পিএসসি বা সরকারি কর্মকমিশনে ঘুষ দেওয়ার নিয়ম-কানুন যারা জানেন তারা এই গল্পটা ভাল কইরা বুঝতে পারবেন। আমার দুঃসম্পর্কের বন্ধু বিসিএস-এ রিটেনে টিকছে। ভাইভা মেডিকেল বাকী। এর মধ্যে তাার টেনশন শুরু হয়া গেল। যদি না টিকে। আশপাশের লোক ধইরা সে পিএসসিতে খোঁজ লাগাইলো। ছাত্রদলের এক নেতা তারে হেল্প করলো। ঠিক করা হইলো, দুই লাখ টাকার বিনিময়ে তার চান্স হবে। নিশ্চিত। নানা দোনামোনা করে সে দুইলাখ টাকা জোগাড় করলো। ঢাকায় গিয়া পিএসসির সেই লোকরে দিয়া আসলো।
যথারীতি তার ভাইভা হইলো। ছাত্র ভালো ছিল। রিটেনেও ভাল হইছিল। মাশাল্লা ভাইভাতে সে ভালোভাবেই টিকলো। মেডিকেলেও কোনো সমস্যা হইলো না। তো ফাইনাল রেজাল্ট বের হওয়ার পর বন্ধুর মনে খচখচানি শুরু হইলো। তার মনে হইতে লাগলো যে, টেকাটা না দিলেও সে পারতো। এমনেই হইতো। আসলে সে বুঝতে পারছিল, তার এমনেই হইছে। খচখচানিটা বাড়তে বাড়তে এমন অবস্থা হইলো যে সে পিএসসির ওই লোকের বাসায় গিয়া হাজির হইলো। কইলো, আমার তো এমনেই হইছে আপনের তো কিছু করা লাগে নাই।
উনি কন, কিছু করা লাগে নাই মানে কী? তোমার টেকা হালাল না কইরা আমি খাইছি নিকি।
এইসব আবোল তাবোল।
বন্ধু তার কথায় দুর্বলতা টের পাইলো। সিদ্ধান্ত নিলো ওই ছাত্রদল নেতারে দিয়াই টেকা উদ্ধার করবে। দরকার হইলে তারেও কিছু দিবে।
তারপর কী হইছে আমি জানি না। খোঁজ নিলে জানা যাবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের অবস্থা হইছে আমার সেই বন্ধুর মতো।
যুক্তরাষ্ট্র ভারতসহ দেশি বিদেশী শক্তিগুলা আওয়ামী লীগরে সাপোর্ট দিছিলো নির্বাচনের আগ দিয়া। তাদের নানা কথা দিছিলো আওয়ামী লীগ। নানা চুক্তিমুক্তি করতে চাইছিল। আর পাবলিকও তাদের ছাপ্পড় ফাইড়া ভোট দিছিলো।
এখন আওয়ামী লীগের মনে হইতেছে, তারা তো এমনেই জিতছে। পাবলিকই জিতাইছে। আর ইয়েদের তাই তারা বলতেছে, আপনেদের তো কিছু করা লাগে নাই। ইয়েরা বলতেছে, কী বলেন, আমরা ইয়ে না করলে কি পাবলিক আপনেদের ভোট দিতো?
......
আগে যখন আওয়ামী লীগের প্রেস ব্রিফিং হইতো তখন দেখতাম একজন নারী ব্রিফিংরত নেতার পাশে দাঁড়াইয়া হাসতেছেন। সবসময়ই একই রকম তার হাসি। দেইখা ভাল লাগতো। নাম জানতাম না। নির্বাচনের পর জানলাম ইনি ডা. দিপু মণি। কাইলকা যখন আনন্দবাজারের দিল্লি সাংবাদিক অ্যাগ্রেসিভ প্রশ্ন কইরা বসলো তখনও তিনি ওইরকম একটা হাসি দিছিলেন। জয়ন্ত ঘোষাল নামক ওই সাংবাদিক সহজ কথায় সাংবাদিকতার রীতিনীতি জানেন না। কেউ যদি বাংলাদেশকে বাফার স্টেট কইতো তাইলে সেইটার রেফারেন্স দিয়া তিনি মন্তব্য চাইতে পারতেন। কিন্তু সাংবাদিকটি নিজে বানায়ে একটা ভাষ্য দিয়া মতামত চাইছেন। একটা খবর বানাইতে চাইছেন। এইটা কোনো রীতিতে করা যায় না। সোজা কথায়, এই প্রশ্ন না। এইটা আনন্দবাজারের স্টেটমেন্ট।
এইটার কঠোর উত্তর দেয়া উচিত আছিল।
কিন্তু নতজানু অবস্থা যদি আমার মজ্জায় থাকে তাইলে মগজ তাৎক্ষণিকভাবে অ্যাকটিভ হবে না, এইটাই তো স্বাভাবিক।
.......
সরকার যে এমনেই পাশ করলো। জনগণ যে তাদের পাশ করাইলো। তারপর তদবীর পার্টিগুলার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কই যায়া ঠেকে এইটাই এখন দেখার বিষয়।
ছবি: প্রথম আলোর সংবাদের কাটিং
সরকারের অবস্থা দেইখা আমার এক বন্ধুর কথা মনে পইড়া গেল
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা
বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন
চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।
ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন
"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?


৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।