উঠতি বয়সী যুবক ভাইয়েরা পড়াশোনা বা কাজের সন্ধানে পাড়ি জমাতে চান বাইরের দেশে। বাইরে যাওয়া নিয়ে কোন সেমিনার, শো আয়োজিত হয়ে থাকলে দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। সবার মুখে নানান প্রশ্ন, চোখে স্বপ্ন। কেউ বাইরে থেকে ফিরে আসলে খুব আলোচনায় মুখর হতে দেখা যায়। পত্র পত্রিকায় বিদেশ যাত্রা সংক্রান্ত কোন নিউজ থাকলে বেড়ে যায় কাটতি। কেউ হাত দেখে বিদেশ যাত্রা শুভ বললে মন ভরে ওঠে খুশীতে। আর বাইরে যারা থাকে তাদের যুবক ভাইয়েরা রোল মডেল হিসেবে দেখেন। হতে চান তাদের মতই একজন।
বয়স কিছু বাড়লে চোখ থেকে স্বপ্ন চলে যায়। বাইরে যেতে পারেনি তাই দেশের বাইরে থাকে এমন কাউকে সহ্য করতে পারেনা। দেশের বাইরের কেউ দেশের জন্য কিছু করেছে কিংবা দেশে ফিরে এসে কিছু করতে চাইছে - এই ব্যাপারগুলোকে দেখেন ভীষন সন্দেহের চোখে। বন্ধু বান্ধব বা প্রতিবেশীর কেউ বাইরে গেলে জ্বলতে থাকে ঈর্ষার আগুনে। কোন মতেই তাদের ভালো চাইতে পারেনা।
বয়স আরো বাড়লে, যখন নিজের মেয়ে বিয়ের জন্য বয়ো:প্রাপ্ত তখন আবার মনোভাবের পরিবর্তন দেখা যায়। নিজের মেয়ের জন্য তখন একটা বিদেশে বসবাসকারী পাত্র হলে আর কিছু চাই না। চোখমুখ বন্ধ করে বিয়ে দিয়ে দিতে পারে তখন। তবে সন্তান যদি ছেলে হয় তাহলে সেই বিদেশ থেকে আসা পাত্রের শাপ-শাপান্ত করতে ছাড়েন না তিনি।
ব্যতিক্রম হয় যদি কোন পরিবারের কেউ বিদেশে থাকে তাহলে। সেক্ষেত্রে পরিবারের সবাই গলা একহাত উঁচু করে, বুক একহাত ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়। পারলে রাস্তার কলিমুদ্দিনের কলার ধরে শুধায়, 'ব্যাট্টা আমারে চিনস? আমার অমুক আমেরিকা থাকে, বুঝছস? অখন থেইক্যা আমারে সালাম দিয়া চলবি।'
পুরোনো ব্যাপারটাই আসলে স্বার্থসিদ্ধির বেসিক রিকয়ারমেন্ট থেকে প্রসূত। এটা শুধু বাঙ্গালী বলে নয় আমার ধারনা তৃতীয় বিশ্বের সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এর থেকে মুক্তি কোথায়?
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০০৬ রাত ৯:৩৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



