somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তখনকার নবাব আর বর্তমানে বগুড়ার বিচারক, পরিবর্তন কই ?

২৩ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নবাব সিরাজউদ্দৌলার শাসনকাল তখন!
ইংরেজরা নবাবকে উৎখাতের সমস্ত পরিকল্পনা শেষ করে ভাবলো, একবার নবাবের সাথে দেখা করে আসি !
আসার আগে তারা নবাবের কাজের লোককে জিগ্যেস করলো, আচ্ছা, নবাব কি খেতে ভালোবাসে ? নবাবের জন্যে কি নিয়ে আসলে তিনি সবচেয়ে বেশী খুশি হবেন?
নবাবের কাজের লোক জানালো, লেবু আনলে নবাব বেশী খুশি হবে !
একটা মানুষ আর কতোই বা লেবু খেতে পারবে, তাই ইংরেজরা নবাবের জন্যে একটা ছোট্ট ব্যাগে ভরে বেশ কিছু লেবু এনে নবাবের কাজের লোকের হাতে দিয়ে বললো, এগুলা নবাবের জন্যে উপহার !
কাজের লোকটা চরম বিরক্তি নিয়ে বললো, মাত্র এই কডা লেবু নিয়ে এই সারা ভারতবর্ষের নবাবের সাথে দেখা করতে এসেছো ?
ইংরেজরা বললো, নবাব আর কতোই বা লেবু খাবেন, যতগুলা লেবু এনেছি, আমরা সবাই মিলে খেলেও তো শেষ হবে না !
নবাবের চাকর রেগে গিয়ে বললো, নবাব লেবু খান না, তিনি কেবল লেবুর গন্ধ নেন! নবাবের ভোজনের সময় অজস্র লেবু কেটে তার চারপাশে ছড়িয়ে রাখতে হয়, নবাব সেই লেবুর ঘ্রান নেন আর তার ভোজন সারেন!
ইংরেজরা বুঝলো, এই কারনেই তিনি নবাব!
বগুড়ার স্কুলের ঘটনাটা নিশ্চয়ই জেনে গেছেন সবাই। স্কুলের সবাই রোল অনুযায়ী শ্রেণীকক্ষ ঝাড়ু দেয়, ওই স্কুলের এক বিচারকের মেয়ের যেদিন দায়িত্ব আসলো, সে বললো, এটা আমার কাজ না, আমি কোনো বুয়া না, আমার মা বিচারক, আমি ঘর ঝাড়ু দিতে পারবো না !
এখানেই শেষ নয়, বাসায় এসে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বলেছে, "আমি বিচারকের মেয়ে, তোরা হলি বস্তির মেয়ে, তোদেরকে আমার সমান হতে হলে, আগে তোদের মা'কে বিচারক হতে হবে"
তারপর সেখানে তার কয়েকজন সহপাঠি কমেন্ট করছে, সেই কমেন্টের জের ধরে সেই বিচারক মা, স্কুলে এসে কমেন্টকারীদের অভিভাবকদেরকে তার পা ধরে মাফ চাইয়েছে !
এক বিচারকের মেয়ে মাত্র ক্লাস এইটে পড়ে, অথচ এই বয়সেই সে বুঝে গেছে, একজন বিচারকের মেয়ে হিসাবে সে কতোটা উঁচু মানের এবং উঁচু জাতের। তার মা যেহেতু বিচারক তাই তার ঝাড়ু দেওয়া সাজে না, বিচারক মায়ের বোধও একই রকম, তিনি স্কুলে এসে সন্তানেরই সাপোর্ট নিয়েছেন, সন্তানকে বুঝিয়েছেন, তারা সমাজের নবাব, তাদের সাথে অন্যদের তুলনা চলে না, নিজের বিচারটাই তিনি সঠিকভাবে করতে পারেন নি, এজলাসে বসে তিনি এতোদিন কি বিচার করেছেন, আল্লাহ জানেন! সন্তানটাকেও শিক্ষিত করতে পারেন নি, তাকে মানুষ বানানো তো আরো বহুদূরের দায়িত্ব ! অতদূর যাওয়ার মতো ভিত্তি ওই বিচারকের গড়ে ওঠে নাই, এটা শুধু নিশ্চিত নয়, সুনিশ্চিত !
একটা সময় এই উপমহাদেশের জমিদারদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময়, কোনো প্রজা সেন্ডেল/চটি/জুতা পায়ে পরে যেতে পারতো না। জমিদারের বাড়ির সামনে জুতা পরলে জমিদারকে অসম্মান করা হবে! জমিদারের বাড়ির সামনে এলেই প্রজাদের সেন্ডেল খুলে সেটা বগলদাবা করে জমিদার বাড়ি অতিক্রম করার পরে আবার সেই সেন্ডেল পরতে হতো ! তাতেই জমিদার বাড়ির সম্মান অক্ষুণ্ণ থাকতো যুগের পর যুগ!
আপনার মনে হতেই পারে, সেই নবাব সেই জমিদার এখন আর নেই, কিন্তু নবাব বা জমিদারদের বিবর্তন আপনি বুঝে উঠতে পারেন নি! ডারউইন তার বিবর্তনবাদে শুধু গায়ে গতরে বিবর্তনের কথা বলেছেন, এই বিচারককে দেখলে তিনি নিশ্চয়ই মানসিক বিবর্তনবাদতত্বও প্রমান করে ফেলতেন।
এই বিচারকরাই এখন সেই যুগের জমিদার, সেই যুগের নবাব! এরকম বহু বিচারক/ম্যাজিস্ট্রেট/পুলিশ...... দিয়ে আমাদের সমাজ পূর্ণ, জাস্ট লেবাস, পেশা আর লিঙ্গভেদে জমিদারির ধরন একেকরকম !
অনেককিছু দেখার বাকী আছে এই নব্য প্রজাদের !


সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১১:১১
২৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×