এমন ঘন ঘোর বরিষায়............
এমন দিনে মন খোলা যায়.........
এমন মেঘস্বরে বাদল ঝরোঝরে
তপনহীন ঘন তমসায়.....
অঝর ধারায় ঝরোঝরো বরিষন দিন। ঘন ঘোর বরিষা। তপনহীন আঁকাশ।বেশ বুঝতে পারছি রবিঠাকুরও ঠিক এমনি এক দিনে লিখেছিলেন এ কবিতাখানি। খুলেছিলেন মন তার প্রিয়ার কাছে। খুব জানতে ইচ্ছে করে ঠিক কার জন্য লিখেছিলেন তিনি? সেকি সেই বৌদিমনির জন্য নাকি তার প্রিয়তমা স্ত্রীর জন্য?
আমার কেনো যেন খুব দৃঢ় বিশ্বাস, এ লেখা ছিলো এমন কোনো একজনের জন্য যার অবস্থান ছিলো তোমার কাছে ঠিক আমি ছিলাম যেমন, ঠিক তেমনি কারো জন্য।
সেকথা শুনিবেনা কেহো আর
নিভৃত নিরজন চারিধার....
দুজনে মুখোমুখি গভীর দুখে দুখী
আকাশে জল ঝরে অনিবার
জগতে কেহো যেনো নাহি আর।
মনে পড়ে সেসব দিনের কথা? বাহিরে ঝরোঝরো শ্রাবন। নিভৃত নিরজন চারিধার.... আমরা দুজন ঠিক রবিঠাকুরের কবিতার মত দুজনে মুখোমুখি গভীর দুখে দুখী.... জগতে কেহো যেন নাহি আর। গভীর দুঃখ বুকে নিয়ে ভুলতে চেয়েছিলাম দুঃখটাকেই। জগৎ-সংসার, মায়া-বন্ধন সব তখন তুচ্ছ আমাদের কাছে। এ ধরায় যেন শুধু আমরা দুটি মানব মানবী। আর কোথাও কেউ নেই।
সমাজ সংসার মিছে সব
মিছে এ জীবনের কলরব
কেবলি আঁখি দিয়ে আঁখির সুধা পিয়ে
হৃদয় দিয়ে হৃদি অনুভব
আঁধারে মিশে গেছে আর সব।
আমরা তখন জগৎ সংসার সব ভুলেছি। সমাজ সংসার সবি মিছে। ঘোর লাগা এক নেশায় ফিকে তখন আমাদের কাছে এ জগৎ সংসারের সমস্ত বাঁধা, নিষেধ আর নিয়ম কানুন গুলো। কেবলি আঁখি দিয়ে আঁখির সুধা পিয়ে ,হৃদয় দিয়ে হৃদি অনুভব। মাঝে তোমার দেওয়া সেই নাম নীল জানালা বা মনিটর উইন্ডোর বিভেদটুকু। কিন্তু সে কোনো বাঁধা নয়, মনিটরের লেখা গুলোই তুমি হয়ে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যেতে আমার হৃদয়। গভীর সেই দুঃখগুলোকেই মুছে দেবার বৃথা চেষ্টা। আচ্ছা বৃথাচেষ্টা কি বলা যায় তাকে? সত্যি কি দুঃখ ভুলিনি আমরা? অন্তত সে কটাদিন?
তাহাতে এ জগতে ক্ষতি কার
নামাতে পারি যদি মনোভার
শ্রাবন বরিষনে একদা গৃহকোনে
দুকথা বলি যদি কাছে তার
তাহতে আসে যাবে কেবা কার?
আমারও খুব জানতে ইচ্ছে করে কি এমন ক্ষতি ছিলো ? কি এমন ক্ষতি হয় ? কি এমন ক্ষতিবৃদ্ধি হয় তাতে? এত কেনো যায় আসে এ কঠিন পাষান ধরিত্রীর?
ব্যাকুল বেগে আজি বহে বায়
বিজুলী থেকে থেকে চমকায়
যে কথা এ জীবনে রহিয়া গেলো মনে
সেকথা আজি যেন বলা যায়।
এমন ঘন ঘোর বরিষায়.........
এমন দিনে তারে বলা যায়....
আজও ব্যাকুল উদাস বায়ু বয়। মন হয় উতল। কিন্তু যে কথা এ জীবনে রহিয়া গেলো মনে সে কথা আর কখনও বলা হলোনা। রবি ঠাকুর কি পেরেছিলেন সে কথাটি বলতে ? ঠিক এমন এক বরিষন মুখর, মন উতল করা দিনে?
জানিনা......
অনেক কিছুই জানা হলোনা......
অনেক কিছুই বলা হলোনা এ জনমে.......
মনের কথা মনেই রয়ে গেলো.....
তাহতে আসে যাবে কেবা কার?
Click This Link