দিন অবযার্ভে থাকবেন। বুকের ভিতরটা শুকিয়ে গেল। কয় কি? অবযার্ভ মানেতো নজরদাড়ি, পরীক্ষা! অথচ কে না জানে, পরীক্ষা মানেই আমার জন্য যম সমতুল্য আতঙ্ক।
আমার কী বোর্ড একেবারেই থেমে গেছে। বিশ্বাস করুন, এখানে এ অবযার্ভ শব্দটা ব্যবহার না করলে আমি ভাল কিছু লিখতে পারতাম। কিন্তু এখন আর সম্ভব না। যে আমি জীবনে কোন পরীক্ষায় শিক্ষকের বিশেষ কৃপা ছাড়া পাশ তো বহু দূর, একটা উত্তরও লিখার যোগ্যতাসম্পন্ন নই সে আমি এবার কোন পদ্ধতিতে পাশ করি? ইস কেন যে এ অবযার্ভ !!!
বিশ্বাস করুন, সারাটা রাত আমি ঘুমাতে পারি নি। সকালের দিকে একটু তন্দ্রামত এল। আর এতেই এসে হানা দিল আমার প্রেমিকা। দেখি কি, এক কুৎসিত দর্শণ যুবকের হাত ধরে হেটে যাচ্ছে ও। যুবকের টিশার্টের পিছনে বড় করে লেখা ‘ব্লগার’।
সাথে সাথে তন্দ্রাভাবও কেটে গেল। ভাবলাম একাউন্ট চালু হোক না হোক, খুলেছিতো। কল দিলাম প্রেমিকাকে। গলায় আনন্দের সুর ফুটিয়ে তুলে বললাম, ওগো আমি এখন ব্লগার !!
আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। অন্তত এ পরীক্ষায় যেন পাশ করতে পারি। আর নয়তো আমার ‘ও’ আর থাকবে না।।
৭টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×