সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০০৬ ভোর ৪:০৩
আকিরা কুরোশাওয়ার রশোমন
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
কুরোশাওয়ার আর্লিস্টেজের কাজগুলোর মধ্যে 1952 সালে তৈরি রশোমনই প্রথম ব্যাপকভাবে দর্শকের নজর কাড়ে। পশ্চিমে তাকে ও জাপানি মুভি নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয় এই সিনেমা তৈরির পর। রশোমনের কাহিনী দ্্বাদশ শতকের জাপান। একটি বনের মধ্যে রশোমনের মূল কাহিনী ঘটে। একজন সামুরাই তার স্ত্রীকে নিয়ে গভীর বন অতিক্রম করার সময় ডাকাতের হাতে আক্রান্ত হয়। নিহত হয় সামুরাই। সামুরাইয়ের স্ত্রীকে নিয়ে নানা দ্্বিধা-দ্্বন্দ্ব তৈরি হয় ডাকাতের মধ্যে। সামুরাই, তার স্ত্রী ও ডাকাতের মধ্যে শুরু হয় নানা টানাপোড়েন। শেষ পর্যন্ত সামুরাইয়ের মৃতু্য ঘটে। এই ঘটনা দেখে একজন কাঠুরে ও একজন যাজক। ডাকাতটিকে পুলিশের/আদালতের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কাঠুরে, যাজক, ডাকাত, সামুরাইয়ের স্ত্রী এবং শেষ পর্যন্ত স্ত্রী নিজের ওপর সামুরাইয়ের ভর এনে তার বক্তব্যও পেশ করে। এই পুরো ঘটনাটি বর্ণনা করা হয় ভাঙ্গা একটি কাঠের বাড়িতে তুমুল বৃষ্টির মধ্যে। পোস্টারে এই বাড়িটির ছবিই দেয়া হয়েছে। ডাকাত চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাশিরু মিফুন। বিস্ময়কার এক অভিনেতা। কুরোশাওয়ার ইয়োজিমবো ও সানজুরো সিনেমায় তার অভিনয়ের ক্যারিশমা বেশ ভালভাবেই বোঝা যায়। সিনেমাটি সাদাকালো। কিন্তু আলোছায়ার মধ্য দিয়ে কুরোশাওয়া যে রঙের আবর্তন তৈরি করেছেন তা অনেক রঙিন ছবিতেও পাওয়া যায় না। সবচেয়ে অবাক করার ব্যাপার যে, আলো ছায়াকে তিনি সিনেমার পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়েছেন। সিনেমাটি দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল জাপানের বনে ঘটা শেক্সপিয়ারের কোন নাটক দেখছি। যেখানে সামান্য তিনটি চরিত্রের মধ্যেই তৈরি হয় জটিল ও দুর্বোধ্য মানবিক দ্্বন্দ্ব ও সংঘাত। সন্দেহ, অবিশ্বাস, ভয়, পৌরুষ, নারীত্ব, বিশ্বাসঘাতকতার মতো মৌলিক ঘটনাগুলো সহসা আত্মপ্রকাশ করে। এটা সিনেমার বিষয় অবশ্যই। কিন্তুকুরোশাওয়া মূল ড্রামাটি তৈরি করেছেন এর বর্ণনার মাধ্যমে। তুমুল বৃষ্টির মধ্যে ড্রামাটির রিভিউ হতে থাকে। আর তিনি ফিরে ফিরে একই ঘটনা নানা জনের বর্ণনা মোতাবেক দেখাতে থাকেন। দেখা যায় একই ঘটনা ভিন্ন ভিন্ন আকার পাচ্ছে। ব্যাখ্যাও পাচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন। শেষ পর্যন্ত ঘটনাটি যেখানে পেঁৗছায় সেখানে মৃত ব্যক্তি ছাড়া আর কারও কথা বলা বাকী থাকে না। জীবিত স্ত্রীর মাধ্যমে সে কথা বলে উঠলে কুরোশাওয়ার ড্রামাটি পরিপূর্ণতা পায়। দেখা যায়, নিজেদের ইমেজ রক্ষার জন্যই চরিত্রগুলো একই ঘটনার ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা দিচ্ছে। বৃষ্টি শেষ হলে ভাঙ্গা বাড়িতে বলা কাহিনীটি শেষ হয়।
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
এমন রাজনীতি কে কবে দেখেছে?

জেনজিরা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামল দেখেছে। মোটামুটি বীতশ্রদ্ধ তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক। এক দল আর কত? টানা ১৬ বছর এক জিনিস দেখতে কার ভালো লাগে? ভালো জিনিসও একসময় বিরক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।
এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন
প্রবাসীর মৃত্যু ও গ্রাম্য মানুষের বুদ্ধি!

একজন গ্রামের মানুষের মাথায় ১০০ জন সায়েন্টিস্ট, ৫০ জন ফিলোসফার, ১০ জন রাজনীতিবিদ এবং ৫ জন ব্লগারের সমপরিমাণ জ্ঞানবুদ্ধি থাকে, তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন এসব লোকজন বাংলাদেশের এক একটি সম্পদ।
বিস্তারিত:... ...বাকিটুকু পড়ুন
একজন নারী শিক্ষিকা কীভাবে কন্যা শিশুর সবচেয়ে অসহায় মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করতে পারেন?

বাংলাদেশে মাঝে মাঝে এমন সব মানুষ রূপী শয়তানের সন্ধান মেলে যাদের দেখে আসল শয়তানেরও নিজের উপর হতাশ হওয়ার কথা। এমন সব প্রজাতির মানুষ বাংলাদেশে বসবাস করেন যাদের মস্তিষ্ক খুলে দেখার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=মানুষ মানুষকে কীভাবে এত অপদস্ত করে এই ব্লগে=
আমি তো কারও সাতেও নাই পাঁচেও নাই। এত সময়ও নাই মানুষকে ঘাঁটার। ব্লগের ব্লগারদের সম্পর্কেও তেমন কিছু জানি না। তবে পোস্ট পড়ে কিছুটা আন্দাজ করা যায় -কে কী রকম। আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।