কতোটা হ্যাডম থাকলে, উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দলগুলোর একটার সাধারন সম্পাদক'কে তার সাথে নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ দিয়ে বসে, ভাবেন একবার ! এই হ্যাডম তো মির্জা ফখরুলও দেখায় নাই !
হিরো আলম নির্বাচনে হারার পর সেদিন সংবাদ সম্মেলনে অনেক কথাই বলেছে তার নিজস্ব ঢঙে, তবে সবচেয়ে বড় কথাটা বলেছে, ''আমি হারার অন্যতম কারন হলো, আমাকে অনেকেই স্যার বলতে চায় না, অনেকেই আমার কন্ঠ, আমার চেহারা পছন্দ করে না... তাই তারা কখনোই চায় নি, আমি এমপি হই"
কথাটার গুরুত্ব এবং ফজিলতের ব্যাপকতা অসীম!
তো এই যে আপনারা যারা 'মনের পূজারী' সৌন্দর্যের না, বলে দাবি করেন, তারা এই বিষয়টাকে কিভাবে দেখছেন !
হিরো আলম যেভাবে তার স্মার্টনেস দেখিয়েছে তা অকল্পনীয়, হেরে যাবার পর তার কথাবার্তাগুলা শোনেন, তার চাইতে অন্তত শ খানেক এমপি এখনো সংসদে আছে যারা সামান্য ম্যানারটুকু পর্যন্ত জানে না, রাজনৈতিক শিষ্টাচারের লেশমাত্রও তাদের মধ্যে নাই, অথচ হিরো আলম একটা "অশিক্ষিত", "মূর্খ", ''অসুন্দর''....হওয়ার পরেও সে জনতার একজন হয়ে গেলো ! হেরে গিয়েও একজন হিরো হয়ে গেলো !
তাতে কি প্রমান হলো আসলে?
জনগন ভাবছে, অনেক কথার ফুলঝুড়িই তো শুনেছি বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে, এবার আমাদের মধ্যে থেকে কেউ একজন আসুক ! অথচ সেখানে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের একজন তার প্রতিদ্বন্দী ছিল, যারা বর্তমানে 'সর্বময় ক্ষমতার অধিকারীরুপে এই ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলজুড়েই অবস্থান করছে' অপরদিকে হিরো আলমের কোনো দলই নাই, পাড়ায় পাড়ায় তাকে নিয়ে মিছিল করার কেও নাই, তার হয়ে মটরসাইকেল শোভাযাত্রা করার কেও নাই, তার হয়ে 'হিরো আলমের চরিত্র, ফুলের মতো পবিত্র' বলে কলরব ছড়ানোর কেউ নাই, ঢাল তলোয়ারবিহীন একজন মানুষকে জনগন বেছে নিলো, কারন তারা এতোদিনে বুঝে গেসে যাদের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র বলে প্রচার করা হয়, তারা আদতে গোবরের মতোই গন্ধ ছড়ায় nation of the house খ্যাত সংসদে এবং সংসদের বাইরে ! চারিত্রিক দিক দিয়ে 'আমাকে চেনস? আয়াম দা সার্ভেন্ট অব দা পিপল, চলে আয়' বলা সেই টাকমাথার চশমা পরা সুন্দর হ্যান্ডসাম লোকটার চাইতে হিরো আলমকেই তাদের কাছে সুন্দর বলে প্রতীয়মান হলো! তাইতো দেখতে অসুন্দর, গুছিয়ে কথা বলতে না পারা একজন লোককেও তাদের প্রতিনিধি বানিয়ে ফেলতে তারা কেউ দ্বিধাবোধ করলো না !
এই লজ্জা হওয়া উচিত রাজনীতিবিদদের ! রাজনীতিকে তারা কোন জায়গায় নিয়ে গেছে যে একজন 'হিরো আলম'কেও জনগন তাদের প্রতিনিধি বানাতে দ্বিধা করছে না, সেটা রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের হিসাব কষা উচিত ! এগুলো নিয়ে কথা হওয়া দরকার, আলাপ দরকার, টংয়ের দোকানে হিরো আলমের চেহারা নিয়ে হাসার পরেই এই আলাপ দরকার যে, জনতা হিরো আলমকে চাইছে কেনো?
হিরো আলম, হেরেও হিরো আর যে জিতলো বলে দাবি করছে, সে আদতে হিরো আলমের পাশে বসারও যোগ্য হয়ে উঠলো না, উঠছে না !
দায়ভার রাজনীতিবিদদেরই !
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:২৩