উপহার সবসময় আনন্দের। যদি হয় সেটা প্রিয় কোন মানুষের কাছ থেকে। তাই বলে জুতা? তাও আবার বুদ্ধিজীবি কাতারের কোন মানুষের কাছ থেকে? শালা--- কপাল আমার। শনি মনে হয় ছাড়ছে না আমাকে। শফিক ভাই, চিরসবুজ মন যার, যাকে আঙ্কেল ভাইয়া বলেই বেশি ডাকি আমি। বয়সে আমার দ্বিগুন তাই। তবে বন্ধুত্বের সংজ্গায় বয়স কোন ব্যাপার না। শফিক ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় কোন এক শীতের রাতে গভীর কুয়াশায় পদ্মার চরে আটকে যাওয়া ফেরীতে। দু:সময়ে বাঘে মহিষে একঘাটে জল খায়। তেমনি এক ভয়ানক শীতের রাতে শফিক ভাই আমার মত অধম কে একটুকরো সিগারেটের আগুনের বিনিময়ে তার বন্ধু তালিকায় আমাকে পাকাপোক্ত করে। এর পর বহুবার আমরা বিলাসবহুল পারাবাত আর সুন্দরবন লঞ্ছে জোসনা বিলাস করতে করতে ঢাকা থেকে বরিশাল গিয়েছি, কীর্তনখোলায় নৌকা ভাসিয়ে একুল ওকুল করেছি, বিবির পুকুর পাড়ে আড্ডায় মেতেছি, বিএম কলেজের মাঠে বসে উনার গুরত্বপূর্ণ আলোচনা এ কান দিয়ে শুনে ও কান দিয়ে বের করে দিয়েছি তার হিসেব নেই। এ জীবনে খুব কাছ দেখা ভালমানুষগুেলোর মধ্যে শফিক ভাই অন্যতম। মানুষকে কিভাবে ভালবাসতে হয় তার কাছ থেকেই শিখেছি আমি। সরলতা ,সততাকে অধিকাংশ মানুষ দূর্বলতা মনে করলেও এই নাগরিক জীবনে দীর্ঘমেয়াদি ভালবাসায় এর কোন বিকণ্প নাই। অতিমাত্রায় নারীবাদি এই মানুষটা অসহায় নির্যাযিত মানুষের পাশে দাড়াতে গিয়ে নিজেই নির্যাতিত হয়েছে অসংখ্য বার। তবুও পথ চলা থেমে নেই তার, সেই মায়াবি হাসিটুকু লেগেই থাকে শত কষ্টের মাঝেও।। পেশায় ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিষ্টানের লিগ্যাল এডভাইসার, মানবাধিকার কমী, উন্নয়নের রোল মডেল। ওনি সবসময় বলেন নারীরা প্রাকৃতিক ভাবেই এক রহস্যময় সত্তার অধিকারী। এতে দোষের কিছু নাই। ওরা কখনো মা, কখনো স্ত্রী, কখনো প্রেমিকা, কখনো ছলনাময়ী। কিসে যে ওদের মানায় , তা খোদ ওরাই জানেরা। ওদের কি দোষ, সব দোষ উপরওয়ালার। কতবার কত নির্যাতিত নারীর পাশে দাড়াতে গিয়ে কত নির্যাতিতা স্বামীদের জেলের ঘানি টানিয়েছেন তার হিসেব নেই।কিন্তু পরবতীতে সেই নির্যাতিত নারীই যখন বলে তার স্বামীর কোন দোষ নেই তখন শফিক আঙ্কেল- ভাইয়ার মাথা হেট করা ছাড়া উপায় কি? উনার ভাষাই নারীরা এমনি তাই তারা এত মায়াবী, এত সুন্দুর। আসলে উনার কোন পেশা নেই ,মনুষ্যত্বই উনার আসল পেশা। আমার ব্যাংকে জয়েন করা নিয়ে উনার ঘোর আপত্তি থাকলেও কিছুই করার ছিলনা তখন।। সম্প্রতি ইনি তানজানিয়া আর উগান্ডা ঘুরে এসে আমাকে ফোন দিলেন। যোগাযোগ না রাখার অযুহাতে যা তা শুনিয়ে দিলেন। নিরীহ মানুষের মত উনার কথা শুনা ছাড়া আমার কোন উপায় ছিলনা। আমাদের বন্ধুত্বের পর থেকে উনি আমার জন্মদিনটা কখনো ভুলেনি। প্রতিবারেই কিছুনা কিছু উপহার পেয়েছি ওনার কাছ থেকে। উনার উপহার মানেই আমার কাছে অন্যরখম ভাললাগা- ভালবাসা। রেপিং পেপারে মোড়ানো ঢাকা থেকে সঠিক সময়ে আসা গিফটা যখন খুলছি তখন ভাবছি কি সারপ্রাইজ আছে এটাতে? ও-মা খুলে দেখি জুতা।। আমার জীবনে প্রথম বার জন্মদিনে জুতা উপহার। প্রথম কয়েক সেকেন্ড টাশকি লাগলেও মনে হল এ যেন এক অন্যরখম পাওয়া। এই মানবধিকার কর্মীর সুস্পষ্ট মানবাধিকার লংগন মনে হলেও আমার কাছে নতুন কোন মেসেজ এটা। শালা বুদ্ধিজীবী বলে কথা। জুতার নিচে দেখি ছোট চিরকুট একটা। শুভ জন্মদিন। জং ধরা জীবনের রং ঝেড়ে এগিয়ে যাও দূর-বহুদূর।
ইতি - তোর আঙ্কেল-ভাইয়া শফিক।।
ধন্যবাদ তোমার জন্য নয় , লাভ ইউ শফিক ভাই----লাভ ইউ সো মাসসসস: সেই জুতো পরেই ঘুরেছি আজ সারাদিন। পরিশেষে----জুতোটা কিন্তু আরাম আছে।।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৫৯